বিএনপি নেতাদের কারণে খালেদাকে জেলে পাঠানোর দাবি উঠতে পারে: তথ্যমন্ত্রী

সরকার দ্বিতীয় দফায় খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করলেও বিএনপি নেতারা তার বিষয়ে যেভাবে বক্তব্য দিচ্ছেন, তাতে তাকে ফের কারাগারে পাঠানোর দাবি উঠতে পারে বলে সংশয় প্রকাশ করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Sept 2020, 08:50 AM
Updated : 20 Sept 2020, 10:50 AM

সচিবালয়ে রোববার এক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খালেদা জিয়ার সাজা দুই দফায় ছয় মাস করে স্থগিত করে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

দ্বিতীয় দফা ছয় মাস সাজা স্থগিত করা হলেও খালেদা জিয়াকে অন্তরীণ রাখা হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল আলমগীর। এনিয়ে একজন সাংবাদিক তথ্যমন্ত্রীর মন্তব্য চান।

জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, “মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য প্রচন্ড হাস্যকর। মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের মাধ্যমে এই প্রশ্নই আসে প্রধানমন্ত্রী তার যে ক্ষমতাবলে খালেদা জিয়াকে কারগার থেকে মুক্তি দিয়েছেন মির্জা ফখরুল যেভাবে কথাবার্তাগুলো বলছেন এবং তাদের অন্যান্য নেতারা যে কথাগুলো বলছেন এতে মনে হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী যে মহানুভবতা দেখিয়েছেন সেটি না দেখালেই ভালো হত।

“কারণ তিনি সাজাপ্রাপ্ত আসামি, তার তো কারাগারেই ভেতরেই থাকার কথা ছিল। তিনি আদালত থেকে তো জামিন পাননি। তাকে প্রধানমন্ত্রী প্রথমে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দিয়েছেন, পরে আরও ছয় মাস সেটি বর্ধিত করা হয়েছে। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন।”

হাছানের ভাষ্য, মির্জা আলমগীরের উচিত ছিল এই মহানুভবতার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানো, সেটির পরিবর্তে তিনি যে কথাবার্তাগুলো বলছেন বা তাদের অন্য নেতারা যে কথাবার্তাগুলো বলছেন এতে মনে হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী মহানুভবতা না দেখালেই বরং ভালো হত।

তিনি বলেন, “ভবিষ্যতে যখন প্রসঙ্গটি আসবে তখন জনগণের পক্ষ থেকে হয়ত বলা হতে পারে বা এখনই বলা হতে পারে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবসহ তাদের অন্যদের বক্তব্যর প্রেক্ষিতে তাকে আবার কারাগারে পাঠানো হোক এই দাবি উঠে কি না, সেটিই হচ্ছে বড় প্রশ্ন।”

দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সাজা ঢাকায় নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে এবং বিদেশ যেতে পারবেন না- এই দুই শর্তে আরও ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে গত ১৫ সেপ্টেম্বর আদেশ জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

হত্যার রাজনীতির মাধ্যমেই বিএনপির উন্মেষ দাবি করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান হত্যার রাজনীতির মাধ্যমেই ক্ষমতা দখল করে দল গঠন করেন। সেই ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার জন্য হাজার হাজার সেনাবাহিনীর জোয়ান-অফিসারদের হত্যা করা, আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছিল। খালেদা জিয়াও সেই হত্যার রাজনীতি অব্যাহত রেখেছেন।

“খালেদা জিয়ার অনুমোদনক্রমে এবং তার পুত্র তারেক রহমানের পরিচালনায় একুশে অগাস্ট গ্রেনেড হামলা পরিচালনা করা হয়েছিল শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্যেশে। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর হত্যার সঙ্গে যুক্ত ছিল। …হত্যার রাজনীতিটাই হচ্ছে তাদের মূল প্রতিপাদ্য বিষয়।”

তথ্যমন্ত্রী বলেন, হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফী আলেম সমাজের সর্বজন ব্যক্তিত্ব ছিলেন। এটি তার নামাজে জানাজায় প্রমাণ করেছে তিনি আলেমদের মধ্যে এবং ওই অঞ্চলে কী পরিমাণ জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন।

“তার এই হঠাৎ মৃত্যু নিয়ে অনেক কথা আছে। তিনি আগেও বহুবার এ রকম অসুস্থ্ হয়েছেন কিন্তু প্রতিবারেই তিনি সুস্থ হয়ে আবার মাদ্রাসায় ফিরে গেছেন।

“হাটহাজারী মাদ্রাসার ভেতরে যে বিশৃঙ্খলা সেটি হাটহাজারী মাদ্রাসার আভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু তিনি যেহেতু হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক ছিলেন, মাদ্রাসার ভেতরে তার উপস্থিতিতে যে বিশৃঙ্খলা সেটি নিশ্চয়ই তার উপর মানসিক চাপ তৈরি করেছিল।

“সেটির সাথে তার সুস্থ হয়ে ফিরে না যাওয়া সেটির সঙ্গে কোনো সম্পর্ক আছে কি না, সেটি আসলে ডাক্তাররা ভালো বলতে পারবেন। তবে নিশ্চয়ই তার উপর বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি যে কয়দিন ধরে চলেছে সেটিতে মানসিক চাপ তৈরি হওয়া মাদ্রাসার মহাপরিচালক হিসেবে সেটি স্বাভাবিক।”