ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরুদ্ধে যৌথ প্রতিবাদ চান মান্না

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে যেসব চুক্তি হয়েছে, সেগুলোকে ‘স্বার্থবিরোধী’ আখ্যায়িত করে তা বাতিলের দাবি নিয়ে মাঠে নামার কথা জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Oct 2019, 01:16 PM
Updated : 7 Oct 2019, 01:16 PM

সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমরা মনে করি, জনগণকে সংঘবদ্ধ করে এটা (চুক্তি) বাতিল করবার জন্য দাবি তোলা উচিত।

“এটা আমরা নাগরিক ঐক্যের পক্ষ থেকে বলছি না, আমরা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কাছে বিষয়টা প্লেস করব। আমরা চাই যে, যৌথভাবে প্রতিবাদ হোক, প্রতিরোধ হোক। যদিও এটা সংসদ নয়, তারপরেও রেটিফিকেশনের একটা প্রশ্ন আছে, আমরা সেটার বিপক্ষেও বলব।”

শনিবার দিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর সাতটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। ফেনী নদীর পানি প্রত্যাহার, বন্দর ব্যবহার ও গ্যাস বিক্রি নিয়ে এসব চুক্তি ভারতের পক্ষে গেছে বলে অভিযোগ করে আসছেন ঐক্যফ্রন্টের আরেক শরিক বিএনপি নেতারা।

মান্না বলেন, “বছরের পর বছর তিস্তা চুক্তি ঝুলে আছে। এবারও তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে না এই আভাস স্পষ্টভাবেই পাওয়া যাচ্ছিল। কিন্তু যেটা কল্পনাও করা যায়নি, সেটা হল বাংলাদেশ ফেনী নদীর পানি ভারতকে দেওয়ার জন্য সমঝোতা স্মারক করবে।

“এবার যেসব চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে সেগুলোর দিকে তাকালে দেখা যাবে এতে বাংলাদেশের ন্যূনতম স্বার্থ রক্ষিত হয়নি। সর্বপ্রথম আমরা দাবি করব, এই চুক্তিগুলোর খুঁটিনাটি জনগণের জন্য প্রকাশ করা হোক। আমরা বিশ্বাস করি, তাতে আমাদের সামনে আরও অনেক ভয়ঙ্কর তথ্য বেরিয়ে আসবে।”

তরলীকৃত গ্যাস ভারতে রপ্তানির চুক্তি ‘ভয়ঙ্কর খারাপ খবর’ অভিহিত করে তিনি বলেন, “ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন যে, আমরা নাকি না বুঝে এসবের সমালোচনা করছি। আমার মনে হয়, ২০০১ সালের নির্বাচনের সময়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, তিনি ক্ষমতায় আসতে পরেননি, কারণ উনি গ্যাস দিতে রাজি হননি। আর ওরা (বিএনপি) গ্যাস দিতে রাজি হয়েছে বলে ক্ষমতায় গেছেন। এবার উনারা গ্যাস দেবেন কি কারণে? ক্ষমতার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ আছে? জানি না।”

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক বলেন, “নিজের অবস্থান থেকে ভারত সঠিক কাজটাই করছে, দর কষাকষির মাধ্যমে তা সর্বোচ্চ অর্জনটা করে নিচ্ছে। নিজ দেশের প্রতি মমত্ববোধ এবং দায়বদ্ধতা থাকলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর উচিত হত পাল্টা দর কাষাকষি করা এবং আমাদের স্বার্থের সবকিছু না হলেও অনেক কিছু অর্জন করে নিয়ে আসা। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এভাবেই নির্ধারিত হয়।

“এর মধ্যে চ্যারিটির কিছু নেই। উনার বলছেন না, চ্যারিটি করছি, মানবতা দেখাচ্ছি এরকম কিছু নাই। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছেন, এটা নির্দ্বিধায় বলা যেতে পারে না, উনার অন্য কোনো হিসাব থাকতে পারে। তাতে উনি সফল হয়েছেন। এটা উনি বললে বুঝব, না বললে যারা বোঝার তারা বুঝবেন।”

সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে নাগরিক ঐক্য এই সংবাদ সম্মেলন করে।