লন্ডনে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে সেমিনারে দুই প্রবাসী শিক্ষক

রাশিয়া চীন ও ভারতের সক্রিয় ভূমিকা ছাড়া রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য এসেছে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সেমিনার থেকে যেটির আলোচক ছিলেন প্রবাসী বাংলাদেশি শিক্ষক দম্পতি।

প্রবাস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 March 2020, 02:02 PM
Updated : 4 March 2020, 02:02 PM

মঙ্গলবার অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রিফিউজি স্টাডি সেন্টার ‘রোহিঙ্গা নির্যাতনের কারণ ও প্রতিকার’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে।

সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক দিদারুল ইসলাম। তিনি বর্তমানে যুক্তরাজ্যের লিডস ইউনিভার্সিটিতে বর্তমানে ‘কাউন্টার টেররিজম পলিসি’ বিষয়ে পিএইচডি গবেষণা করছেন।

অক্সফোর্ড রিফিউজি সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ম্যাথিউ গিবনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে দিদার বলেন, “রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর ভূমিকা যথেষ্ট প্রামাণিক নয়। এই সংকট মোকাবেলায় তিনটি শক্তিশালী দেশ; রাশিয়া, চীন ও ভারতকে অন্তর্ভুক্ত না করতে পারলে মিয়ানমারকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে রাজি করানো যাবে না। বরং দিন দিন এই সঙ্কট আরও ঘনীভূত হবে।“

“যেহেতু রাজনৈতিক কারণে মিয়ানমার এই তিন পরাশক্তির সাথে ভাল সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে, তাই এই তিন দেশ সামনে এগিয়ে আসলেই কেবল বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সম্ভব হবে,” বলেন দিদার।

সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের দুই শিক্ষক মো দিদারুল ইসলাম ও আয়েশা সিদ্দিকা রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতনের কারণ নিয়ে একটি সাক্ষাৎকার ধর্মী গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন।

প্রতিবেদনে তারা রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতনের কারণ হিসেবে পাঁচটি বিষয়কে চিহ্নিত করেন। এগুলো হলো- বৌদ্ধ ধর্ম ভিত্তিক জাতীয়তা ও মুসলিম বিদ্বেষ, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বহিরাগত হিসেবে/ বাঙালি গণ্য করা, জমি দখলের লিপ্সা, শিল্পায়নের জন্য ভূমি দখল করা এবং বৌদ্ধদের সংখ্যালূঘূ হয়ে যাবার ভয়।

নির্যাতনের মুখে মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে নেওয়া সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে গবেষণা প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

অধিকাংশ রোহিঙ্গার উত্তর ছিল, রোহিঙ্গারা তাদের ভূমিতে ফিরবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা এই নিশ্চয়তা তারা পাচ্ছে যে, মিয়ানমারে ফিরে গেলে তাদের উপর আর অত্যাচার করা হবে না ও তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হচ্ছে।

সেমিনারে উপস্থিত সবাই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন।