ঢাকা দক্ষিণের ১৭০ কেন্দ্র দখলের ষড়যন্ত্রে বিএনপি: তাপস

গোপীবাগে সংঘর্ষে গুলির ঘটনায় অস্ত্রসহ এক বিএনপিকর্মীকে গ্রেপ্তারের কথা তুলে ধরে বিএনপির বিরুদ্ধে ভোটের দিন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৭০টি কেন্দ্র দখলের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী ফজলে নূর তাপস।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Jan 2020, 11:40 AM
Updated : 30 Jan 2020, 11:47 AM

শনিবার ভোট সামনে রেখে প্রচারের শেষ দিন বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই গোপীবাগ এলাকায় গণসংযোগ শুরু করার আগে এক পথসভায় এ অভিযোগ করেন তিনি।

নৌকার প্রার্থী তাপস বলেন, “আমি গতকাল লক্ষ করেছি যে, বিএনপি প্রার্থীর পিএস হিসেবে পরিচিত এক ব্যক্তি যিনি সেদিন গোলাগুলি করেছেন অস্ত্র দিয়ে অবৈধ দিয়ে গুলি ছুড়েছেন, সেই ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। এইভাবে সন্ত্রাসীরা যদি কোনো ভোটকেন্দ্র দখলের পাঁয়তারা করে তাহলে ভোটাররাসহ ঢাকাবাসী সেটা প্রতিহত করবে।”

গত রোববার দুপুরে গোপীবাগের সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজের মোড়ে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী ইশরাক হোসেনের কর্মীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর কর্মীদের সংঘর্ষে এক সাংবাদিকসহ ডজনখানেক মানুষ আহত হন। সে সময় গুলির ঘটনায় একটি পিস্তলসহ আরিফুল ইসলাম (৪৭) নামে ছাত্রদলের একজন সাবেক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন বলেছেন, “আমরা জানতে পারছি সে বিএনপির পার্থী ইশরাক হোসেনের পিএস বলে পরিচয় দিত। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আরিফুল সেদিন গুলি ছোড়ার কথা স্বীকারও করেছে।”

ঘটনাস্থলে পাওয়া গুলির খোসা এবং আরিফুলের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া পিস্তলের ক্যালিবার এবং ৫০ রাউন্ড গুলি একই ধরনের বলে জানান তিনি।

নির্বাচন ঘিরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে ঢাকাবাসীকে পরিত্রাণ দেওয়ার জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানান ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস।

তিনি বলেন, “আমরা কিছুটা শঙ্কিত, যদিও আমি আশা করব সকল ভোটার ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হবেন এবং তাদের ভোট প্রয়োগ করবেন। কয়েক দিন আগে আমরা অত্র এলাকায় দেখেছি যে, আমাদের কাউন্সিলর প্রার্থী রোকনউদ্দিনের ক্যাম্পে সেখানে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তিনি নিজে উপস্থিত হয়ে আক্রমণ করেছেন।

“আমরা এটাও খবর পেয়েছি, ১৭০টি কেন্দ্র দখলের একটা ষড়যন্ত্র ও পাঁয়তারা হচ্ছে। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অনুরোধ করব যাতে তারা আশু পদক্ষেপ নেয়, যাতে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকে। আমি বিশ্বাস করি, সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকলে নৌকার বিপুল ভোটে বিজয় হবে।”

প্রচারণার শেষ দিনে ঢাকাবাসীকে উন্নত ঢাকা গড়তে নৌকার পক্ষে রায় দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ফজলে নূর তাপস বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, ঢাকাবাসী ১ ফেব্রুয়ারি নৌকা মার্কায় আমাকেসহ কাউন্সিলর প্রার্থীদের নির্বাচিত করে তাদের সেবক হিসেবে দায়িত্ব দিয়ে উন্নত ঢাকার পক্ষে তারা রায় দেবেন।

“আমাদের উন্নয়নের রূপরেখা এবং নির্বাচনের যে ইশতেহার দিয়েছি, ঢাকাবাসী সেটা সাদরে গ্রহণ করেছে। আমরা স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া পাচ্ছি এবং ঢাকাবাসী অধীর আগ্রহে আছে ভোট দেওয়ার জন্য। উন্নত ঢাকা গড়ার লক্ষ্যে আমরা যে নবসূচনা ও নবযাত্রার প্রত্যয় নিয়ে নির্বাচনে নেমেছি সেটি শুরু করতে নৌকার বিপুল জয় উপহার দেবে।”

ঢাকাবাসীর উদ্দেশে তাপস বলেন, “আমাদের এই প্রাণের ঢাকা যে ঢাকাকে আমরা ভালোবাসি, স্বপ্ন দেখি, সেই ঢাকাকে উন্নত ঢাকা হিসেবে গড়ে তোলার এটাই সুযোগ। দলমত নির্বিশেষে আপনারা ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হবেন এবং আপনাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে একজন যোগ্য ব্যক্তিকে আপনাদের সেবক হিসেবে নির্বাচিত করবেন। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে উন্নত ঢাকা গড়ার লক্ষ্যে আপনাদের রায় প্রদান করবেন।”

ফজলে নূর তাপস বলেন, “আপনাদের প্রত্যেকটি ভোট আমাকে ও আমাদের কাউন্সিলরদের শক্তি সঞ্চয় করবে, যা থেকে সকল প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করে উন্নত ঢাকা গড়ার লক্ষ্যে সততা, নিষ্ঠা ও একাগ্রতায় নিবেদিত হয়ে আমরা কাজ করব।”

এর আগে গোপীবাগের ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবের কাছে পৌঁছালে নেতাকর্মীরা ফুল দিয়ে স্লোগানে স্লোগানে ফজলে

নূর তাপসকে অভ্যর্থনা জানান। পরে নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে প্রচারণায় যোগ দেন তিনি।

এ সময় ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, যুবলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ মহি, স্বেচ্ছাসেবক লীগ দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক তারিক সাঈদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।