বিএনপিকে ২৬ শর্তে সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশের অনুমতি

১০ ডিসেম্বর দুপুর ১২টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টার মধ্যে সমাবেশ শেষ করতে বলা হয়েছে বিএনপিকে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Nov 2022, 12:16 PM
Updated : 29 Nov 2022, 12:16 PM

বিএনপি নয়াপল্টন চাইলেও ‘সড়কে যানজটের কথা বিবেচনায়’ নিয়ে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তাদের বিভাগীয় সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে মহানগর পুলিশ।

উপ কমিশনার (সদর দপ্তর) আব্দুল মোমেন স্বাক্ষরিত ওই অনুমতিপত্রে ২৬টি শর্ত জুড়ে দিয়ে ১০ ডিসেম্বর দুপুর ১২টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টার মধ্যে সমাবেশ শেষ করতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে এ অনুমতিপত্র দিয়ে অসেন পল্টন থানার ওসি সালাউদ্দিন মিয়া।

তবে বিএনপি নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে দুই দফা আবেদন করেছিল। পুলিশ তাতে সায় না দিলেও বিএনপি নেতারা নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে অনড় অবস্থানে থাকার কথা গত কয়েক দিন ধরে বলে আসছিলেন। এখন অনুমতিপত্র পাওয়ার পর বিএনপির অবস্থান কী হবে, সে বিষয়ে দলটির তরফে কিছু জানানো হয়নি।

মহানগর পুলিশের অনুমতিপত্রে বলা হয়েছে, “বিএনপির আবেদনের প্রেক্ষিতে নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের বিপরীতে গণসমাবেশ করলে যানজট ও নাগরিক দুর্ভোগ সৃষ্টি হবে। বিধায় উক্ত স্থানের পরিবর্তে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১০ ডিসেম্বর বেলা ১২টা হতে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বিএনপিকে সমাবেশ করার অনুমতি প্রদান করা হল।”

অনুমতিপত্রে ২৬টি শর্ত দিয়ে বলা হয়েছে, শর্তাবলী পালন না করলে তাৎক্ষণিকভাবে এই অনুমতির আদেশ বাতিল বলে গণ্য হবে। কোনো কারণ ছাড়াই এই অনুমতিপত্র বাতিল করার ক্ষমতা রাখে ঢাকা মহানগর পুলিশ।

এর আগে গত শনিবার এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছিলেন, সরকার যে জায়গা ভালো বলে মনে করে, সেই জায়গারই অনুমতি দেবে।

পরে বৃহস্পতিবার তিনি বলেছিলেন, বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দিতে পুলিশকে বলেছেন তিনি।

Also Read: বিএনপি চায় নয়া পল্টন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেখালেন সোহরাওয়ার্দী

Also Read: সোহরাওয়ার্দী পর্যন্ত এসেছেন, তখন নয়া পল্টনেও আসবেন: মোশাররফ

যেসব শর্তে অনুমতি

  • এই অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়, স্থান ব্যবহারের জন্য অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে।

  • স্থান ব্যবহারের অনুমতিপত্রের উল্লেখিত শর্তাবলি যথাযথভাবে পালন করতে হবে।

  • সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতরে সমাবেশের যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।

  • নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক (দৃশ্যমান আইডি কার্ডসহ) নিয়োগ করতে হবে।

  • স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী, নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলের ভেতরে ও বাইরে উন্নত রেজুলেশন সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে।

  • নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় প্রতিটি প্রবেশ গেটে আর্চওয়ে স্থাপন করতে হবে এবং সমাবেশস্থলে আগতদের হ্যান্ডমেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে চেকিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

  • নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভেহিকল স্ক্যানারের মাধ্যমে সমাবেশস্থলে আসা সব যানবাহন তল্লাশির ব্যবস্থা করতে হবে।

  • নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রাখতে হবে।

  • সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে ও আশপাশে মাইক ব্যবহার করা যাবে না।

  • সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রজেক্টর স্থাপন করা যাবে না।

  • সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে, রাস্তায় বা ফুটপাতে কোথাও লোক সমবেত হওয়া যাবে না।

  • আজান, নামাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় সংবেদনশীল সময় মাইক ব্যবহার করা যাবে না।

  • ধর্মীয় অনুভূতির ওপর আঘাত আসতে পারে- এমন কোনো বিষয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন, বক্তব্য প্রদান বা প্রচার করা যাবে না।

  • অনুমতি দেওয়া সময়ের মধ্যে সমাবেশের কার্যক্রম শেষ করতে হবে।

  • সমাবেশ শুরুর দুই ঘণ্টা আগে লোকজন সমবেত হওয়ার জন্য আসতে পারবে।

  • সমাবেশস্থলের আশপাশসহ রাস্তায় কোনো অবস্থায় সমবেত হওয়া কিংবা যান ও মানুষ চলাচলে প্রতিবন্ধকতা করা যাবে না।

  • পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুন-বহনের আড়ালে কোনো ধরনের লাঠি, রড ব্যবহার করা যাবে না।

  • আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থি ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়- এমন কোনো কার্যকলাপ করা যাবে না।

  • রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কার্যকলাপ ও বক্তব্য দেওয়া যাবে না।

  • উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান বা প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না।

  • মিছিল সহকারে সমাবেশস্থলে আসা যাবে না।

  • নির্ধারিত স্থানে গাড়ি পার্কিং করতে হবে, মূল সড়কে কোনো পার্কিং করা যাবে না।

  • সমাবেশস্থলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হলে আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে।

  • স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করে সমাবেশ করতে হবে।