ঢাকা উত্তরে জোটের মেয়র প্রার্থী ঠিক করবেন খালেদা

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপ-নির্বাচনে একক প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Jan 2018, 06:22 PM
Updated : 8 Jan 2018, 06:22 PM

এই প্রার্থী মনোনয়নের ভার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপর দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জোটের নেতারা।

আনিসুল হকের মৃত্যুতে শূন্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে উপনির্বাচনের জন্য আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোটের দিন ঠিক করেছে নির্বাচন কমিশন।

তিন বছর আগের এই নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী তাবিথ আউয়ালকে হারিয়ে মেয়র হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত আনিসুল হক।

বিএনপির জোটসঙ্গী দল জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা উপ-নির্বাচনের জন্য তাদের দলীয় নেতা সেলিম উদ্দিনকে নিয়ে প্রচারে নেমেছে।

বিএনপিকে না জানিয়ে জামায়াতের এই পদক্ষেপের মধ্যে সোমবার রাতে গুলশানে নিজের কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোটের নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন খালেদা জিয়া।

বৈঠক থেকে বেরিয়ে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান এম এ রকীব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঢাকা উত্তরের আসন্ন নির্বাচনে জোটের একক প্রার্থী হবে। প্রার্থী চূড়ান্ত করবেন জোটনেত্রী। এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।”

জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সিটি নির্বাচনের মেয়র পদে প্রার্থী ঠিক করার দায়িত্ব আমরা বেগম খালেদা জিয়ার হাতেই অর্পণ করেছি। তার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। এ নিয়ে কোনো কথা চলবে না।”

বৈঠকে দুটি শরিক দলের নেতা জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী ঘোষণার বিষয়টি তুলে সমালোচনা করেন বলে এক নেতা জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই নেতা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জবাবে বৈঠকে অংশ নেওয়া জামায়াতের কর্মপরিষদের সদস্য আবদুল হালিম বলেন, তফসিল ঘোষণার আগে যে কেউ প্রার্থী ঘোষণা করতেই পারে। তবে জোট যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই তারা মেনে চলবেন।”

নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন হারানো দল জামায়াত দলীয় প্রতীক নিয়ে কোনো নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না। তবে দলটির নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে বাধা নেই।

বৈঠকে আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়েও জোট নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন খালেদা।

রব ইউসুফী বলেন, “আমরা একমত হয়েছি যে, বেগম খালেদা জিয়াকে ছাড়া জোট নির্বাচনে যাবে না। অবশ্যই একাদশ নির্বাচন হতে হবে নির্দলীয় সরকারের অধীনে।”

বিএনপি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চাইলেও তাতে সরকারের সাড়া নেই। পাশাপাশি বিএনপির আশঙ্কা, আদালতের রায়ের মাধ্যমে খালেদাকে নির্বাচনের বাইরে রাখার চেষ্টা হতে পারে।  

বৈঠকে ঢাকায় একটি উলামা-মাশায়েখ এবং আইনজীবীদের সম্মেলন করার সিদ্ধান্তও হয়।

বৈঠকে বিজেপির আন্দালিব রহমান পার্থ, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহী0ম, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, জাগপার রেহানা প্রধান, খেলাফত মজলিশের আহমেদ আবদুল কাদের,ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, পিপলস লীগের গরীবে নেওয়াজ, ন্যাপ-ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, জমিয়তে উলামা ইসলামের মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, বাংলাদেশ ন্যাপের গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, ডেমোক্রেটিক লীগের সাইফুদ্দিন মনি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির মঞ্জুর হোসেন ঈসা ছিলেন।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও ছিলেন বৈঠকে।

জোটের শরিক লেবার পার্টির মধ্যে নেতৃত্বের বিভক্তির কারণে তাদের কোনো পক্ষ অর্থাৎ মোস্তাফিজুর রহমান ইরান কিংবা হামদুল্লাহ আল মেহেদির কোনো পক্ষকেই বৈঠকে ডাকেননি খালেদা।