অর্থমন্ত্রী-পাটমন্ত্রীকে দুষছে ওয়ার্কার্স পার্টি

কোভিড-১৯ মহামারীকালে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর ২৫ হাজার শ্রমিককে বিদায় করার সিদ্ধান্তে ক্ষোভ জানিয়ে এজন্য অর্থমন্ত্রী ও পাটমন্ত্রীকে দুষছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জোট শরিক ওয়ার্কার্স পার্টি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 June 2020, 02:10 PM
Updated : 28 June 2020, 02:10 PM

সরকার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর রোববার এক বিবৃতিতে দলটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেছেন, অর্থমন্ত্রী, পাটমন্ত্রী ও কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তার কারসাজিতে পাটশিল্পকে ‘লোকসানি’ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার পর এখন তা বন্ধের ‘পাঁয়তারা’ চলছে।

বিজেএমসির অধীনে থাকা ২৫টি পাটকলে লোকসান চলছে বহু বছর ধরে। প্রায় ২৫ হাজার পাটকল শ্রমিকের বেতনভাতা পরিশোধ করা হচ্ছিল সরকারি ভর্তুকির মাধ্যমে।

এই অবস্থায় এই পাটকলগুলোর শ্রমিকদের ‘গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের’ মাধ্যমে বিদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় বলেছেন, পরে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে পুনরায় এগুলো চালু করা হবে।

এই সিদ্ধান্তে বিস্ময় প্রকাশ করে মেনন-বাদশার বিবৃতিতে বলা হয়, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তার নির্বাচনী ওয়াদায় বন্ধ পাটকলগুলো খুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ক্ষমতায় এসে আদমজি ব্যতিত কয়েকটি বন্ধ কারখানা চালু করেছিলেন।

“কিন্তু বিশ্ব ব্যাংকের দোসর অর্থমন্ত্রী, বর্তমান পাটমন্ত্রী ও কতিপয় আমলার কারসাজিতে এই প্রতিশ্রুতিকে এগিয়ে নেওয়া যায়নি। তারা ষড়যন্ত্র করে লোকসানি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বন্ধ করার পাঁয়তারা করেছে। এটা বিএনপি-জামাত সরকারের গৃহীত নীতিমালারই অনুকরণ মাত্র।”

পাটকল পরিচালনা কেন্দ্র বিজেএমসির কঠোর সমালোচনা করেন মেনন ও বাদশা।

“বিজেএমসি’র মাথাভারী প্রশাসন, দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা, যারা পাটক্রয়ে দুর্নীতি, অনিয়ম করেছে, যারা মৌসুমে পাট সরবরাহ করেনি, যারা উৎপাদিত পাট পণ্য বিপননে কোনো ভূমিকা রাখেনি।”

পাটশিল্প লোকসানি প্রতিষ্ঠানে যাদের জন্য হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে শ্রমিকদের বিদায় করার বিরোধিতা করেন তারা।

“করোনার এই মহামারীর সময়ে সরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা ও শ্রমিকদের চাকরিচ্যুত করার ঘটনা ব্যক্তি মালিকানা খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে উৎসাহিত করে একইভাবে তিন গুণ শ্রমিক ছাঁটাই করবে; যা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়।”

বিবৃতিতে ওয়ার্কার্স পার্টির নেতারা পাটকলগুলোর আধুনিকানের আহ্বান জানিয়েছে সরকারের প্রতি।

তারা বলেন, “৫০ লাখ পাট চাষি, পাট শ্রমিক, পাট ব্যবসায়ীসহ প্রায় ৩ কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পাট শিল্পের সাথে যুক্ত।

“এ অবস্থায় পাটকল বন্ধ করার আজগুবি সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে পাটকলের পুরনো যন্ত্রাংশ বাতিল করে উন্নত প্রযুক্তির আধুনিক যন্ত্রাংশ সংযোজন করে পাটকলগুলোকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর ও চালু রাখার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”