ইসি নিয়োগের আইন আরেক ‘তামাশা’: খন্দকার মোশাররফ

রাষ্ট্রপতির সংলাপের পর নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে আইন প্রণয়নের উদ্যোগকে আরেক ‘তামাশা’ বলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Jan 2022, 10:14 AM
Updated : 22 Jan 2022, 10:14 AM

তিনি বলেছেন, জনগণকে বিভ্রান্ত করতেই নির্বাচন কমিশন গঠনে সরকারের প্রণীত খসড়া বিলটি সংসদে উত্থাপন করা হচ্ছে।

খন্দকার মোশাররফ শনিবার এক আলোচনা সভায় বলেন, “যারা গায়ের জোরে সরকার, যারা জনগণের সরকার নয়, তারা একটা আইন পাস করবে। তারপরে কী করবে?

“ওই আইন মোতাবেক একটি সার্চ কমিটি করতে হবে। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী যে লিস্টা দেবেন, ওই সার্চ কমিটি সেই লিস্টটা প্রেসিডেন্টকে দেবেন, প্রেসিডেন্ট সেটা ঘোষণা করবেন।”

“এটা আরেকটা তামাশা জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য। এর আাগে সরকার রাষ্ট্রপতিকে দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপ করিয়ে নাটক করেছে, তামাশা করেছে,” বলেন তিনি।

আইন না থাকায় প্রতিবারই ইসি নিয়োগে বিতর্ক দেখা দেয়। এবার নিয়োগের উদ্যোগে রাষ্ট্রপতির সংলাপে অধিকাংশ দলই সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়নের দাবি জানায়।

এরপর গত সোমবার মন্ত্রিসভায় সেই আইনের খসড়া অনুমোদনের পর রোববার সংসদে তোলা হচ্ছে।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, “আমরা অনেক আগেই ঘোষণা দিয়েছি যে, এই অবৈধ এবং ফ্যাসিস্ট সরকারের অধীনে আর কখনও কোনোদিন নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে না।

“কেননা এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে না। অতীতে দুইটি নির্বাচন কমিশন সেটার প্রমাণ রেখে গেছে।”

এই অবস্থা থেকে উত্তরণে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরানোর বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেন এই বিএনপি নেতা।

এজন্য সব দলকে এক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “কোনো স্বৈরাচারী সরকার নিজের ইচ্ছায় সরে যায় না। তাকে হয় গণআন্দোলনে অথবা এমন পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে, তারা পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। সেই কাজটি আমাদের করতে হবে এক হয়ে।”

জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে জিয়াউর রহমানের ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এই আলোচনা সভা হয়।

সভায় ফাউন্ডেশনের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে একটি স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধান অতিথি খন্দকার মোশাররফ।

‘নিষেধাজ্ঞা সরকারের জন্য সর্তকবার্তা’

খন্দকার মোশাররফ হোসেন, “আজকে আন্তর্জাতিকভাবে যে স্যাংশন (নিষেধাজ্ঞা) আসছে, এটা কিন্তু বিশাল একটা ওয়ার্নিং বাংলাদেশের সরকারের প্রতি। এই সরকার গায়ে নিচ্ছে না। এখন শুধু স্যাংশন নয়, আপনারা শুনেছেন এর ধারাবাহিকতায় ১২টি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মানবাধিকার সংগঠন চিঠি দিয়ে জাতিসংঘকে বলেছে যে, বাংলাদেশের র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ানকে (র‌্যাব) যাতে শান্তিমিশনে নেওয়া না হয় এবং যারা আছে তাদেরকে বের করে দেওয়া হয়।

“আজকে পত্রিকায় আছে, জাতিসংঘ সেই চিঠিকে কগনিজেন্সে নিয়েছে অর্থাৎ সেটাকে গ্রহণ করেছে এবং তারা বলেছে যে, এই ব্যাপারে তদন্ত করে তারা ব্যবস্থা নেবে। আপনারা বুঝতে পারছে যে, কিভাবে আন্তর্জাতিকভাবে তাদের চতুর্দিক থেকে ওয়ার্নিং দেওয়া হচ্ছে। আমার মনে হয়, ক্ষমতার দম্ভে অন্ধ হয়ে আজকে সরকার এটা বুঝতে পারছে না।”

জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে মাহবুব আলমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাইফুল ইসলাম ফিরোজ বক্তব্য রাখেন।