রোহিঙ্গা সঙ্কটে প্রবাসীদের সহায়তা চান পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নির্যাতনের মুখে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরাতে বিভিন্ন দেশে থাকা প্রবাসীদের সহায়তা চান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে এ মোমেন।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 July 2019, 08:47 AM
Updated : 22 July 2019, 08:47 AM

আন্তর্জাতিক জনমত সৃষ্টিতে তারা ভূমিকা রাখতে পারবেন বলে মনে করেন তিনি।

বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডি.সিতে এবং শুক্রবার বস্টনে প্রবাসীদের সঙ্গে আলাদা দুটি মতবিনিময় সভায় একথা জানান তিনি।

তিনি বলেন, “রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রবাসীদের প্রমাণ দিতে হবে যে তারা সত্যিকার অর্থেই একেকজন বাংলাদেশের অ্যাম্বাসেডর। একাত্তরে যেমন বিশ্বখ্যাত নিউ ইয়র্ক সিটির মেডিসন স্কয়ার গার্ডেনে জর্জ হ্যারিসনের কনসার্টের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের প্রতি আন্তর্জাতিক জনমত সোচ্চার করা সম্ভব হয়েছিল, ঠিক তেমনি রোহিঙ্গা ইস্যুতেও কনসার্ট, সেমিনার-সিম্পোজিয়াম, র‍্যালি এবং নিজ নিজ এলাকার সিনেটর-কংগ্রেসম্যানদের সঙ্গে দেন-দরবার করতে হবে।”

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, “সরকারের উদ্যোগে কূটনৈতিক তৎপরতাকে সুসংহত করতে প্রবাসীদের কর্মকাণ্ড অপরিসীম ভূমিকা রাখবে। কারণ নিজ নিজ এলাকার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা প্রবাসীদের অনুরোধ গুরুত্ব দিতে বাধ্য। ইতিপূর্বে বহুভাবে সে স্বাক্ষর রেখেছেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীরা।”

শুক্রবার বস্টনে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সেমিনার শেষে বস্টনে একটি হোটেলে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এতে উপস্থিত ছিলেন আবু হাসনাত, মিজানুল চৌধুরী, বদিউজ্জামান নাসিম, ইউসুফ চৌধুরী, ইকবাল ইউসুফ, রোকেয়া মাহমুদ, মনজুর আলম, ফরিদা আরভী, মিন্টু কামরুজ্জামান, মোহাম্মদ মিয়াজী ও সাজ্জাদুল সাজু।

ওয়াশিংটন ডি.সির মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন এবং নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা।

যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন আয়োজিত এ মতবিনিময় সমাবেশে কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তার সাফল্যের কথা তুলে ধরেন মন্ত্রী। এ অবস্থায় রোহিঙ্গা ইস্যুটি কিভাবে অর্থনীতি, সমাজ ও পরিবেশের উপর প্রভাব ফেলছে তা উল্লেখ করেন তিনি।

রোহিঙ্গা সঙ্কটের ক্রম ইতিহাসসহ এ সঙ্কটের সমাধানে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের পাশাপাশি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নিয়ে দ্বি-পাক্ষিক আলোচনার শুরু থেকে এ পর্যন্ত বিস্তারিত তুলে ধরেন মোমেন।

তিনি বলেন, “মিয়ানমার এ সঙ্কটের সমাধানে এগিয়ে আসেনি। কফি আনান কমিশনের সুপারিশ থেকে শুরু করে কোনো পদক্ষেপই তারা বাস্তবায়ন করেনি। রাখাইন রাজ্যে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার আস্থা ও নিরাপত্তা সৃষ্টিকারী কোনো অনুকূল পরিবেশই তারা সৃষ্টি করতে পারেনি। পরিবর্তে মিয়ানমার বিষয়টি নিয়ে ব্লেইম গেম খেলছে।”

রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমাধানে বাংলাদেশের পক্ষে যা সম্ভব তার সব সবকিছুই করে যাচ্ছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “এ সঙ্কটের সমাধানে বিশ্ব বিবেককে এগিয়ে আসতে হবে। আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক পদক্ষেপের পাশাপাশি শিক্ষাবিদ, গবেষক ও বিশ্বের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভূমিকা রাখতে হবে যাতে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের টেকসই ও স্থায়ী প্রত্যাবাসন নিশ্চিত হয়।”

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ফাউন্ডেশনের যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি মনসুর খন্দকার। স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের মিয়া।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!