আন্দোলন থেকে চিত্রনায়ক, তারপর আবার রাজনীতিতে ফিরে সংসদ সদস্য- সেই আকবর খান পাঠান ফারুকের জন্য শোক প্রস্তাব গৃহীত হল সংসদে।
বুধবার সংসদের বাজেট অধিবেশনের শুরুতেই ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য ফারুকের মৃত্যুতে আনা শোক প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়।
তার আগে সংসদে উত্থাপিত শোক প্রস্তাবের উপর আলোচনা হয়। তাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনাসহ অন্যরা। পরে রেওয়াজ অনুযায়ী সংসদের বৈঠক মুলতবি করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত ফারুককে স্মরণ করে বলেন, “ফারুক ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে ছাত্রজীবনে আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে ভুমিকা রেখেছেন। নিষ্ঠা ও সাহসের সাথে প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে অবদান রেখেছেন।
“দুঃখজনক হচ্ছে আমরা একে একে সব মুক্তিযোদ্ধাদের হারিয়ে ফেলছি। তিনি এভাবে চলে যাবেন, তা কখনও ভাবিনি। আল্লাহ পরিবারকে এই শোক সইবার ক্ষমতা দিক।”
ফারুকের বহুমাত্রিক গুণের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “কেবল রাজনীতি নয়, আমাদের সাংস্কৃতিক জগতে তার অবদান রয়েছে। তার মৃত্যুতে সংস্কৃতি অঙ্গনে বিরাট ক্ষতি হয়েছে।
“প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে আমরা সাংস্কৃতিক কর্মীদের পাশে পেয়েছি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যখন তার নাম নিতেই কেউ যখন সাহস পাচ্ছিলেন না। তখন সাংস্কৃতিক কর্মীরা এগিয়ে এসেছিলেন। স্বাধীনতার চেতনাকে সামনে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে ফারুক ভূমিকা রেখেছেন।” প্রধানমন্ত্রীর নিজের দাদি সায়েরা খাতুন ১৯৭৪ সালের ৩১ মে মারা যান। তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তার জন্য সবার দোয়া চান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “আমার দাদি জন্ম দিয়েছিলেন আমার পিতা শেখ মুজিবুর রহমানকে। যিনি এনে দিয়েছেন আমাদের স্বাধীনতা। এজন্যই আজকে আমরা স্বাধীন জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছি।”
সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মো. কবীর হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ঐক্য ন্যাপের সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠন পঙ্কজ ভট্টাচার্য, পশ্চিমবঙ্গের কথাশিল্পী সমরেশ মজুমদার, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রোকিয়া আফজাল রহমান, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির মা রহিমা ওয়াদুদ,জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের পুত্রবধূ কল্যাণী কাজীর মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব আসে সংসদ।
পরে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত হয়। মোনাজাত পরিচালনা করে মাওলানা রুহুল আমিন মাদানী।
শোক প্রস্তাবের উপর অন্যদের মধ্যে সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের, আওয়ামী লীগের আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আসাদুজ্জামান নূর, হাবীব হাসান, মেহের আফরোজ, জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বক্তব্য রাখেন।