গাজীপুরে বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ, পুলিশের লাঠিপেটা

নিউ লাইন পোশাক কারখানার স্টাফ পর্যায়ের পাঁচ মাসের এবং শ্রমিকদের গত তিন মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে।

বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকেরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করলে পুলিশ  লাঠিপেটা করে।

গাজীপুরের মৌচাক এলাকায় বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন নিউ লাইন পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় ওই শ্রমিকেরা মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করলে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় পুলিশ লাঠিপেটা করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করলে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

আন্দোলনরত শ্রমিকেরা জানান, কারখানার স্টাফ পর্যায়ের পাঁচ মাসের এবং শ্রমিকদের গত তিন মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। বারবার আশ্বাস দিয়েও কারখানা মালিক বেতন দিচ্ছে না। তাই শ্রমিকেরা বেতনের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন।

পুলিশ বিক্ষোভরত শ্রমিকদের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করলে তারা উত্তেজিত হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশ শ্রমিকদের ওপর ওপর লাঠিপেটা করলে কয়েকজন শ্রমিক আহত হন।

নিউ লাইন পোশাক কারখানার সুইং সেকশনের অপারেটর আলেয়া খাতুন, উসমান গণি এবং মনির হোসেনসহ কয়েকজন শ্রমিক জানান, তারা ভাড়া বাসায় থেকে ওই কারখানায় চাকরি করেন। তিন মাস বেতন না পাওয়ায় তাদের ঘর ভাড়া বাকি রয়েছে। এমনিতেই জিনিসপত্রের অনেক দাম। তার মধ্যে নিয়মিত বাজার না করতে পেরে তাদের স্ত্রী-সন্তানেরাও না খেয়ে রয়েছেন।

তারা বলেন, তিন মাসের বকেয়া বেতন দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। পুলিশ সহযোগিতা না করে উল্টো শ্রমিকদের পিটিয়েছে। অনেক শ্রমিক আহত হয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, পুলিশের এলোপাতাড়ি লাঠিপেটায় শ্রমিকের পাশাপাশি স্থানীয় দোকানদারও আহত হয়েছেন। এখন সেখানে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। কারখানা ও মহাসড়কে বিপুল পুলিশ অবস্থান নিয়েছে।

এসব ঘটনা ভিডিও করতে গেলে পুলিশ স্থানীয় সংবাদ কর্মীদেরও লাঠিপেটা করে বলেও অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

কালিয়াকৈরের মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শহিদুর রহমান বলেন, “শ্রমিকেরা মহাসড়ক ছেড়ে কারখানার সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিয়েছেন। ঘটনাস্থলে শিল্প পুলিশ ও থানা পুলিশ রয়েছে।”

গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ এর পরিদর্শক (কালিয়াকৈর) নিতাই চন্দ্র সরকার বলেন, “দুই মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকেরা আন্দোলন করেছে। আমরা কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। হেড অফিস থেকে কারখানার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আসছেন। তারা আসলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানা যাবে।”