স্থানীয় সময় শনিবার নিউ ইয়র্ক সিটির ‘টিমস্টারস লোকাল-২৩৭ (২১৬ ওয়েস্ট ১৪ স্টিট) এর প্রথম তলায় দুপুর ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সম্মেলন চলে।
‘ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা ভোটের জন্য প্রস্তুত প্রেসিডেন্সিয়াল ইলেকশনে’ স্লোগান সামনে রেখে সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।
আমেরিকায় দক্ষিণ এশিয়ানদের অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে কর্মরত ‘আসাল’-এর সম্মেলনে সামনের নির্বাচনে বিভিন্ন রাজ্য পার্লামেন্ট এবং জর্জিয়া ও নিউ ইয়র্ক থেকে কংগ্রেসে ডেমক্র্যাটিক পার্টির মনোনয়নের দৌড়ে অবতীর্ণ দক্ষিণ এশিয়ান প্রার্থীদের নিয়ে দুটি পর্ব ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
‘সাউথ এশিয়ান উইমেন রেডি টু লিড’ শিরোনামে নারী প্রার্থীরা এবং ‘সাউথ এশিয়ান্স ইন আমেরিকা: চুজিং আওয়ার ক্যান্ডিডেট’ শিরোনামে পুরুষ প্রার্থীরা নিজ নিজ কর্মকৌশল নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় বক্তারা বলেন, বিভিন্ন স্থানে দক্ষিণ এশিয়ান ভোটারের সংখ্যা সন্তোষজনকভাবে বেড়েছে। এদেরকে ঐক্যবদ্ধ করা সম্ভব হলে সকলেই জয়ী হবেন বলে সম্মেলন থেকে আশা প্রকাশ করা হয়। আর এক্ষেত্রে আসালের ভূমিকা অপরিসীম বলেও মনে করছেন প্রার্থীরা। এ পর্বে অংশ নিতে জর্জিয়া থেকে এসেছিলেন কংগ্রেসপ্রার্থী নাবিলা ইসলাম। নিউ ইয়র্কের কংগ্রেসনাল ড্রিস্টিক্ট-১৪ থেকে বদরুন খান, অ্যাসেম্বলি ডিস্ট্রিক্ট-৩৮ থেকে অ্যাটর্নি জেনিফার রাজকুমারও নিজ নিজ প্রস্তুতি নিয়ে জানান।
আসালের জাতীয় কমিটির মহিলা বিষয়ক চেয়ারপার্সন সাহানা বেগম, পলিটিক্যাল অ্যাকশন ডাইরেক্টর সুলতানা খানমের সঞ্চালনায় এ পর্বে আরও বক্তব্য দেন ব্রুকলিন ইয়ং ডেমোক্র্যাটিক ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিনা দাস।
অপরদিকে, আসালের মিশিগান চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট রাব্বি আলম এবং ম্যারিল্যান্ড থেকে আসা আনিস আহমেদের সঞ্চালনায় দক্ষিণ এশিয়ান হিসেবে দলীয় মনোনয়নের লড়াইয়ে অবতীর্ণ নিউ ইয়র্কের অ্যাসেম্বলি ডিস্ট্রিক্ট-৩৪ থেকে জয় চৌধুরী, অ্যাসেম্বলি ডিস্ট্রিক্ট-২৪ থেকে জন এলবার্ট, নিউ ইয়র্ক সিটি কাউন্সিল ডিস্ট্রিক্ট-২৪ থেকে ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার কথা বলেন।
বৈরী আবহাওয়ার কারণে কিছুটা দেরিতে শুরু হলেও অতিথিরা সবাই সম্মেলনে এসেছিলেন।
সম্মেলন কমিটির চেয়ার আজিজ আহমেদের উদ্বোধনী বক্তব্যের পর স্বাগত জানিয়ে কথা বলেন আসালের প্রতিষ্ঠাতা ও জাতীয় কমিটির প্রেসিডেন্ট খ্যাতনামা শ্রমিক সংগঠক মাফ মিসবাহ উদ্দিন।
বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আসালের কর্মকর্তাদেরকে পরিচয় করিয়ে দেন জাতীয় কমিটির সেক্রেটারি করিম চৌধুরী।
