রুশ বাহিনীর হামলা ঠেকাতে ইউক্রেইনের সেনাদের মরিয়া চেষ্টার মধ্যে কিছুক্ষণ পরপরই বেজে উঠছে সাইরেন; জীবন বাঁচাতে তাই হুড়মুড় করে ঢুকে পড়তে হচ্ছিল বাংকারে।
Published : 27 Feb 2022, 12:42 AM
শনিবার দিনের বেলায় রাজধানী কিয়েভে হামলার তীব্রতা কিছুটা কমে এলেও রাতে যুদ্ধটা আরও তীব্র হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা করছেন সেখানকার বাসিন্দা বাংলাদেশি ব্যবসায়ী মাহবুব আলম।
১৯৮২ সাল থেকে তিনি ইউক্রেইনে বসবাস করছেন, এখন সে দেশের নাগরিক। টেলিফোনে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কাছে গত শুক্রবার রাতে কিয়েভে সংঘাতের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন মাহবুব।
তিনি বলেন, “রাশিয়া চেষ্টা করছে যেমন করে হোক কিয়েভ সরকারকে হটাতে। রুশ সেনাবাহিনী শুক্রবার রাতে অনেকবার কিয়েভ দখল করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে।
“তারা শুধু শহরের কিছু কিছু ক্ষয়ক্ষতি করতে পেরেছে। আগামী দুই/তিন দিন লড়াই আরও তীব্র হবে বলেই মনে হচ্ছে। রাতে এখানে তীব্র লড়াই হয়েছে। ইউক্রেইন সেনারা রুশ বাহিনীকে প্রতিহত করার চেষ্টা করছে।”
তিনি জানান, রাশিয়ার সর্বাত্মক আক্রমণের তৃতীয় দিনে শুধু কিয়েভ নয়, ইউক্রেইনের সেনাবাহিনী মারিওপোল, ওডেসা, খারকিভ, চেরনিগভের মতো শহরগুলোতে ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
“শুনেছি কোথাও কোথাও তারা বেদখল হওয়া শহরে পুনরায় নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেয়েছে,” বলেন তিনি।
ইউক্রেইনে হামলার পরিকল্পনা নেই জানিয়ে কয়েক মাস ধরে বিশ্ব নেতাদের আশঙ্কাকে নাকচ করে দিলেও গত বুধবার রাতে হঠাৎ করেই দেশটিতে অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
কিয়েভের বাসিন্দা মাহবুব বলেন, “পুতিন তো শুধু অস্ত্রের লড়াই নয়, কথার লড়াইও শুরু করেছেন। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে নিয়ে আজেবাজে কথা বলছেন। উনি কমেডিয়ান ছিলেন, এটা নিয়ে ব্যক্তিগতভাব আক্রমণ করছেন।”
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, শুক্রবার ইউক্রেইনীয় সেনাবাহিনীকে নিজেদের হাতে ক্ষমতা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে দেশটির সরকারকে ‘মাদকাসক্ত এবং নিও নাৎসি’ বলেও আখ্যায়িত করেন পুতিন।
গত শুক্রবার রাশিয়ার ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র কিয়েভে একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকে আঘাত হানে। সেখান দুইজন নিহত এবং ছয়জন গুরুতর আহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে বিবিসি।
ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলার্বষণের মুখে দেশটির বাসিন্দারা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বাংকার, ভূগর্ভস্থ মেট্রো স্টেশনসহ বিভিন্ন স্থানে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। তবে কিয়েভ এখনও ইউক্রেইন সেনাদের নিয়ন্ত্রণে আছে।
বর্তমানে কিয়েভ শহরে কী অবস্থা দেখেছেন জানতে চাইলে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী মাহবুব বলেন, “অনেক মানুষ চলে গেছেন। নগরী তাই ফাঁকা। রাস্তায় ইউক্রেইনের সেনাদের দেখা যাচ্ছে।”
নিরাপদ এলাকা সরে যাচ্ছেন না কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, “চাইলেই তো আর চলে যাওয়া যায় না। সীমান্ত অনেক দূর। তার উপর পথে পথে মানুষকে দুর্বিসহ কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে। তাই আর যাইনি। দেখা যাক কী হয়।”
নগরীতে থেকে যাওয়া অন্যান্য বাঙালিদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন বলেও জানান তিনি।
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা [email protected]। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |