১৯৭৩ সালে মিয়ানমারের মংডুতে এক রোহিঙ্গা পরিবারে রাজিয়া সুলতানার জন্ম । তার বয়স যখন ছয় মাস, তার পরিবার তখন দেশত্যাগ করে বাংলাদেশের আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।
আইনজীবী, শিক্ষক ও মানবাধিকার সংগঠক রাজিয়াকে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে উল্লেখ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টে আয়োজিত ‘ত্রয়োদশ বার্ষিক ইন্টারন্যাশনাল উইমেন অব কারেজ’ অনুষ্ঠানে তার হাতে সম্মাননা তুলে দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইকেল পম্পেও।
মার্কিন ফার্স্টলেডি মেলানিয়া ট্রাম্প বিশ্বশান্তি, মানবতা, ন্যায়বিচার, লিঙ্গ সমতা এবং নারী ক্ষমতায়নে অসাধারণ অবদানের জন্যে সম্মাননাপ্রাপ্তদের ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, “সাহসী হচ্ছেন তারা, যারা পরিবর্তনের জন্য সত্যিকার অর্থে কাজ করছেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, সামাজিক বঞ্চনা উপেক্ষা করে। যারা কাজের পরিবর্তে শুধু বক্তৃতা করেন তাদের আমরা সাহসী বলছি না। ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে মানবতার জন্য যারা কাজ করছেন তাদেরকেই আজ সম্মানিত করা হল অন্যদের উৎসাহিত করার অভিপ্রায়ে।”
সম্মাননা পাওয়া রাজিয়া সুলতানা ২০১৪ সাল থেকে রোহিঙ্গা শিশু, নারী ও বালিকাদের নিয়ে কাজ করছেন। নির্যাতিতা নারীদের পুনর্বাসন এবং মানসিক নির্ভরতা দেওয়ার জন্য তিনি সক্রিয় রয়েছেন। নারী-শিশুদের লেখাপড়ার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।
‘ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশন’ নামের একটি সংগঠনের সমন্বয়কারী রাজিয়া সুলতানা। এই সংগঠনের আয়োজনে সম্প্রতি নিউ ইয়র্কের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে একটি সেমিনার হয়।
সম্মাননা নেওয়ার পর ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ স্মরণে একটি সমাবেশে অংশ নেন রাজিয়া সুলতানা।
জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মত নেতা থাকলে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের কেউ বিতাড়িত করতে পারত না। বঙ্গবন্ধুর সাহসী নেতৃত্বের কারণেই বাঙালিরা আজ স্বাধীন একটি ভূখণ্ড পেয়েছেন।”
‘উইমেন অব কারেজ’ সম্মাননা পাওয়া বাকিরা হলেন- মিয়ানমারের নাও কনিয়া পাও, জিবুতির মোমিনা হুসেইন দারার, মিশরের মামা ম্যাগি, জর্ডানের কর্নেল খালিদা খালাফ হান্না আল তাল, আয়ারল্যান্ডের সিস্টার ওরলা ট্রেসি, মন্টেনিগ্রোর ওলিভেরা ল্যাকিচ, পেরুর ফ্লোর ডি মারিয়া ভেগা জাপাতা, শ্রীলঙ্কার মারিনি দি লিভেরা ও তানজানিয়ার আন্না আলোয়স হেঙ্গা।
২০০৭ সালের মার্চে চালুর পর থেকে এ সম্মাননা পেয়েছেন ৬৫ দেশের ১২০ নারী। নিজ নিজ দেশের মার্কিন দূতাবাস থেকে একজন সাহসী নারীর মনোনয়ন দেওয়া হয়। চূড়ান্ত তালিকা করেন স্টেট ডিপার্টমেন্টের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |