“যে দামে বেচলাম, তাতে তার খরচ উঠল না”, ৪২টি চামড়া বিক্রি করে বললেন দেবেন দাস।
Published : 18 Jun 2024, 06:38 PM
কোরবানির ঈদের পরদিন যশোরের রাজারহাটের চামড়ার হাটে দাম নিয়ে খুশি নন বিক্রেতারা।
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বৃহত্তম বাজার এটি। সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার হাট বসে এখানে। ঈদের পরদিন মঙ্গলবার সকাল থেকে হাটে চামড়া আসতে শুরু করে।
যশোরের মণিরামপুর উপজেলার দোহাকুলা গ্রাম থেকে ১৪০টি গরুর চামড়া নিয়ে এসে প্রত্যাশা অনুযায়ী দাম পাননি স্বজন দাস।
তিনি আকার ভেদে প্রতিটি চামড়া কিনেছেন ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায়। শ্রমিক খরচ, পরিবহন খরচে গেছে টাকা। কিন্তু বিক্রি করতে হয়েছে ৮০০ টাকা করেই। ফলে মুনাফা হয়নি প্রত্যাশিত।
খুলনার ফুলতলা উপজেলার জামিয়া গ্রামের দেবেন দাস ৪২টি চামড়া বিক্রি করেছেন। দাম পেয়েছেন চারশ থেকে ছয়শ টাকার মধ্যে বিভিন্ন দরে। তারও চামড়া কেনা পড়েছে চারশ থেকে পাঁচশ টাকায়। এর সাথে যোগ হয় অন্যান্য খরচ।
“যে দামে বেচলাম, তাতে তার খরচ উঠল না”, হতাশ কণ্ঠে বলেন দেবেন দাস।
মণিরামপুর উপজেলার পারখাজুরা গ্রামের সঞ্জয় দাস বলেন, দাম কম হলেও চামড়া যে ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন, তার উপায় নেই।
কারণ হিসেবে বলেন, চামড়া সংরক্ষণ করতে গেলে খরচ আরও বেড়ে যাবে। আগামী হাটে বেচে লাভ হবে সেই নিশ্চয়তাও নেই। তাই যে দাম পাচ্ছেন তাতেই বেচে দিচ্ছেন।
আড়তদার আবু বক্কার সিদ্দিকী শাহীন বলেন, ঈদের যে চামড়া হাটে ওঠে, তাতে নানা খুঁত থাকে।
অনভিজ্ঞরা গরু-ছাগলের শরীর থেকে নিখুঁত ভাবে চামড়া ছিলতে পারেন না জানিয়ে তিনি বলেন, যারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে চামড়া সংগ্রহ করেন তাদের অনেকেই মৌসুমি ব্যবসায়ী। তারা প্রায়ই বেশি দামে নিম্নমানের চামড়া কিনে ফেলেন।
যশোর রাজারহাট চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান হাসান বলেন, ঢাকায় ৫০ টাকা বর্গফুট হিসাবে চামড়া বিক্রি করতে না পারলে তাদের লাভ হয় না। সে হিসেবে চামড়া কিনতে হয় তাদের।
গত কয়েক বছর ধরে চামড়া সংরক্ষণের ব্যয় বেড়ে গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, “চামড়া সংরক্ষণের প্রধান দ্রব্য হচ্ছে লবণ। দেশে লবণ ব্যাপক উৎপাদন হলেও দাম কমে না।”
বর্তমানে প্রতি বস্তা লবণ এক হাজার টাকা বেশি জানিয়ে তিনি বলেন, “বস্তা প্রতি হাজার টাকার নিচে হলে সংরক্ষণ খরচ কিছুটা কমে।”
শ্রমিকের পেছনে খরচ বেড়েছে বলেও জানান তিনি।