গুম বিএনপিই ঘটাচ্ছে: কাদের

গুম নিয়ে বিএনপির অভিযোগের পাল্টায় এবার তাদেরই দায়ী করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Jan 2018, 02:11 PM
Updated : 7 Jan 2018, 04:19 PM

তিনি বলেছেন, “দেশে হঠাৎ হঠাৎ লাশ পরে থাকে। যারা ৯ বছর আন্দোলনে ব্যর্থ হয়েছে, তারাই দেশে গুমের ঘটনা ঘটাচ্ছে।”

ঢাকায় শিল্পকলা একাডেমিতে রোববার আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির উদ্যোগে ‘বিএনপি-জামায়াতের অগ্নি সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের খণ্ডচিত্র’ প্রদর্শনীতে আলোচনা সভায় একথা বলেন তিনি।

গুমের ঘটনাগুলো বিদেশে বসে একজন নিয়ন্ত্রণ করছে বলেও দাবি করেন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

“তাদের একজন সুইডেনে বসে কিলিং গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ করছে, তার নাম নাহিদ।”

নাম বললেও নাহিদের বিস্তারিত পরিচয় জানাননি কাদের।

পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই নাহিদ ছাত্রদলের সাবেক নেতা, এখন বিদেশে আছেন। দুই মাস আগে ঢাকার বনানীতে জনশক্তি রপ্তানিকারক সিদ্দিক হোসেন হত্যাকাণ্ডে তার নাম এসেছিল।

এই মামলায় খুনি হিসেবে হেলাল উদ্দিন (৩০) নামে এক ‘ভাড়াটে খুনি’কে গ্রেপ্তারের পর গোয়েন্দা কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেছিলেন, ইউরোপে পালিয়ে ছাত্রদলের একজনের নির্দেশেই সিদ্দিককে হত্যা করেন হেলাল।

আওয়ামী লীগ সরকারে থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে গুম করাচ্ছে বলে বিএনপি অনেক আগে থেকে অভিযোগ করে আসছে।

দলটির দাবি, আওয়ামী লীগের নয় বছরের শাসনামলে তাদের ৭৪৭ জন নেতা-কর্মী অপহৃত হন; এর মধ্যে ৫২০ জন হত্যাকাণ্ডের শিকার হন; ১৫৭ জন এখনও নিখোঁজ।

গুমের ঘটনা যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের চেয়ে বাংলাদেশে কম বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দাবি করলেও বিদেশি মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো সরকারের দিকেই অভিযোগ তুলে উদ্বেগ জানিয়ে আসছে।

এরমধ্যেই অভিযোগকারী বিএনপির দিকে পাল্টা অভিযোগের আঙুল তুললেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।

ঢাকার শিল্পকলা একাডেমিতে রোববার আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, “তারা (বিএনপি-জামায়াত) এখনও রক্তের হোলি খেলা খেলছে। যারা পাকিস্তানি কায়দায় জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, তারা পাকিস্তানির প্রেতাত্মা। এরাই আবার গুম খুনের কথা বলে।

“গুমের নাটক যারা সাজায়, তারাই গুমের অভিযোগ দিতে দ্বিধা করে না।”

নিখোঁজ হওয়ার পর যে কজন ফিরে এসেছেন, তাদের বর্ণনাকে সরকারের নির্দোষিতার প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরেন মন্ত্রী কাদের।

“যারা ভিক্টিম, তাদের মুখে যে বর্ণনা, তার পর আর বক্তব্য দেওয়ার কিছু থাকে না।”

বিএনপি-জামায়াতের নাশকতা মোকাবেলায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা পাশে আছে বলে জনগণকে আশ্বস্ত করেন কাদের।

তিনি বলেন, “গণতন্ত্রের মুখোশ পরে যারা আছে, তাদের মুখোশ জাতির সামনে উন্মোচন করতে হবে। বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে রুখতে হবে। আবার তাদের পরাজিত করে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনতে হবে।”

‘বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাস নৈরাজ্যের খণ্ডচিত্র’ প্রদর্শনী ঘুরে দেখছেন ওবায়দুল কাদের

অনুষ্ঠানে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের সময় সংঘটিত নাশকতার ভিডিও ও স্থির চিত্র দেখানো হয়। ২০১৪ সালের ওই ঘটনার ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকজন বক্তব্যও দেন।

ওবায়দুল কাদের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব তহবিল থেকে নগদ অর্থ তুলে দেন।

প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও প্রচার-প্রকাশনা উপকমিটির চেয়ারম্যান এইচ টি ইমামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদও বক্তব্য দেন।