নুরের গণ অধিকার পরিষদ আছে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে; আর জাতীয় পার্টি গত তিনটি নির্বাচনে অংশ নিয়েছে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করে।
Published : 25 Aug 2023, 11:11 PM
বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা গণঅধিকার পরিষদের একাংশের নেতা নুরুল হক নুর হঠাৎ কেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর কাছে ছুটে গিয়েছিলেন, সেই প্রশ্নের স্পষ্ট জবাব মেলেনি এক সপ্তাহেও।
আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে নানা সমীকরণের মধ্যে ওই বৈঠক রাজনীতিতে আলোচনা তৈরি করলেও দৃশ্যমান কোনো ফলাফলও দেখা যায়নি এই কয়দিনে।
গণঅধিকার পরিষদের নেতা আবু হানিফও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, সেই বৈঠকের পর কোনো অগ্রগতি নেই।
বরং জাতীয় পার্টিতে নেতৃত্বে দ্বন্দ্ব নিয়ে নাটকীয়তার পেছনে কারা এবং দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের ভারত সফরে কী হল, তা নিয়েই এখন আলোচনা।
এসব বিষয়ে খোলাসা করতে পারছে না দলের কেউ। জি এম কাদের বলেছেন, ভারতের অনুমতি ছাড়া মুখ খুলবেন না তিনি।
সরকার পতনে এক দফা দাবিতে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ কর্মসূচি পালন করা গণঅধিকার পরিষদ নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন পায়নি। ফলে তাদের পক্ষে অন্য দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ না হওয়া ছাড়া ভোটে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই।
এই বাস্তবতার মধ্যে গত ১৭ অগাস্ট দুপুরে ৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল নিয়ে জাতীয় পার্টির বনানী কার্যালয়ে যান নুরুল হক নুর। তিনি জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের সঙ্গে সাক্ষাতের পর মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর সঙ্গেও বৈঠক করেন।
সেই বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা- সেই প্রশ্নের সরাসরি জবাব দেননি নুর।
তিনি বলেন, “গণঅধিকার পরিষদ উদীয়মান রাজনৈতিক দল হিসেবে অন্যান্য দল, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপন করতে চায় এবং সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে আগামীর বাংলাদেশ নেতৃত্ব দিতে চায়।
“এর অংশ হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং বিভিন্ন জনের সঙ্গে আমরা বসি, তাদের অনুষ্ঠানে যাই এবং তারাও আমাদের অনুষ্ঠানে আসে।”
গণঅধিকার পরিষদ নেতা বলেন, “জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হলের ছাত্র, হল সংসদের ভিপিও ছিলেন। আমিও মুহসীন হলের শিক্ষার্থী ও ডাকসুর ভিপি ছিলাম। তাই আমাদের মধ্যে একটা পরিচয়ের জন্য, সৌজন্যতার জায়গা থেকে এই মিটিংটি হয়েছিল।”
ওই বৈঠক নতুন কোনো জোট গঠনের চেষ্টার অংশ ছিল কি না- জানতে চাইলে গণঅধিকার পরিষদ নেতা বলেন, “আমরা রাজনীতিবিদ, বসলে রাজনৈতিক আলোচনা হয়- দেশের চলমান পরিস্থিতি, রাজনৈতিক দলগুলো কে কী করছে, জাতীয় পার্টি আগামী রাজনীতি নিয়ে কী চিন্তাভাবনা করছে, আমরা গণঅধিকার পরিষদ কী চিন্তাভাবনা করছি, এগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে মোটামুটি।”
নুরের দলের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ বলেন, “কারও সঙ্গে আলোচনা করা মানেই তার সঙ্গে জোট করা বা তার সঙ্গে নির্বাচন করা বিষয়টা এমন নয়। আমরা শুরু থেকে বলে আসছি, বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচনের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এই সরকারকে সরিয়ে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করা।"
জাতীয় পাটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু অবশ্য এই বৈঠককে নিতান্তই ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ বলেছেন। জানিয়েছেন, নুর ফোন করে সময় চেয়েছিলেন, তারা আমন্ত্রণ জানাননি।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “নুরুল হক নুরের সঙ্গে আমার পরিচয় ছিল না। একদিন সে ফোন দিয়ে বলল, ‘আপনি মুহসীন হলের ছিলেন আর আমিও মুহসীন হলের’।
“তাই আমার সঙ্গে দেখা করতে চাইল। আমি পার্টি অফিসে আসতে বললে সেইদিন (১৭ অগাস্ট) আসে।”
আলোচনা কী নিয়ে, এই প্রশ্নে জাপা নেতা বলেন, “একসঙ্গে বসলে যে রকম গপ্পসপ্প হয়, সেদিনও তাই হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত হয়নি।”