‘গণবিক্ষোভের’ হুঁশিয়ারি গণতন্ত্র মঞ্চের

গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাদের ভাষ্য, তাদের আন্দোলন সাত দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 August 2022, 10:20 AM
Updated : 11 August 2022, 10:20 AM

বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে ‘গণবিক্ষোভের’ মাধ্যমে ‘সরকার পতনের’ আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সাত দলের গণতন্ত্র মঞ্চ।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভে সমাবেশে এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন নবগঠিত প্ল্যাটফর্মটির নেতারা।

গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, আন্দোলন ‘সকল জনগণের’। এই আন্দোলন সাত দলের সীমাবদ্ধ থাকবে না।

“বাংলাদেশে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে বৃহত্তর ঐক্যের মাধ্যমে রাজপথে গণবিক্ষোভ, গণবিস্ফোরণ ঘটিয়ে এই স্বৈরাচারকে হটাতে হবে।”

তেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে পরিবহন ভাড়াসহ সব জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “দেশে সরকার নেই, এখন সার্কাস আছে ক্ষমতায়। সরকার সিন্ডিকেটের হাতে চলে গেছে। কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টের তালিকা দেখেন। কারা মালিক? তালিকা দেখলে বোঝা যাবে, কারা এরা? তারা সরকারের কোলের মধ্যে বসে আছে।

“জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করে যাদেরকে লাভ দেওয়া হচ্ছে তারা কারা? তারা সিন্ডিকেটের লোকজন, সরকারের কোলে ওরা মধ্যে বসে আছে। এখন আবার শোনা যাচ্ছে গ্যাস ও পানির দাম আবার বৃদ্ধি করবে।”

রব বলেন, “আসলে অবস্থা খুব খারাপ, বেসামাল। এখন ওরা (সরকার) বিছানা থেকে উঠতে পারছে না।”

জেএসডি, নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনকে নিয়ে গঠিত এই ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ গত সোমবার আত্মপ্রকাশ করে।

জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়ে বৃহস্পতিবারের এই বিক্ষোভ-সমাবেশে জেএসডির সভাপতি বলেন, “গণতন্ত্র মঞ্চ নিয়ে সরকার দুঃস্বপ্ন দেখছে। আমি বলতে চাই, এই মঞ্চে যারা নেতৃবৃন্দ আছেন তাদের জীবনে আপস করার কোনো ইতিহাস নেই।”

তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতা আসে তখনই দুর্ভিক্ষ আসে, ১০ টাকার চালের মূল্য ৫০ টাকা হয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে রক্ষীবাহিনী আসে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে হেলমেট বাহিনী আসে।

“আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে গুপ্ত হত্যা বাড়ে, গুম-অপহরণ বাড়ে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে গণতন্ত্রকে হত্যা করে একদলীয় শাসন কায়েম করে।”

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, “শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টকে পালিয়ে যেতে হয়েছে। আপনারা কীভাবে যাবেন, দেখেন। আমি সাবধান করছি- আকাশ পথে, জলপথে, স্থল পথে যারা দায়িত্ব আছেন, যারা ১৪ বছর জনগণের ওপর অত্যাচার করেছে শোষণ করেছে, দুর্নীতি করেছে, মিথ্যা মামলা দিয়েছে, গুম করেছে তাদেরকে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে দেবেন না। তাহলে জাতি আপনাদের ক্ষমা করবে না।”

রব বলেন, “এই লড়াইয়ে শুধু সরকার বদল নয়, শাসন ব্যবস্থা ও সংবিধান সংস্কার করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জনগণের হাতে ক্ষমতা দিতে হবে। জবাবদিহিতার ব্যবস্থা করতে হবে।”

বিক্ষোভ সমাবেশে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, আকবর খান, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, আবুল হাসান রুবেল, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নূর, রাশেদ খান, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, ইমরান ইমন, জেএসডির তানিয়া রব, নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়সার বক্তব্য দেন।