ফ্রাঙ্কফুর্টে জাতীয় শোক দিবস পালন

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত-বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করেছে।

ইউরোপ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 August 2019, 03:20 PM
Updated : 27 August 2019, 03:21 PM

স্থানীয় সময় রোববার জার্মান আওয়ামী লীগের উদ্যোগে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভা এবং দোয়ার আযোজন করা হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরান থেকে পাঠ করেন শিহাব আলম।  

১৯৭৫ সালের বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার এবং সেই দিনের সকল শহীদের  আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়, যেটি পরিচালনা করেন জামসেদ আলম রানা এবং এর পরে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

দিবসের কর্মসূচি সূচনা করেন জার্মান আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দেওয়ার মাধ্যমে জার্মান আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম বসিরুল আলম চৌধুরী সাবুর পক্ষে সিনিয়র সহ সভাপতি জাহিদুল ইসলাম পুলক এবং সাধারণ সম্পাদক আব্বাস আলী চৌধুরী শ্রদ্ধা জানান।

এরপর পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন শহর থেকে আগত জার্মান আওয়ামী লীগ, জার্মান আওয়ামী যুবলীগ, জার্মান স্বেচ্ছাসেবক লীগ, বাংলাদেশ ছাত্রলিগ জার্মান শাখা, শেখ রাসেল পরিষদ, বঙ্গবন্ধু রিসার্স ফাউন্ডেশন এর নেতা ও কর্মীরা সারিবদ্ধভাবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

এই পর্বটি পরিচালনা করেন নিশাত জাহান ঝর্ণা। এরপর বঙ্গবন্ধুর জীবনীর উপর একটি বিশেষ প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়। দিনের কর্মসূচিতে  ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী আশিফ হোসেন দিপ এর পরিচালনায় উক্ত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সিনিয়র সভাপতি জাহিদুল ইসলাম পুলক। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম এবং প্রধান বক্তা ছিলেন জার্মান আওয়ামী লীগের প্রধান উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা আমিনুর রহমান খসরু।

এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন জার্মান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্বাস আলী চৌধুরী, উপদেষ্টা মো. নাসির উদ্দিন, সহ সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, সহ সভাপতি জিল্লুর রহমান, সহ সভাপতি আতিকুর রহমান সবুজ, সহ সভাপতি আব্দুল মান্নান, সাবেক যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, এন আর ডাব্লিউ শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি নুরুল ইসলাম, বায়ার্ন শাখার সিনিয়র সহ সভাপতি সালমান রহমান লোকমান।

সভায় জার্মান আওয়ামী লীগের সভাপতি বসিরুল আলম চৌধুরী সাবু ছেলের অসুস্থতার কারণে উপস্থিত হতে পারেননি।

তিনি টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য দেন এবং শোক দিবসে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

জার্মান আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বর্তমান সিনিয়র সহ সভাপতি শেখ বাদল আহমেদও টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে নেতা ও কর্মীদের উদ্দেশ্য শোক দিবসে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

এছাড়া আলোচনা সভায় আরও মূল্যবান বক্তব্য দেন জার্মান আওয়ামী লীগের নেতা ও কর্মীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য আশুতোষ বনিক, প্রফেসর হারুনুর রশিদ, মাবু চৌধুরী, বাবুল তালুকদার এমরান খান, রেজাউল করিম শহীদ, মোঃ জাকির হোসেন, প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান, রোমান মিয়া, ইমরান ভুঁইয়া, ফরিদ হোসেন শিহাব, দেলোয়ার রাজু, শরীফ ভুঁইয়া এবং বাবুল মোল্লা।

এরপর আরও বক্তব্য দেন করেন জার্মান আওয়ামী লীগের প্রদেশিক কমিটির নেতারা। এরা হলেন- বায়ার্ন মিউনিখ শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুরাদ বেপারী, সোহেল মিয়া, সাধারণ সম্পাদক কামাল বেপারী, বার্লিন শাখার সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মীর জসিম মিয়া, স্টুটগার্ট শাখার সভাপতি দেলোয়ার হোসেন, লুদভিগস হাফেন শাখার সভাপতি বেলায়েত হোসেন মুন্সি এবং মানহাইম শাখার সহ সভাপতি নাসির উদ্দিন ভূইয়া।

