খালেদাকে বিদেশ পাঠাতে স্মারকলিপি: ‘গুরুত্ব দেবেন’ আইনমন্ত্রী

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Nov 2021, 11:00 AM
Updated : 23 Nov 2021, 11:00 AM

আইনমন্ত্রী বলেছেন,  আইনজীবীদের দেওয়া ওই স্মারকলিপি তিনি ‘গুরুত্ব দিয়ে’ দেখবেন।

মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে সচিবালয়ে আইনমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি দেন ১৫ জন আইনজীবী। পরে আইনমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সামনেই তাদের আলাপ হয়।

আইনমন্ত্রী বলেন, “আমি এটা নিয়ে একটু আলাপ-আলোচনা করি। তারপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর অবশ্যই... । আর ফাইল যেটা আমার সামনে, এটা আমি ডিসক্লোজ করিনি। তার কারণ আপনারা ২১ তারিখে বলেছিলেন আপনারা আসবেন।

“আমি যদি তার আগে ডিসক্লোজ করতাম, তাহলে আজ আলাপ-আলোচনার কিছুই থাকত না। আমি সেই জন্য ডিসক্লোজ করিনি। আপনাদের (আইনজীবী) কথা শোনার পর আমরা... করব।”

৭৬ বছর বয়সী বিএনপি চেয়ারপারসন বর্তমানে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হলেও সরকারের নির্বাহী আদেশে কারাগারের বাইরে রয়েছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।

বহু বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন খালেদা। চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিতে পরিবারের পক্ষ থেকে কয়েক দফা আবেদন করা হয়েছে।

তবে সরকার বলে আসছে, বিএনপি চেয়ারপারসন কারাগারে ফিরে আবেদন করলে তা বিবেচনা করা হবে। এখন যে অবস্থায় আছেন তাতে আবেদন নতুন করে বিবেচনার কোনো সুযোগ নেই।

স্মারকলিপি দেওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক মাহবুবউদ্দিন খোকন বলেন, “সাবেক প্রধানমন্ত্রী সাবেক বিরোধী দলীয় নেত্রী, বিএনপি চেয়ারপারসন এবং দেশের একজন জ্যেষ্ঠ নাগরিক গুরুতর অসুস্থ। তাকে দ্রুত বিদেশে নিতে পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে সরকারের কাছে। এই সংক্রান্ত আবেদনটি এখন আইন মন্ত্রণালয়ে আছে। আমরা বিষয়টা আমরা তু্লে ধরলাম। আমরা আমাদের কনসার্ন জানালাম।”

জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের আহবায়ক অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানের নেতৃত্বে স্মারকলিপি দেওয়ার সময় আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন, নীতাই রায় চৌধুরী, আহমেদ আজম খান, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, তৈমুর আলম খন্দকার, মো. বদরুদ্দোজা চৌধুরী, মো. রুহুল কুদ্দুস (কাজল), আবেদ রাজা, মো. আব্দুল জব্বার ভূঁইয়া, গাজী কামরুল ইসলাম সজল, মোহাম্মদ আলী এবং ওমর ফারুক ফারুকীও উপস্থিত ছিলেন।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, “আপনারা যে স্মারকলিপি দিয়েছেন সেটা আমি অবশ্যই পর্যালোচনা করব। তবে সিদ্ধান্ত ও মতামতের ব্যাপারে আলোচনার প্রয়োজন আছে। সেটা আমরা করব।”

তিনি বলেন, “আমি একটা কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, যখন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা হয় তখন কিন্তু উনার পরিবারের যে আবেদন, সেটা মানবিক দিক দিয়ে বিবেচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

“তখন কিন্তু কোনো দাবি তুলতে হয়নি, প্রধানমন্ত্রী নিজেই করেছেন। সেক্ষেত্রে মানবিকতার কমতি আমাদের নাই। আমরা মানবিকতা দেখাতে জানি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও মানবিকতা দেখাতে জানেন।”

আইনমন্ত্রী বলেন, “আমি আজকে স্মরকলিপি নিলাম। কিন্তু আজকে যদি প্রিম্যাচিউরড কিছু বলি সেটা সঠিক হবে না। আমাকে একটু সময় দিতে হবে। আমি এটা নিয়ে আলাপ-আলোচনা করব।

“কেউ জানে বেঁচে থাকুক, বা জানে বেঁচে না থাকুক- সেটা আমাদের উদ্দেশ্য না। বেগম জিয়ার চিকিৎসা হচ্ছে সেটা সকলেই জানেন। তাই আমি এটা নিয়ে একটু আলাপ-আলোচনা করি।”

আরও পড়ুন