ভোলার ঘটনায় নিউ ইয়র্কে ‘সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী র‌্যালি’

ভোলার বোরহানউদ্দিনে এক হিন্দু যুবকের ফেইসবুক হ্যাকড হওয়ার পর ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে সহিংসতার ঘটনার প্রতিবাদে র‍্যালি করেছে নিউ ইয়র্ক প্রবাসীরা।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Oct 2019, 04:26 AM
Updated : 26 Oct 2019, 04:26 AM

শুক্রবার সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে অনুষ্ঠিত এ র‌্যালির স্লোগান ছিলো ‘সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ’।

‘জাতপাতের বিভেদ ভুলে এসো মানবতার ছায়াতলে’, ‘গড়ে তোল আজ হাতে হাত রেখে হাত, অমানবিকতার বিরুদ্ধে তিব্র প্রতিবাদ’, ‘মাদকমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত আর সন্ত্রাসমুক্ত বাংলাদেশ চাই’, ‘মোরা এক বৃন্তে দুটি ফুল-হিন্দু আর মুসলমান’, ‘ধর্ম যার যার দেশ সবার’ ইত্যাদি লেখা ফেস্টুন-প্লেকার্ড হাতে অংশগ্রহণকারিরা একাত্তরের রাজাকার আর জামায়াত-শিবিরের সব ধরনের অপতৎপরতার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

র‌্যালির সূচনা বক্তব্য দেন এর অন্যতম আয়োজক সাংবাদিক মোজাহিদ আনসারী।

তিনি বলেন, “একাত্তরে আমরা যে চেতনায় বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি, সেটি ছিল অসাম্প্রদায়িক চেতনার শোষণমুক্ত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা। সেই বাংলাদেশের মূলে আজ কুঠারাঘাত করা হচ্ছে। ধর্মের নামে আজ ধর্মান্ধ শক্তি রাষ্ট্রের ভিত্তিমূলে আঘাত করছে।”

“মিথ্যা একটি অভিযোগে ভোলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে আক্রমণ করা হয়েছে। আহত করা হয়েছে লোকজনকে। এরপর তাদের বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেশী হিন্দুদের রক্ষায় এগিয়ে যাওয়া মুসলমান পরিবারের বাড়িতেও আগুন দেয়া হয়েছে। আমরা কি এই বাংলাদেশ চেয়েছিলাম?”

মোজাহিদ আনসারী অভিযোগ করেন, “আর এমন সময়ে ওরা আঘাত হেনেছে, যখন বাংলাদেশের আপামর মানুষের প্রত্যাশার পরিপূরক হিসেবে মাদকমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত, অন্যায়-অবিচারমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন, যে অভিযানে নিজ দলীয় নেতারাও রেহাই পাচ্ছে না।”

তিনি আরও বলেন, “সরকারের ভেতরে একটি মহল রয়েছে যারা শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে চায়, ক্ষমতার বাইরের আরেকটি গ্রুপ রয়েছে তারাও এ সরকারকে যে কোন উপায়ে নিঃশেষ করতে চায়। আবার ধর্মান্ধ শক্তিও এই সরকারকে উচ্ছেদ করতে চায়। তবে প্রবাসীরা আজ সংকল্পবদ্ধ যে শেখ হাসিনার এই অভিযান এগিয়ে নিতে তথা বাংলাদেশকে সমৃদ্ধি দিতে সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।”

যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বারি বলেন, “ধর্মীয় চরমপন্থী আর প্রগতির লেবাস লাগিয়ে রাতারাতি আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়া দুর্বৃত্তরা গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাতিঘর হিসেবে আবির্ভূত শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রবাসীরা আজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। তাই কোন অপশক্তিই বাংলাদেশকে আর পিছিয়ে নিতে পারবে না।”

 র‌্যালিতে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ, খোরশেদুল ইসলাম, হোসনে আরা, প্রবীর রায়, সৈয়দ জাকির আহমেদ রনী, নিনি ওয়াহেদ, সুব্রত বিশ্বাস, সরাফ সরকার, ফাহিম রেজা নূর, স্বীকৃতি বড়ুয়া, গোপাল সান্যাল, নূরে আলম জিকো ও শাহীন আজমল।

মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাশেদ আহমেদ, আবুল বাশার চুন্নু ও লাবলু আনসার। আয়োজকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শুভ রায়, সঞ্জিবন সরকার, সবিতা দাস ও উইলি নন্দি।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!