দল আর সংসদে শীর্ষ দুই নেতার মধ্যে ক্ষমতা ভাগাভাগির রফায় পৌঁছানোর পর রোববার একাদশ সংসদের চতুর্থ অধিবেশন শুরুর আগে সংসদীয় দলের এই বৈঠকে বসেন জাতীয় পার্টির এমপিরা। এরশাদের স্ত্রী রওশনের সভাপতিত্বে ওই সভায় ভাই জিএম কাদেরও উপস্থিত ছিলেন।
সংসদ ভবনে এই বৈঠক শেষে জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ মসিউর রহমান রাঁঙ্গা সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, দলের ২৫ জন এমপির সবাই এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
“সেখানে সর্বসন্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়েছে, রওশন এরশাদ বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন এবং জিএম কাদের পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন।”
রওশনকে বিরোধী দলীয় নেতা করতে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকে চিঠি দেওয়া হয়েছে কী না জানতে চাইলে রাঙ্গাঁ বলেন, “স্পিকারের কাছে চিঠি এখনো দেওয়া হয়নি। চেয়ারম্যান সাহেব নিজেই স্পিকারকে একটা চিঠি দেবেন। রওশন এরশাদকে তিনি বিরোধী দলীয় নেতার স্বীকৃতি দিতে বলবেন।”
এইচএম এরশাদের উত্তরসূরি হিসেবে জাতীয় পার্টির নেতৃত্ব কে দেবেন, কে হবেন সংসদে বিরাধী দলীয় নেতা- এই প্রশ্নে তার স্ত্রী রওশন এরশাদ ও ভাই জিএম কাদেরের দ্বন্দ্বে গত কয়েক দিনে জাতীয় পার্টি ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়।
শেষ পর্যন্ত শনিবার রাতে দুই পক্ষের নেতারা বসে সমঝোতায় পৌঁছান। সমঝোতা অনুযায়ী দলের চেয়ারম্যান থাকবেন জিএম কাদের আর বিরোধী দলীয় নেতা হবেন রওশন এরশাদ।
রোববার দুপুর ১টায় সংসদ ভবনে বিরোধী দলীয় উপনেতা রওশন এরশাদের অফিসে জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের এ বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা শুরু হয় বিকেল ৩টার পরে বিরোধী দলীয় লবিতে।
জাতীয় পার্টির জ্যেষ্ঠ কো-চেয়ারম্যান রওশন বিরোধীদলীয় উপনেতার দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তিনি বিরোধী দলীয় নেতা হলে উপনেতা কে হবেন, তা এখনও ঠিক করা হয়নি বলে জানান রাঙ্গা।
তিনি বলেন, “বিধান হচ্ছে, যিনি বিরোধী দলীয় নেতা হন, তিনি চেয়ারম্যানের সাথে আলোচনা করে উপনেতা ঠিক করেন।”
শনিবার রাতের সমঝোতা বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, “গতকাল এ পাশের ৫ জন, ওপাশের ৫ জন মিলে আমরা ১০ জন শহরের একটি অভিজাত হোটেলে বসেছিলাম। সেখানে আলোচনা করেই বিরোধী দলীয় নেতা ও চেয়ারম্যানের বিষয়ে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি। বাকিগুলো আমরা সম্মেলনে ঠিক করে নেব।
“রংপুর-৩ আসনের উপ নির্বাচনে মনোনয়নের বিষয়টা আমরা সবাই মিলে চেয়ারম্যান সাহেবের দায়িত্ব দিয়েছি। উনি যেটা করবেন সেটা তার বিষয়ে। উনি সাদের (রওশনের ছেলে সাদ এরশাদ) নাম ঘোষণা করেছেন।”
এক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, “আমাদের গঠণতন্ত্রের ২০ ধারা অনুযায়ী ‘চেয়ারম্যান ক্যান ডু এনিথিং’। সেটার সংযোজন বিয়োজন প্রয়োজন হলে আমরা করব। আমরা এটাকে আরও গণতান্ত্রিক করব।
আপাতত জাতীয় পার্টির মধ্যে সব ধরনের ‘ভুল বোঝাবুঝির’ অবসান হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।