বাজারে গিয়ে দেখেন মানুষ কত গালি দেয়: মোশাররফ

“মুরগি, ইলিশ মাছ, রুই মাছ ভাগ করে বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে। তারপরেও সরকার বলছে, দেশে নাকি খাদ্যপণ্য পর্যাপ্ত মজুদ আছে। কী পরিমাণ চাপাবাজি করছে ওরা!”

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 March 2023, 10:34 AM
Updated : 13 March 2023, 10:34 AM

যারা সরকারে আছেন, তাদেরকে বাজারে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

তার দাবি, নিত্যপণ্যের দরের কারণে মানুষ সরকারকে ‘গালাগাল করে’। বাজারে গেলে ক্ষমতাসীনরা তা চাক্ষুষ করতে পারবে।

সোমবার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে কথা বলছিলেন মোশাররফ।

নিত্যপণ্যের বাজারদরের বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘জিনিসপত্রের দাম হু হু করে বাড়ছে। রমজানের মাসে কীভাবে চলবে মানুষ, দিশেহারা।

“চিনির দাম কোথায় থেকে এসেছে এখন? ১২০ টাকার উপনীত হয়েছে, গরুর মাংস আটশ টাকার উপরে, লবণের দাম ৪২ টাকার উপরে, ব্রয়লার মুরগি ১২০ থেকে ১৪০ টাকা ছিল, এখন এটার কত দাম?

“বাজারে গিয়ে দেখুন মানুষ সরকারকে কী পরিমাণ গালাগালি করে।”

মুরগি, মাছ কেটে বিক্রি করা নিয়েও কথা বলেন মোশাররফ। তিনি বলেন, “মুরগি, ইলিশ মাছ, রুই মাছ কেটে একশ, দুইশ বা আড়াইশ গ্রাম ভাগ করে বিক্রি করার রেওয়াজ এ দেশে ছিল না। আজকে কাঁচাবাজারে মুরগি, ইলিশ মাছ, রুই মাছ ভাগ করে বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে। তারপরেও সরকার বলছে, দেশে নাকি খাদ্যপণ্য পর্যাপ্ত মজুদ আছে। কী পরিমাণ চাপাবাজি করছে ওরা!”

রোববার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বৈঠকে দেশে নিত্যপণ্যের পর্যাপ্ত মজুত থাকার বিষয়ে যে বক্তব্য এসেছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন খন্দকার মোশাররফ। তিনি বলেন, “দেশে নাকি খাদ্যপণ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মজুদ পর্যাপ্ত আছে… জনগণকে বলেছে আতঙ্কিত হয়ে বেশি কেনাকাটা না করতে।

“কিন্তু বাজারের অবস্থা কী আপনারা জানেন? আমরা জানতে চাই, এত খাদ্যপণ্য মজুদ থাকলে দাম বাড়ছে কেন? সরকার সুস্পষ্টভাবে তার ব্যাখ্যা জনগণকে দিক।”

বিএনপি নেতার অভিযোগ, সরকারের যারা মদদপুষ্ট ব্যবসায়ীদের ‘সিন্ডিকেটের কারণেই’ জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে।

তিনি বলেন, “সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মেগা প্রজেক্ট করার কারণে, মেগা দুর্নীতি-লুটপাটের কারণে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি হচ্ছে। এই লুটপাটের কারণে দেশের অর্থনীতি আজকে ধ্বংসের কিনারায় এসে দাঁড়িয়েছে।”

‘বিএনপি না গেলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না’

আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ নিয়েও কথা বলেন মোশাররফ।

তিনি বলেন, “বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে যদি এদেশে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে, তবে সেটা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে না, হতে পারে না।

“আগের নির্বাচনে ভোট ডাকাতি করেছে, এর আগে বয়কটের নির্বাচন করেছে। কিন্তু এগুলোকে আন্তর্জাতিক মহল নির্বাচন মনে করে না। সেজন্য কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছে।”

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ বিএনপির ১০ দফার আন্দোলনেই সরকারে পরিবর্তন আসবে বলেও মনে করেন মোশাররফ। এই আন্দোলনে পেশাজীবীদের আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।

জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জিয়া পরিষদের অধ্যাপক লুৎফুর রহমান, অধ্যাপক আবদুল লতিফ, অধ্যাপক ইয়ারুল কবির, অধ্যাপক এমতাজ হোসেন, অধ্যাপক শামসুল আলম, মাহফুজুর রহমান ফরহাদ, আবদুল্লাহহিল মাসুদ, রুহুল আলম, আখতার হোসেন, মোহাম্মদ আলী, সাইদুর রহমান মিহিরও এ সময় বক্তব্য রাখেন।