গোড়াতে গত ১ অগাস্ট থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দেশটিতে চলা ৩ মাসব্যাপী অ্যামনেস্টি বা সাধারণ ক্ষমার আওতায় দেশটিতে বসবাসরত বিভিন্ন দেশের অবৈধ অভিবাসীদের বিনা জেল জরিমানায় আমিরাত ত্যাগের কিংবা এখানে তাদের অবস্থান বৈধ করে নেওয়ার সুযোগ আসে, যা অনেকের মতো বাংলাদেশিদের জন্যও স্বস্তির সংবাদ হয়।
ধারণা করা হয় যে বৈধভাবে এদেশে এসে বিভিন্ন কারণে অবৈধ হয়ে পড়া বাংলাদেশিদের সংখ্যা মোট জনশক্তির ১০ শতাংশ।
এ প্রসঙ্গে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান বলেন, “এককভাবে আমাদের দেশের অবৈধ অভিবাসীর সংখ্যা ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলংকা, ফিলিপাইনসহ আমিরাতে বসবাসকারী বিভিন্ন দেশের মোট অভিবাসীদের চেয়েও বেশি।”
সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রথম দিন থেকে আবুধাবি দূতাবাসে ২-৩ হাজার সেবাপ্রত্যাশী এবং দুবাই কনসুলেটে তার দ্বিগুণ সংখ্যক প্রবাসী ভিড় করতে থাকেন নানা সমস্যা নিয়ে। দূতাবাস তাদের নিয়মিত কনসুলার সার্ভিসের পাশাপাশি এ বিশাল সেবাপ্রত্যাশীদের চাপ মোকাবেলায় ছুটির দিনসহ প্রতিদিন ১০/১২ ঘণ্টা করে কাজ করেও পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে থাকে।
তাছাড়া স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে প্রকৃত অর্থে সাধারণ ক্ষমা সংক্রান্ত কাজে সমন্বয় সৃষ্টিতে হয় কিছুটা কালক্ষেপণ। আমিরাত প্রান্তে সবকিছু খানিকটা শৃঙ্খলায় ফিরে এলেও বাংলাদেশ প্রান্তে পুলিশ ভেরিফিকেশন পাওয়াসহ পাসপোর্ট অফিসের নানা জটিলতায় শ্লথ হয়ে পড়ে কাজের গতি। তাতে সাধারণ ক্ষমা প্রত্যাশীদের মধ্যে নেমে আসে হতাশা।
সাধারণ ক্ষমার নির্ধারিত তিন মাস সময়ের মধ্যে প্রবাসীরা তাদের পাসপোর্ট পাবেন কিনা সে বিষয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। এসময় রাষ্ট্রদূতের প্রচেষ্টায় আমিরাত সরকার সাধারণ ক্ষমার মেয়াদ পরপর দুইমাস বাড়াতে রাজি হলে স্বস্তি ফিরে পান প্রবাসী বাংলাদেশিরা। আগামী ৩১ ডিসেম্বর সাধারণ ক্ষমার মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে।
তিনি প্রবাসীদের সতর্ক করে জানান, তারা যেন তাদের দেওয়া ৬ মাসের জব-সিকার্স ভিসা নিয়ে বসে না থাকেন। কারণ এই ভিসার মেয়াদ শেষ হলে তারা বৈধ হবার আর কোনো সুযোগই পাবেন না।
সাধারণ ক্ষমার মেয়াদ শেষ হলে আমিরাত সরকার অবৈধদের জেল জরিমানাসহ দেশের আইনানুযায়ী কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বারবার ঘোষণা করেছে। ভুল নাম ও ভুল তথ্য দেওয়াসহ বিভিন্ন কারণে যাদের পাসপোর্টের আবেদনের নিষ্পত্তি হয়নি রাষ্ট্রদূত তাদের আগামী ২৯ ডিসেম্বর সকাল ১০টা থেকে ১২টার মধ্যে দূতাবাস কিংবা দুবাই কনসুলেটে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন।
তিনি বলেন, “আমরা তাদের সমস্যা শুনবো এবং তা নথিভুক্ত করে সমাধানের ব্যবস্থা নেবো। আমাদের ধারণা দুই মিশন মিলে সর্বোচ্চ এক-দুইশ পাসপোর্টের সমস্যা থাকতে পারে, এর বেশি নয়। সরকারের দিক থেকেও আমরা পূর্ণ সহযোগিতা পাচ্ছি। বুধবার রাতে যে পাসপোর্ট ছাপা হয়েছে আমরা আজ বৃহস্পতিবার হাতে পেয়েছি।”
ভ্রমণভিসায় এসে যারা অবৈধ হয়েছেন তাদের ব্যাপারে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান বলেন, “আমরা যেন এদেশের আইনের পরিপন্থী কাজ না করি। ভ্রমণভিসায় আসবেন না, এলে তার মেয়াদ শেষ হলে চলে যাবেন, কাজের ভিসায় এসে দেশে বৈধভাবে থাকবেন।”
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |