গত ২৩ সেপ্টেম্বর ছিল সৌদি আরবের ৯১তম জাতীয় দিবস, এ উপলক্ষে অফিস একদিনের ছুটি। শুক্র ও শনিবার অফিস সাপ্তাহিক বন্ধ। তিনদিনের সময় পেয়ে অনেকদিন ধরে যাবো যাবো করে যাওয়া না হওয়া ভ্রমণে বের হয়েছি। টার্গেট জেদ্দা থেকে ৭২০ কিলোমিটার দূরের দক্ষিণের শহর আবহা, খামিস মোশায়েত। আরও কয়েকশো কিলোমিটার গেলেই ইয়েমেন বর্ডার।
বৃহস্পতিবার ভোর ৬টায় আরও দুই সফরসঙ্গীসহ আমার গাড়ি নিয়ে রওনা হলাম। যাত্রা বিরতিসহ ৯ ঘণ্টায় আমরা গন্তব্যে পৌঁছাই। সেখানে বসবাস করে আমার প্রিয় বন্ধু রিয়াদ। সে আমাদের রিসিভ করে তার বাসায় নিয়ে যায়। আছর নামাজ পড়ে খাওয়ার পর্ব শেষ করে আমরা বেরিয়ে পড়লাম ।
আবহা আল সওদা পাহাড়ের উপর খুব সুন্দর দৃশ্য।সওদার সৌন্দর্য ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। শুক্রবার জুমার নামাজ পড়ে খামিস মোশায়েত থেকে আমাদের যাত্রা শুরু হয়। আমরা চারজন - আব্দুস সালাম, মাকসুদ, রিয়াদ ভাই এবং আমি সুদার পথে।
রেজাল আলমা গ্রামে নামার জন্য পাহাড়ের গায়ে রাস্তা করা হয়েছে। ভয়ংকর সেই রাস্তা, উপর থেকে সাপের মতো লাগলো। অনেক ঝানু ড্রাইভার এই রাস্তায় নামতে চায় না। আমি নিজেও গাড়ি ড্রাইভ করি। তবুও এই রাস্তা দেখে আত্মা খাঁচা ছাড়া। রিয়াদ ভাই একবার নেমেছে অনেক আগে। নেমে আর এই রাস্তায় দিয়ে উঠেনি। একশ কিলোমিটার দূরের পথ দিয়ে নাকি বাসায় গেছে। এই পথে কম সময়ে যাওয়া যায়। আবার সমতল রাস্তায় দিয়ে যাওয়া যায়, তবে একশ কিলোমিটার বেশি পথ।
পায়ে হেঁটে নিচের দিকে যাওয়ার পথে বাংলাদেশি পরিছন্নতা-কর্মী গাজীপুর শ্রীপুরের আফজাল ভাইয়ের সঙ্গে দেখা। চার বছর আগে প্রথমবার সৌদি আরবে এসেছেন। পরিছন্নতা-কর্মী ভিসার দাম শুনে আমি নিজেই অবাক। তার কথা যদি সত্য হয় পাঁচ বছর লেগে যাবে এই টাকা উঠাতে। আফজাল ভাই জেনে- বুঝে এসেছেন। কাজ যেমন হোক, আফসোস- বেতন কম। তারপরও ভালো আছেন প্রিয় প্রবাসী আফজাল ভাই।
আবহা আবু খায়াল পার্ক, শ্বাসরুদ্ধকর দৃশ্য এবং চমৎকার সবুজের জন্য বিখ্যাত এটি। পারিবারিক পিকনিকের পরিকল্পনা করার জন্য একটি আদর্শ স্থান। আপনি পার্কে দীর্ঘ হাঁটাহাঁটি করতে পারেন এবং একটি তাজা বাতাস উপভোগ করতে পারেন।
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |