আজমতের দুঃখ প্রকাশে সিইসি সন্তুষ্ট

গাজীপুর নিয়ে ইসির পদক্ষেপ অন্য সিটি করপোরেশনেও পরিস্থিতি সামাল দিতে কাজে দেবে বলে মনে করেন হাবিবুল আউয়াল।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 May 2023, 12:03 PM
Updated : 7 May 2023, 12:03 PM

গাজীপুরে ক্ষমতাসীন দলের মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খানের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের যে অভিযোগ উঠেছে, তাতে দুঃখ প্রকাশ করেই এদফা পার পেয়ে গেলেন তিনি।

ইসির তলব পেয়ে রোববার ঢাকায় নির্বাচন ভবনে উপস্থিত হন আজমত। আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজের বক্তব্য তুলে ধরে তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, ভবিষ্যতে আর এমন হবে না।

তার কথায় সন্তুষ্ট হয়ে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর প্রতিশ্রুতিতে আশ্বস্ত হয়েছেন তারা, এনিয়ে আপাতত আর এগোবেন না তারা।

আগামী ২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে। সেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লার বিরুদ্ধে মনোনয়নপত্র জমার সময় সদলবলে যাওয়া এবং তার পক্ষে স্থানীয় সংসদ সদস্য দুই মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর প্রচারে অংশ নেওয়ার অভিযোগ উঠে।

রিটার্নিং কর্মকর্তা সতর্ক করার পরও রাজধানীর পাশের নগরীর নির্বাচনের বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়ে ইসি আজমতকে তলব করে। কেন তার প্রার্থিতা বাতিল করা হবে না, সে ব্যাখ্যা চাওয়া হয় তার কাছে।

তলবের সেই আদেশ রোববার বেলা ৩টায় সিইসি ও অন্য নির্বাচন কমিশনারদের সামনে উপস্থিত হয়ে নিজের বক্তব্য দেন আজমত।

জ্ঞাতসারে বিধি লঙ্ঘন করিনি: আজমত

আধা ঘণ্টাকাল ইসির কাছে বক্তব্য তুলে ধরে বেরিয়ে আজমত সাংবাদিকদের বলেন, “আমার জ্ঞাতসারে আমি আচরণবিধি লঙ্ঘন করিনি। স্পষ্টভাবে কমিশনে বলেছি, ভবিষ্যতে আচরণবিধি ভঙ্গ হবে না। সে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।

“আমার বক্তব্য উনারা নিয়েছেন, তারপরে সিদ্ধান্ত নেবেন। যে সিদ্ধান্ত আসবে মেনে নেব। আমার অবস্থান তুলে ধরেছি।”

মনোনয়নপত্র জমার সময় পাঁচজনের বেশি লোক সঙ্গে নিয়ে যাননি দাবি করেন নৌকার মেয়র প্রার্থী।

তিনি বলেন, “এটা ঠিক নয়, মিছিল নিয়ে মনোনয়ন জমা দিইনি, স্লোগান দিইনি। আমি ৫ জন নিয়ে গিয়েছি, আপনারা (সাংবাদিক) ছিলেন কমপক্ষে দেড়শ’ জন।”

তার পক্ষে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর ভোট চাওয়া নিয়ে আজমত বলেন, “হয়ত অজ্ঞতার জন্য হতে পারে। এটা সিটি করপোরেশনের বাইরে। মন্ত্রীকে ডাকলে তা বলতে পারবেন।”

আমরা সন্তুষ্ট: সিইসি

সিইসি হাবিবুল আউয়াল আওয়ামী লীগ প্রার্থীর ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানান।

তিনি বলেন, “অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে উনি (আজমত ) দুঃখ প্রকাশ করেছেন। আগামীর বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ভুল কিছুটা অজ্ঞতাবশত হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের মতামত নিয়ে দুয়েকটা সভা হয়েছে সিটি এলাকার বাইরে।”

সিইসি বলেন, “উনার বক্তব্যে আমরা সন্তুষ্ট। আমাদের সাথে কো-অপারেট করে ভবিষ্যতে যাতে আচরণবিধি প্রতিপালিত হয়, সেটা সর্বোতভাবে চেষ্টা করবেন। আমরা শোডাউনকে বড় করে দেখেছি। উনি বলেছেন, যদি ভঙ্গ হয়ে থাকে উনি দুঃখিত, অনুতপ্ত।”

এনিয়ে তদন্ত আর এগোবে না বলে জানান তিনি।

গাজীপুর থেকে অন্যরাও শিখবে, আশা ইসির

শুধু গাজীপুরই নয়, জুনের মধ্যে আরও চারটি সিটি করপোরেশনে ভোট হবে। গাজীপুর নিয়ে ইসির পদক্ষেপ অন্য সিটি করপোরেশনেও পরিস্থিতি সামাল দিতে কাজে দেবে বলে মনে করেন সিইসি।

তিনি বলেন, “আমাদের পক্ষ থেকে যা যা করা দরকার, করছি। আশা করি, এটা একটা সচেতনতা সৃষ্টি করবে। আগামীতে যে পাঁচটি সিটি নির্বাচন রয়েছে, একটা এক্সাম্পল বাকিদের শিখতে সহায়তা করে।”

আচরণবিধি প্রতিপালনের নির্বাচনী সংস্কৃতি গড়ে তোলা ধীরে ধীরে গড়ে উঠবে বলে আশাবাদী সিইসি। সেজন্য সবার সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।

ইসির পদক্ষেপের বিষয়ে সিইসি জানান, ইতোমধ্যে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক, মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে সংসদ সদস্য, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের আচরণবিধি প্রতিপালনের বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিতে।

খুলনায় একটি রাজনৈতিক সমাবেশও দলের সহায়তায় রিটার্নিং কর্মকর্তা আটকে দিয়েছে বলে জানান সিইসি।

“রাজনৈতিক দল সহযোগিতা করছে। আমরা বিশ্বাস করি, এটা ইতিবাচক।”