শিশুর জীবন বাঁচিয়ে পুরস্কৃত আমিরাত-প্রবাসী

সংযুক্ত আরব আমিরাতে অগ্নিকাণ্ড কবলিত একটি দালানে আটকে পড়া তিন বছরের এক শিশুকে বাঁচিয়ে দেশটির বেসামরিক প্রতিরক্ষা অধিদপ্তরের সম্মাননা পেয়েছেন প্রবাসী এক বাংলাদেশি।

জাহাঙ্গীর কবীর বাপপি, সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Jan 2019, 12:49 PM
Updated : 16 Jan 2019, 12:49 PM

তার নাম মোহাম্মদ ফারুক ইসলাম (৫৬)। বাংলাদেশে তার বাড়ি চট্টগ্রাম রাউজান থানার কদলপু্রে লস্করদীঘি গ্রামের খলিফা পাড়া, তার বাবা প্রয়াত নুরুল হক পোস্টমাস্টার।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আজমান অঙ্গরাজ্যে ফারুক ইসলামের হাতে পদক ও সম্মাননা তুলে দেন দেশটির বেসামরিক প্রতিরক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

অগ্নিকাণ্ড কবলিত দালান

সম্মাননাপত্রে ফারুকের কাজকে ‘অসীম সাহসিকতা ও মানবিক অবদান’ বলে উল্লেখ করা হয়। 

বুধবার আরবভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘খালিজ টাইমস’ এ বাংলাদেশিকে নিয়ে শিরোনাম সংবাদ প্রকাশ করে। এছাড়া গালফ নিউজ, দ্য ন্যাশনাল, আল খালিজসহ অন্যান্য পত্রিকায় গুরুত্বের সঙ্গে উঠে আসে ফারুকের নাম।

ফারুক ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ঘটনাটি ঘটেছে রোববার মাগরিবের নামাজের একটু আগে আজমানের আল নুয়েইমিয়া-২ এলাকায় ।

উদ্ধারকৃত তিন বছরের পাকিস্তানি শিশু

ফারুক বলেন, “সেদিন অগ্নিকাণ্ড কবলিত আজমানের ভবনটির পাশে একটি মুদি দোকানে যাচ্ছিলাম। তখন ভবনটির তিন তলার সমান উঁচু জানালায় ভবনের বাসিন্দা এক পাকিস্তানি  নারীকে উর্দুতে আর্তনাদ করতে শুনি, তিনি তার ৩ বছরের শিশুপুত্রকে বাঁচানোর জন্য সাহায্য চাইছিলেন।”

ফারুক জানান, এসময় পথচারীদের কেউ তাতে সাড়া না দিয়ে তাকিয়ে ছিলো। তখন তিনি এগিয়ে গিয়ে হাত বাড়িয়ে দিলে ওই নারী উপর থেকে তার সন্তানকে ছুড়ে ফেলেন এবং ফারুক শিশুটির জীবন বাঁচান।

খালিজ টাইমস পত্রিকার সংবাদ

ফারুক বলেন, “বাচ্চার মা উপর থেকে বাচ্চা ছেড়ে দেন। গোলকিপার যেভাবে বল ধরেন সেভাবে সে আমার হাতে এসে পড়ে, আর বেঁচে যায়।”

শিশুপুত্রকে নিরাপদ দেখার পর ওই নারী নিজেও লাফ দেন এবং নিচে পার্ক করা একটি গাড়ির ওপর পড়ে গুরুতর আহতাবস্থায় বর্তমানে খালিফা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এ ঘটনার সময় মহিলার স্বামী মোহাম্মদ সাকিব তার অফিসে ছিলেন বলে জানা গেছে।

সম্মাননা পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় প্রবাসী শ্রমিক ফারুক বলেন, “লোকজনের মুখে শুনেছি পত্রিকায় আমার ছবি এসেছে, লোকজন আমাকে দেখতে আসছেন। বলছেন, অনেক ভালো কাজ করেছি। ভালো লাগছে। তবে তার চেয়ে বেশি ভালো লাগছে বাচ্চাটাকে বাঁচাতে পেরেছি।”

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!