এরপর আরও বক্তব্য দেন জার্মান আওয়ামী যুবলীগ সভাপতি আমানউল্লাহ ইসলাম, মহসিন খান দিদারুল ইসলাম এবং জার্মান স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি বোরহান খান, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের জার্মান শাখার সভাপতি দেওয়ান আরেফিন টিপু , সহ সভাপতি গাজী জিয়াউল হক মাসুম, সহ সভাপতি তিজান চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফায়সাল আমান পাপ্পু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মেরাজুল ইসলাম অনিক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী হৃদয়, সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল সাগর, সাংগঠনিক সম্পাদক বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক মো. মোরশেদ মবাইদুল ইমন, শেখ রাসেল পরিষদের সভাপতি কাইয়ুম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম,  বঙ্গবন্ধু রিসার্স ফাউন্ডেশন সভাপতি এফ এম এইচ আলীসহ প্রমুখ। উক্ত দিনের কর্মসূচিকে সার্থক ও সফল করায় সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন জার্মান আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকমণ্ডলী।

আলোচনা সভার প্রধান অতিথি নুরুল ইসলাম বলেন, “বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে আমরা বাংলাদেশ নামক দেশ পেতাম না। বঙ্গবন্ধু নিজেই একটা ইতিহাস, উনি একটি দেশ, জাতীয় পতাকা, জাতীয় সঙ্গীতের জন্যে জীবন দিয়ে গেছেন। উনার ডাকে আমার মতো ২০ বছরের একটি ছেলে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। উনি ছিলেন হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মতো– যার ডাকে সমস্ত বাংলাদেশিরা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।”

আলোচনা সভার প্রধান বক্তা জার্মান আওয়ামী লীগের প্রধান উপদেষ্টা আমিনুর রহমান খসরু বলেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বের জন্যই আজ আমরা একটি গর্বিত স্বাধীন দেশের নাগরিক হতে পেরেছি। আজ যদি দেশ স্বাধীন না হতো তাহলে আমাদের কোন ভবিষ্যত থাকত না।”

“মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি পরিকল্পিতভাবে ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। এটা ছিল ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড। জাতির পিতার আদর্শ নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার জন্য সোনার মানুষ তৈরি করতে হবে।”

আলোচনা সভার বিশেষ অতিথি সাধারণ সম্পাদক আব্বাস আলী চৌধুরী বলেন, “জার্মান আওয়ামী লীগের বিগত দিনের সকল বিভেদ ভুলে জাতীয় শোকের দিনে আবারও সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, আগামী দিনে দেশ গড়ার কাজে জাতির পিতার সোনার বাংলা গড়তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত করতে জার্মান আওয়ামী লীগ আজ ঐক্যবদ্ধ। জার্মান আওয়ামী লীগের পদবঞ্চিত ও অনুপ্রবেশকারীরাই শোকের মাসে বঙ্গবন্ধুকে অপমান করেছে, শোক পালন না করে তাহারা করছে উদযাপন, জার্মান আওয়ামী লীগের এদের শক্ত হস্তে দমন করবে সকল বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকদের নিয়ে।”  

সমাপনী বক্তব্যে আলোচনা সভার সভাপতি জার্মান আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি জাহিদুল ইসলাম পুলক বঙ্গবন্ধু যে ত্যাগ তিতিক্ষার মাধ্যমে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছেন, সে দেশের উন্নয়নের জন্য সকলকে দৃঢ়ভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে নিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোকে, প্রবাসী বাংলাদেশী সহায়তা করতে আহ্বান জানান।

তিনি আরও বলেন, “জার্মান আওয়ামী লীগের পদবঞ্চিত ও বিভিন্ন দল থেকে অনুপ্রবেশকারীরাই চায় না, আমরা মুজিব সৈনিকরা ঐক্যবদ্ধ হই, সেই জন্য তাহারা সব সময় দলের ভিতরে গ্রুপিং উস্কে দিয়ে জননেত্রীর হাতকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, জার্মান আওয়ামী লীগের মুজিব সৈনিকরা তাদের শক্তহস্তে দমন করবে।”

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!