সম্মেলনে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং, কংগ্রেসম্যান আদ্রিয়ানো স্পেইলেট, কংগ্রেসম্যান ম্যাক্স রোজ, নিউ ইয়র্ক স্টেটের অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিসা জেমস, স্টেট কম্পট্রোলার থমাস দ্য নেপিলো এবং স্টেট অ্যাসেম্বলি সদস্য ক্যাটালিনা ক্রুজ।
সম্মেলনে আসালের সদস্যদের মধ্যে ইতিমধ্যে যারা বিভিন্ন সিটি ও স্টেটে নির্বাচিত হয়েছেন তাদেরকে বিশেষ সম্মাননা ক্রেস্ট দেওয়া হয়।
এরা হলেন- মিশিগানের হ্যামট্রমিক সিটি কাউন্সিলের মেম্বার নাঈম এল চৌধুরী, আটলান্টিক সিটির কাউন্সিলম্যান মোহাম্মদ হোসেন মোর্শেদ এবং এম আঞ্জুম জিয়া, আটলান্টিক সিটি স্কুল বোর্ডের সুব্রত চৌধুরী এবং কাজী ইসলাম।
অনুষ্ঠানে ‘পাবলিক স্কয়ার : স্পিক ইউর মাইন্ড- ফিল ফ্রি টু ক্রিটিক আসাল’ এর মডারেটরের দায়িত্বে ছিলেন ব্রঙ্কস চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট সৈয়দ তাহমিদুল হক।
ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আসালের ন্যাশনাল করেসপন্ডিং সেক্রেটারি জেড মাতালন। কনভেনশনের শুরুতে শপথ বাক্য পাঠ করান আসাল স্ট্যাটেন আইল্যান্ড চ্যাপ্টারের ইউথ কমিটির মানহা মেহজাবিন। রেজিস্ট্রেশনের দায়িত্বে ছিলেন আসাল এর অ্যাসোসিয়েট ন্যাশনাল পলিটিক্যাল ডিরেক্টর জামিলা এ উদ্দিন, চ্যাপ্টারস আন্ডার ক্রিডেনশিয়ালস কমিটির চেয়ার ও ব্রুকলিন চ্যাপ্টারের ভাইস প্রেসিডেন্ট মোস্তাক আলী।
‘২০২০ প্রেসিডেন্সিয়াল ইলেকশন: আমরা কী পারবো বিজয়ের সীমারেখা তৈরি করতে’ শীর্ষক গুরুত্বপূর্ণ এক আলোচনার সঞ্চালনা করেন আসালের জাতীয় সহযোগী পরিচালক (রাজনৈতিক) জামিলা এ উদ্দিন এবং অ্যাটর্নি আলী নাজমি। প্যানেলিস্ট ছিলেন নিউ জার্সির প্রসপেক্ট পার্ক সিটির মেয়র মোহাম্মদ খায়রোল্লাহ, নিউ ইয়র্ক স্টেট এএফএল-সিআইও এর পরিচালক ফরিদ মিশেলেন, কুইন্স কাউন্টি ইয়ং ডেমক্র্যাটের প্রেসিডেন্ট ব্রিয়ানা মলিগেন, কমিউনিটি এনগেজমেন্ট ডিভিশনের ডিস্ট্রিক্ট লিডার জেনি লো, জেএফকে ডেমক্র্যাটিক ক্লাবের প্রেসিডেন্ট জেফ খন, নিউ ইয়র্ক স্টেট ডেমক্র্যাটিক পার্টির উইমেন্স ভোট ডিরেক্টর নী হোয়াইটেকার, মেয়র অফিসের ইমিগ্রেশন সম্পর্কিত পরিচালক বিটা মোস্তফি প্রমুখ।
নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক আসালের শাখা রয়েছে নিউজার্সি, পেনসিলভেনিয়া, মিশিগান, জর্জিয়া, ভার্জিনিয়া, ম্যারিল্যান্ড, ইলিনয়, কানেকটিকাট, আলাবামা, ক্যানসাস, ফ্লোরিডা রাজ্যে। জর্জিয়া চ্যাপ্টারের অন্যতম সংগঠক আলী হোসেন সকলকে দক্ষিণ এশিয়াভিত্তিক ব্যানারে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
কানাডাতেও রয়েছে আসালের ইউনিট। নিউ ইয়র্ক সিটির সবকয়টি বরোতে সক্রিয় রয়েছে আসালের শাখা।
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |