সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের নামে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর সম্পত্তি লুটপাট করা হবে বলে দাবি করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
Published : 30 Jun 2020, 06:17 PM
ভারতের পাটকলগুলোর স্বার্থে বাংলাদেশে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো বন্ধ করা হচ্ছে কি না, মঙ্গলবার জোটের এক বিবৃতিতে সেই সন্দেহও প্রকাশ করা হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে লোকসানে থাকা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাটকলগুলোর ২৫ হাজার শ্রমিককে ‘গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের’ মাধ্যমে বিদায়ের সিদ্ধান্ত রোববার জানায় সরকার।
পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী জানিয়েছেন, এই পাটকলগুলো পরে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) মাধ্যমে পুনরায় চালু হবে।
মহামারীকালে চাকরি হারিয়ে খুলনার পাটকল শ্রমিকরা ইতোমধ্যে আন্দোলনে নেমেছেন।
পাটকল বন্ধের প্রতিবাত এবং আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে যুক্ত বিবৃতি দেন কামাল হোসেন, জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আবদুল মঈন খান, জেএসডির আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের রেজা কিবরিয়া,বিকল্পধারা বাংলাদেশের নুরুল আমিন ব্যাপারী।
বিবৃতিতে বলা হয়, “সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পাটকলগুলো পরবর্তী সময়ে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) আওতায় চলবে। সরকারের অতীত রেকর্ড থেকে এই আশঙ্কা করার খুবই যৌক্তিক কারণ আছে যে শেষ পর্যন্ত এই পাটকল এবং এর সব সম্পত্তি সরকারের ঘনিষ্ঠ কিছু ব্যক্তির হাতে তুলে দেওয়া হবে নামমাত্র মূল্যে।
“সরকারের এই সিদ্ধান্ত দেশের পাটকল শিল্পকে ধবংস করে পশ্চিম বাংলার মৃতপ্রায় পাটকল কারখানাগুলো চালু করার নীলনকশারও অংশবিশেষ বলে প্রতীয়মান হয়।”
পাটকলের লোকসান নিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, “সেটার জন্য শ্রমিকরা কোনোভাবে দায়ী নয়। রাষ্ট্রায়ত্ত আর সব খাতের মতো প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতি, অদক্ষতা ও অযোগ্যতার কারণেই এই শিল্পগুলো লোকসান হয়। সেই ব্যর্থতার মূল্য আজ দিতে হচ্ছে শ্রমিকদের।”
শ্রমিক দলের আশঙ্কা
রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে শ্রমিকদের বিদায়ের সরকারি সিদ্ধান্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক ছাঁটাইয়ে উৎসাহিত করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিএনপি সমর্থিত শ্রমিক সংগঠন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল।
মঙ্গলবার সংগঠনের সভাপতি আনোয়ার হোসেইন ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম খান নাসিম এক যৌথ বিবৃতিতে এই আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, “রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে প্রান্তিক শ্রেণির ২৫ হাজার শ্রমিক ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত মরার উপর খাঁড়ার ঘা। করোনার এই সময়ে এই ধরনের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ অমানবিক, মানবাধিকার পরিপন্থি ও গণদশমনী কাজ বলে আমরা মনে করি।
“জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল মনে করে সরকারি এই সিদ্ধান্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরিরত শ্রমিকদের ছাঁটাইয়ে উৎসাহ প্রদান করবে।”
শ্রমিক দলের নেতারা পাটকলগুলোতে লোকসানের জন্য দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করতে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের দাবি জানানো হয়।