বুধবার বিকালে মেডিকেল বোর্ড ফের বৈঠকে বসবে।
Published : 14 Jun 2023, 01:19 PM
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অবস্থা ‘স্থিতিশীল’ রয়েছে বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন।
তিনি বলেছেন, বুধবার বিকেলে মেডিকেল বোর্ড ফের বৈঠকে বসে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবে।
বুধবার সকালে বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরডটকমকে জাহিদ হোসেন বলেন, “ভর্তি যেদিন হয়েছিলেন, ওইদিনের তুলনায় উনার শারিরীর অবস্থা এখন পর্যন্ত স্থিতিশীল আছে।
“বোর্ডের সদস্যরা সার্বক্ষণিক উনার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছেন এবং প্রয়োজনীয় যেসব চিকিৎসা দরকার হচ্ছে সেটা উনারা ব্যবস্থা করছেন টাইম-টু-টাইম উনার শারীরিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করে।“
হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে সোমবার রাত দেড়টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসনকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা।
জাহিদ হোসেন বলেন, মঙ্গলবার রাতে চিকিৎসক অধ্যাপক সাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে দেখেন এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা করে ব্যবস্থাপত্র দেন।
“বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বর্তমানে যে চিকিৎসা চলছে, সেটাই চলবে। নতুন কিছু ওষুধ তারা যোগ করেছেন। আজ বিকালে মেডিকেল বোর্ড ফের বৈঠকে বসবে।“
লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবায়েদা রহমান এবং দেশের বাইরের কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও অনলাইনে মেডিকেল বোর্ডের বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন বলে জানান খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক।
তিনি বলেন, ছেলে তারেক রহমান এবং প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমানের স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথিও নিয়মিত খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর রাখছেন।
সর্বশেষ গত ২৯ এপ্রিল নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া। সেবারে পাঁচ দিন পর তিনি মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে বাসায় ফিরেছিলেন।
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি জটিলতা ও লিভারের রোগ, হৃদরোগে ভুগছেন।
২০২১ সালের এপ্রিলে কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে কয়েকবার নানা অসুস্থতা নিয়ে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছিল।
গত বছর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তার পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ ও লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজা নিয়ে কারাগারে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। ওই বছরের অক্টোবরে হাই কোর্টে আপিল শুনানি শেষে সাজা বেড়ে হয় ১০ বছর।
এরপর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও আরও সাত বছরের সাজা হয় বিএনপি নেত্রীর। তিনি তখনও পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন সড়কের কারাগারে ছিলেন।
দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর পরিবারের আবেদনে ২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করে খালেদার দণ্ড স্থগিত করেন ছয় মাসের জন্য।
ওই বছরের ২৫ মার্চ খালেদা জিয়া মুক্তি পাওয়ার পর থেকে গুলশানে তার বাড়িতে রয়েছেন। প্রতি ছয় মাস পরপর তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে পরিবারের আবেদনে।