‘গণতামাশা’ হলে ডিএমপিকে বলব ব্যবস্থা নিতে: কাদের

গণশুনানির নামে ঐক্যফ্রন্ট ‘গণতামাশা’ করলে পুলিশকে ‘ব্যবস্থা’ নিতে বলবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Feb 2019, 02:08 PM
Updated : 19 Feb 2019, 02:10 PM

মঙ্গলবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে এক মতবিনিময় সভায়  সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

বিএনপিকে নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট একাদশ সংসদ নির্বাচনে ‘ভোট ডাকাতির’ অভিযোগ নিয়ে আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি গণশুনানি করার ঘোষণা দিয়েছে। সেখানে বিচারকের ভূমিকায় থাকবেন জোটের শীর্ষ নেতা আইনজীবী কামাল হোসেন।

গণশুনানির জন্য জায়গা দেওয়া হচ্ছে না বলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যে অভিযোগ করে আসছে, সে বিষয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা ওবায়দুল কাদেরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন সাংবাদিকরা। 

জবাব তিনি বলেন, “তারা যদি গণশুনানি না করে, গণতামাশা করে তাহলে ডিএমপি কমিশনারকে বলব অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নিতে।”

উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী না দেওয়ার প্রসঙ্গ টেনে ওবায়দুল কাদের বলেন, “তাদের নেতৃত্ব তৃণমূল মানে না। বিএনপি দল থেকে মনোনয়ন না দিলেও প্রথম দফায় তাদের ২৩ জন প্রতিযোগিতা করছেন। দ্বিতীয় দফাতেও ৩৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন- এমন তথ্য আমাদের কাছে আছে।”

একাদশ সংসদ নির্বাচনের ফল চ্যালেঞ্জ করে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে যেসব মামলা করেছেন, তাতে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে পঙ্গু হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।

তার ওই বক্তব্যের জবাবে কাদের বলেন, “আওয়ামী লীগ নয়, মামলা করতে করতে তারা (ঐক্যফ্রন্ট) নিজেরাই পঙ্গু হয়ে যাবে।”

ডাকসু নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্যানেল ঠিক করে দেবে কি না- এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “ডাকসুর নির্বাচন সামনে রেখে ছাত্রলীগকে একটি শর্ট লিস্ট তৈরি করার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া নেত্রীও (শেখ হাসিনা) আওয়ামী লীগের সিনিয়রদের নিয়ে একটি টিম গঠন করে দিয়েছেন। তারা কাজ করছে। তাই ছাত্রলীগের প্যানেল নিয়ে আশা করি কোনো সমস্যা হবে না।”

মান-অভিমান কেটে যাবে

একসঙ্গে নির্বাচন করার পর সংসদে ভিন্ন ভূমিকা নিতে বাধ্য হওয়ায় ১৪ দলের শরিক নেতাদের কেউ কেউ খেদ প্রকাশ করলেও তাতে জোট ভাঙার কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না আওয়ামী লীগ নেতা কাদের।

এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এ উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। মান-অভিমান আছে। এটা থাকবে। আবার থাকবেও না। এটা কেটেও যাবে। 

“কী নিয়ে মান-অভিমান, তা আপনারাও ভালো জানেন। শরিক দলগুলোর মধ্যে ছোট-খাটো মান অভিমান থাকতেই পারে। এখানেও তেমন কোনো সমস্যা নেই।”

কাদের বলেন, ১৪ দলের শরিকরা সংসদে সরকারের সমালোচনা করলে তা ‘গণতন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য’ ভালো হতে পারে।

“এতে গণতন্ত্রের চর্চা আরও গতিশীল হবে। সেই দিক থেকে এই সমালোচনা আমরা এনজয় করি।”

তিন সেতুর কাজ ‘ঈদের আগে’ শেষ হবে

আগামী রোজার ঈদের আগেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ তিন সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেছেন, “ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দ্বিতীয় কাঁচপুর ব্রিজের কাজ এরইমধ্যে শেষ হয়েছে। এর সামারি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে। সম্ভবত মার্চের ১০ তারিখ প্রধানমন্ত্রী এই সেতু উদ্বোধন করবেন। দ্বিতীয় মেঘনা ও গোমতি সেতুর কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে। জুনের আগেই এ দুই সেতুর কাজ শেষ হবে।”

এছাড়া ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের যমুনা সেতুর পশ্চিমপাড় পর্যন্ত সড়ক চার লেইনে সাম্প্রসারণের কাজ এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ তিন সেতুর নির্মাণ কাজও ঈদের আগেই শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, “ঈদের সময় রং সাইড দিয়ে গাড়ি চালিয়ে তীব্র ও লম্বা যানজট করা যাবে না। রাস্তা সচল রাখতে হবে। ইউজেবল রাখতে হবে। পাসেবল রাখতে হবে।

“যারা রাস্তা দখল করেছেন, রাস্তা ছেড়ে দিন। রাস্তা উদ্ধার করা হবে। আমরা উচ্ছেদ শব্দটি ব্যবহার করতে চাই না। যা নেই তা নিয়ে কথা বলে লাভ নেই। প্রকৌশলীদের চেষ্টা করতে হবে যা আছে তা দিয়ে সমস্যার সমাধান করার।”

মন্ত্রী বলেন, “ঈদের আগে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কে কোনো প্রতিবন্ধকতা দেখতে চাই না। কারণ এ দুই মহাসড়কেই ঈদে বড় সমস্যা হয়। আশা করছি ঢাকা-সিলেট সড়কেও কোনো সমস্যা হবে না।”

সওজের প্রকৌশলীদের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, “সময় কম। এপ্রিলে বর্ষা শুরু হবে। মে মাসে রমজান। এরপরই রমজানের ঈদ। এখনই বেহাল সড়কের কাজ শুরু করতে হবে। দেশকে ভালোবেসে কাজ করতে হবে। রাতেও কাজ করতে হবে।”