নাটোরে স্বতন্ত্রের ২ কর্মীর হাত-পা ‘ভেঙে দিল’ নৌকার সমর্থকরা

নৌকার প্রার্থী ও সংসদ সদস্য ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, “আমার কোনো সমর্থক এমন কোনো কাজ করতে পারেন না।”

নাটোর-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা চালিয়ে হাত-পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর বাজারের গোডাউন মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন গুরুদাসপুর থানার ওসি উজ্জল হোসেন।

আহতরা হলেন- নাজিরপুর বাজারের ময়েজ উদ্দিনের ছেলে শরিফুল ইসলাম ৩৭) এবং খালেক মোল্লার ছেলে সিরাজুল ইসলাম (৩৫)।

তারা গুরুদাসপুর-বড়ইগ্রাম আসন নিয়ে গঠিত এই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আসিফ আব্দুল্লাহ বিন কুদ্দুস শোভনের সমর্থক। সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে শোভন ট্রাক প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।

এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়াই করছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী।

নাজিরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান উজ্জ্বল বলেন, “ট্রাক মার্কার কর্মী শরিফুল ও সিরাজুল গোডাউন মোড় এলাকায় গেলে তাদের ওপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় নৌকা প্রার্থীর সমর্থকরা। এ সময় শরিফুলের বাম পা এবং সিরাজুল ইসলামের ডান পা ও বাম হাত ভেঙে দেয় তারা।”

হামলার ব্যাপারে জানতে চাইলে আহত শরিফুল ইসলাম বলেন, তিনি ও সিরাজুল বাড়ি থেকে বের হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী শোভনের প্রচারে যাচ্ছিলেন। এ সময় গোডাউন মোড়ে নৌকা প্রার্থীর ৮-১০ সমর্থক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের দুজনের ওপর হামলা চালায় এবং আহত করে ফেলে রেখে যায়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মাহমুদুল হাসান বলেন, “দুজনের হাত-পা ভেঙে গেছে। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়েছে।”

গুরুদাসপুর থানার ওসি উজ্জ্বল হোসেন বলেন, “স্বতন্ত্র প্রার্থী আসিফ আব্দুল্লাহ বিন কুদ্দুস শোভনের সমর্থক শরিফুল ইসলাম ও সিরাজুল ইসলামের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এ ঘটনা তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা হবে এবং দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।”

সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সালমা আক্তার বলেন, “হামলার খবর পেয়ে ঘটনস্থলে ম্যাজিস্ট্রেট পাঠানো হয়েছে।”

হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী আসিফ আব্দুল্লাহ বিন কুদ্দুস শোভন বলেন, “আমার বাবা প্রয়াত সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুসের ব্যাপক জনপ্রিয়তা ছিলো। বাবার জনপ্রিয়তায় দুই উপজেলার জনগণ ভালবেসে আমাকে প্রার্থী করেছেন।

“আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে কর্মী-সমর্থকদের ভয় দেখানোর জন্য এ হামলা চালানো হচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের কাছে সঠিক পদক্ষেপ কামনা করেছি।”

এ বিষয়ে বর্তমান সংসদ সদস্য ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, “আমার কোনো সমর্থক এমন কোনো কাজ করতে পারেন না। এমন ঘটনার কথা এখনও শুনিনি আমি। এখনি খোঁজ নিচ্ছি।

তবে, যদি কেউ অপরাধ করে তাকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান নৌকার প্রার্থী।