মিশিগানে পুলিশের সঙ্গে বাংলাদেশি ট্যাক্সিচালকদের সভা

যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যে স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছেন সেখানকার নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতিপ্রত্যাশী বাংলাদেশি ট্যাক্সিচালকরা।

স্থানীয় সময় রোববার বিকেলে অঙ্গরাজ্যটির বাংলা টাউন খ্যাত হ্যামট্রামিক শহরের আলাউদ্দিন রেস্টুরেন্টে এ সভায় আয়োজন করে ট্যক্সিচালকদের সংগঠন ‘বাংলাদেশি আমেরিকান ডেমোক্রেটিক ককাস’ (বিএডিসি)।

আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাহাত খানের সঞ্চালনায় সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নাজমুল হাসান শাহীন সভার উদ্দেশ্য ও পরবর্তী কর্মপন্থা নিয়ে আলোচনা করেন।

স্বাগত বক্তব্য দেন বিএডিসি বর্তমান সভাপতি জুবারুল চৌধুরী খোকন। কমিউনিটির নেতা-কর্মীদের পরিচয় করিয়ে দেন বর্তমান সহ সভাপতি মুহিত মাহমুদ।

এ সভায় হ্যামট্রামিক শহরের পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রাজ্য সরকার ও সিটি কাউন্সিলের নির্বাচিত প্রতিনিধি, বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতা-কর্মী, বিএডিসির নেতা-কর্মী ও স্থানীয় ক্যাবচালকসহ প্রবাসীরা অংশ নেন।

প্রধান অতিথি ছিলেন মিশিগান ওয়েইন কাউন্টির শেরিফ বেনি নেপোলিয়ন, ডেট্রয়েট সিটির ডেপুটি পুলিশ চিফ টড বেটিসন। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্টেট রিপ্রেজেন্টেটিভ আইজ্যাক রবিনসন ও হ্যামট্রামিক সিটির সার্জেন্ট রবার্ট জর্জ।

মতবিনিময় সভার এক পর্যায়ে ডেট্রয়েট সিটি পুলিশ ইনভেস্টিগেটর ব্রায়েন ফন্টেইন ক্যাবচালকদের ‘সেইফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি’ বিষয়ে প্রায় এক ঘণ্টার প্রশিক্ষণ পরিচালনা করেন।

সভায় ট্যাক্সিক্যাব চালকের মাঝে উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, মোহাম্মদ উদ্দিন, খন্দকার শাফি আহাম্মদ, মহিন আলী, মোহাম্মদ আখতার হোসেন, আমজাদ, আইয়ুব খান, আব্দুস শহীদ, মুসলিম আলী ও শহীদ মিয়া।

তারা জানান, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিরা আক্রমনের শিকার হচ্ছেন। অতি সম্প্রতি মিশিগান অঙ্গরাজ্যে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে চারজন ট্যাক্সিচালক গুলিতে প্রাণ হারান। চলতি বছরের ২২ মে কর্মরত অবস্থায় ক্যাবচালক জয়নুল ইসলাম প্রাণ হারান। পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তি জয়নুল ইসলামের ৭ সন্তান রয়েছে, কমিউনিটিতে তিনি বেশ পরিচিত ছিলেন। রমজান মাসে সারাদিন রোজার পর ইফতার করে ট্যাক্সিক্যাব নিয়ে কাজে বেড়িয়ে পড়েন। ডেট্রয়েট নগরীর গণমাধ্যম ফলাও করে তার মৃত্যুর সংবাদ প্রচার করে।

বাংলাদেশি ট্যাক্সিচালকদের নিরাপত্তা বাড়াতে সভায় নাজমুল হাসান শাহীন ৩ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এগুলো হচ্ছে- ১. পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে বিএডিসি ‘সেইফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি’ বিষয়ে তিন মাস পর পর সংলাপের আয়োজন করবে, ২. বিএডিসি স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে রাস্তায় পর্যাপ্ত লাইটের ব্যবস্থাকরণ, মসজিদ ও ধর্মীয় উপাসনালয়ে নিরাপত্তা বাড়ানো ও ট্যাক্সিক্যাবে ক্যামেরা স্থাপনের জন্য কাজ করবে এবং ৩. বিএডিসি ওয়েইন কাউন্টি শেরিফ বেনি নেপোলিয়ের অফিসের সঙ্গে কমিউনিটি পুলিশিং প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ করবে।

সভায় আরও বক্তব্য দেন ডেট্রয়েট সিটি কাউন্সিলম্যান স্কট বেনসন, হ্যমট্রামিক সিটি কাউন্সিলম্যান এনাম মিয়া, প্রাক্তন কাউন্সিলম্যান মোহাম্মদ হাসান, কমিউনিটি নেতা নিজাম উদ্দিন, আব্দুল লতিফ আজম, হাফিজ ফখরুল ইসলাম, মন্জুর খান, ট্যাক্সিক্যাব প্রতিনিধি আব্দুল বাসেত, বাংলাদেশি তরুণ তাজিম চৌধুরী ও শাহ আলী।

সভার সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন বিএডিসি সহ সভাপতি সোলাইমান বাহার, বিএডিসি ১১ ডিস্ট্রিক্ট কমিটির চেয়ারম্যান সাদেক রহমান সমন, বিএডিসি ১৩ ডিস্ট্রিক কমিটির চেয়ারম্যান আজিজ চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাউসার দেওয়ান, কার্যকরি কমিটির সাধারণ সম্পাদক আপেল খান ও জিয়াউদ্দিন জিয়া, বিএডিসি ১৪ ডিস্ট্রিক কমিটির কো চেয়ারম্যান নাঈম চৌধুরী, হাফিজ রহমান, মোহাম্মদ সোলায়মান ও সাবুল চৌধুরী।

সভায় অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন বিএডিসি ট্রাস্টি সিরাজুল ইসলাম ও আনোয়ার হোসেন, বিএডিসির উপদেষ্টা সৈয়দ ইকবাল হোসেন চৌধুরী ও ইউসুফ কামাল, বিএডিসির প্রতিষ্ঠাতা নেতা সেলিম আহাম্মদ, ফয়সল চৌধুরী, কমিউনিটি নেতা মো. মনির, এনাম আহাম্মেদ, আব্দুল হালিম, মো. আলম, খাজা শাহাবুদ্দিন।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা [e-mail]। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!