বিজয় দিবসে সিডনিতে মেলা অনুষ্ঠিত

অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে বিজয় দিবস উপলক্ষে স্থানীয় প্রবাসীদের সংগঠন আমরা বাংলাদেশী।

নাইম আবদুল্লাহ, সিডনি প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Dec 2018, 02:33 PM
Updated : 20 Dec 2018, 02:33 PM

স্থানীয় সময় রোববার সিডনির ওয়ালি পার্কে ওই মেলার আয়োজন করে, যার প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিল অস্ট্রেলিয়ার গৃহ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান মিউচুয়াল হোমস।

সন্ধ্যার আগেই  ওয়ালি পার্ক লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। ঝালমুড়ি, চানাচুর, ফুচকা-চটপটি, বিরিয়ানি, দেশিয় কাবাব, মোগলাই পরোটা, আখের রসসহ স্টলগুলোতে নানা বাঙালি খাবারের পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন সিডনির প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

মেলায় সপরিবারে আসা স্বপন ইসলাম জানান, দেশিয় সংস্কৃতির সঙ্গে সন্তানদেরকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার এক বড় সুযোগ এই মেলা। বিদেশ বিভুঁইয়ে আপন সংস্কৃতিকে ধারণ করে একটা দিন কাটানো যায় এই মেলায়।

এছাড়াও মেলায় ভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতির মানুষের পদচারণাও ছিল উল্লেখযোগ্য।

বিকাল সাড়ে ৪টা  সামহা, আদি, ফুয়াদ এবং সংগীতার সঞ্চালনায় আলিয়া ও রুহাবের কোরআন তেলওয়াতের মধ্য দিয়ে মেলার কার্যক্রম শুরুর পর  বাংলাদেশ ও  অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সংগীত বাজানো হয়।

স্থানীয় শিশু কিশোর ও  শিল্পীদের সংগীতের পর পরিবেশিত হয় নৃত্য, ফোক ও ব্যান্ড সংগীত। বাড়তি আকর্ষণ হিসাবে ছিল সিডনি প্রবাসী স্থানীয় ব্যান্ডদলের পরিবেশনায় বাংলাদেশের প্রয়াত বরেণ্য সংগীতশিল্পীদের স্মরণে তাদেরই রেখে যাওয়া কিছু অমর গান নিয়ে সাজানো অনুষ্ঠান 'হারানো কিংবদন্তির প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য'

ছোট্টসোনামণিদের জন্য ছিল চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, ‘এসো বিজয় রঙে আঁকি’। সেরা চিত্রাঙ্কনকারীদের পুরস্কারের পাশাপাশি অংশগ্রহণকারী সকল শিশুদেরকে সনদপত্র ও পুরস্কার দেওয়া হয়।

এছাড়াও ছিল বড়দের  জন্য উন্মুক্ত পাবলিক আর্ট ও মেলা উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ‘এসো বিজয় সাজে সাজি’। মেলায় আউয়াল খানকে প্রবাসী সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য বিশেষ সম্মামনা দেওয়া হয়।

সন্ধ্যার আগে মঞ্চে আসেন নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যর মাল্টি কালচারাল মিনিস্টার  ‎র‍্যা উইলিয়াম, বিরোধী দলীয় উপনেতা ও এমপি প্যানি শার্প, সাবেক সিনেটর লি রিয়ানান, ওটলির সংসদ সদস্য মার্ক কুরি, ক্যান্টাবেরি ব্যাংকসটাউনের মেয়র কার্ল আসফুর, ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক এনাম হক,  কাউন্সেলর মাসুদ চৌধুরী, কাউন্সেলর শাহে জামান টিটো, ফেডারেল লেবার প্রার্থী ক্রিস গ্যামবিয়ান এবং প্রবীণ কমিউনিটি নেতা দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।

আয়োজক সংগঠন ‘আমরা বাংলাদেশী’-র পক্ষে শিবলী আব্দুল্লাহ, ইব্রাহিম খলিল মাসুদসহ অন্যান্য সদস্যরাও উপস্হিত ছিলেন।

মঞ্চে অতিথিরা  তিনজন বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধাকে 'বাংলা মেলা বিজয় সম্মাননা' দেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অনন্য অবদানের জন্য অস্ট্রেলিয়ার প্রয়াত রাজনীতিবিদ ফ্রেডা ব্রাউন এবং প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা  কাজী জাকির হাসানকে মরণোত্তর সম্মাননা দেওয়া হয়।

এছাড়া সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ, বাংলা সঙ্গীত, সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে বিশেষ অবদানের জন্য স্বাধীন বাংলার বেতার কেন্দ্রের অন্যতম সংগঠক আপেল মাহমুদকে সম্মাননা দেওয়া হয়।

মেলায়  গ্রাম বাংলার আদলে মেলার দুই প্রান্তে ছিল দুটি মঞ্চ। প্রথম মঞ্চের আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠান মালা ও  দ্বিতীয় মঞ্চে লোকগান, কবিতা, গল্প, কৌতুক পরিবেশন করা হয়। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশগ্রহন করে বাংলা হাব, কৃষ্টি, ঐক্যতান, কিশলয় কচিকাঁচা, ধূমকেতু, তান্ত্রিক, কার্নিশ, সৃষ্টি সংগঠন।

‘এসো বিজয় উল্লাসে মাতি' এই স্লোগান নিয়ে প্রতি ডিসেম্বরের মতো এবার ছিল বাংলা মেলার পঞ্চম আয়োজন। 

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!