কাদের বলেন, “সন্ত্রাসের সঙ্গে সংলাপ হতে পারে না। তারা প্রমাণ করেছে, বিএনপি একটা সন্ত্রাসী দল। এটা সন্ত্রাসী দল। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন কোনো সংলাপ নয়। আমিও বলছি তাদের সঙ্গে কোনো সংলাপ নয়।”
Published : 02 Nov 2023, 04:10 PM
বিএনপি নিজেদের আন্দোলন নিজেরাই পণ্ড করছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশ উদ্বোধন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, “এটা কোন নাটক! আন্দোলন করছেন। তাদের আন্দোলন তারাই পণ্ড করছে। এই আন্দোলনটা পণ্ড করার জন্য আমি রাজনৈতিক লোক হিসেবে বলব দুইটা ঘটনাই যথেষ্ট তাদের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার জন্য।
“একটা হল প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা, তারপর একজন পুলিশকে প্রকাশ্যে হত্যা করা; মরে যাওয়ার পরও ওই লোকটাকে পেটানো। এ দৃশ্যপট সকলকে কষ্ট দিয়েছে। এই দুটি ঘটনাই আমি বলি যথেষ্ট। এরপর তাদের সঙ্গে জনমতের যা কিছু আছে সেটাও থাকার কথা নয়। তাদের আন্দোলন তারাই পণ্ড করেছে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।”
২৮ অক্টোবরের সমাবেশের দিন বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের সঙ্গে মারামারি শুরু করে জানিয়ে কাদের বলেন, “তারা পুলিশকে মেরেছে। প্রধান বিচারপতি বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। সেই ২০১৪, ২০১৫ সালের পুনরাবৃত্তি। তারা ঘুরেফিরে তাদের পুরনো নাশকতা, সন্ত্রাসের ধারায় ফিরে এসেছে।”
ওইদিন সমাবেশস্থল থেকে বিএনপি নেতাদের চলে যাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে ওবায়দুল কাদের বলেন, “কিভাবে যে ফখরুল দৌড় দিল, দেখাই যাচ্ছে না। ফখরুল সাহেব তাকায় দেখে অন্য নেতারা নাই। সে বেচারা চলে গেছে, অন্য নেতারা সবাই ভাগছে। গেছে তো গেছে, লাদেনের মতো কোন গুহায় প্রবেশ করেছে আল্লাহ্ জানে। গুহার মধ্যে গেছে বেরই করা যাচ্ছে না, কোথায় আছে?”
আওয়ামী লীগের সমর্থক হিসেবে পুলিশ বিএনপিকর্মীদের ওপর হামলা করেছে বলে দাবি করেছেন রিজভী।
এনিয়ে এক প্রশ্নে কাদের বলেন, “রিজভী ইজ এ প্যাথলজিক্যাল লায়ার। ওই পদবি নিয়ে ওকে থাকতে হবে। সব সময় বসে বসে ওই আবাসিক প্রতিনিধি মিথ্যাচার করে। এখন কোথায় আছে? ও কোন গুহা থেকে কথা বলে, সেটা তো কারও জানা নেই। ও তো প্রকাশ্যে কোনো মিটিং করছে না। আমি যেমন আপনাদের ডাকলাম, সে কি প্রকাশ্যে কোনো প্রেস ব্রিফিং করছে? সে আবার কোন গুহা থেকে করছে? সব তো গুহার মধ্যে ঢুকে আছে।”
সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন
সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমাদের দেশের সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।”
বিএনপিবিহীন আরেকটি নির্বাচনের দিকে দেশ এগুচ্ছে কিনা, এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, “আই ডোন্ট নো। বিএনপির অধিকার ইলেকশন করার। তারা ইলেকশন না করলে করবে না। আমার কথা হল বাংলাদেশের সংবিধান পরিবর্তন হচ্ছে না। সংবিধান যেভাবে বলছে আমাদের ইলেকশন, আমাদের গণতন্ত্র ঠিক সেভাবে চলবে, এতে কে আসলো কে আসলো না দ্যাট ডাজন্ট ম্যাটার।”
বিএনপিকে ছাড়া নির্বাচন হলে দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “স্পেস দেন, সময় আসুক। বিএনপি না এলে আমরা কি তাদের জোর করে আনব? বিএনপি না এলে সংবিধান অবজ্ঞা করে নির্বাচন করব না। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া চালু থাকবে না, এটা কেমন কথা, এটা তো হতে পারে না। সেটিকে প্রশ্নবিদ্ধ যারা বলেন তারা বলতে পারেন।”
নির্বাচন কমিশন সংলাপে ডাকলেও বিএনপি সেখানে যাবে না। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওবায়দুল কাদের বলেন, “ওখানে যাবে না, এখন আমি ডাকব কেন? প্রেসিডেন্ট ডেকেছেন, তারা আসেনি। নির্বাচন কমিশন ডেকেছে, তারা আসেনি। আমরা গতবার একবারের জায়গায় দুইবার পর্যন্ত সংলাপ করেছি।
“কি হল, রেজাল্ট কি আসল বলেন? ফখরুল সাহেব করলেন একটা নাটক। একই দলের এটা কোন ধরনের নীতি। ইলেকশন করলেন জেনেশুনে, নির্বাচিত হলেন, সংসদে গেলেন। এই ডেমোক্রেসি কোথায় আছে? এই উদাহরণ আর একটা জায়গায় দেখান তো।”
কাদের বলেন, “সন্ত্রাসের সঙ্গে সংলাপ হতে পারে না। তারা প্রমাণ করেছে, বিএনপি একটা সন্ত্রাসী দল। এটা সন্ত্রাসী দল। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন কোনো সংলাপ নয়। আমিও বলছি তাদের সঙ্গে কোনো সংলাপ নয়।”
‘জাতিসংঘ তো নামকাওয়াস্তে’
বিএনপির সমাবেশ নিয়ে জাতিসংঘের বিবৃতির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কাদের বলেন, “দে হ্যাভ বিন মিসলিড। আমরা বলতে চাই জাতিসংঘের আসলে বাংলাদেশ নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় এটা নয়।
“সুদান দেশটা আরও দু্ইভাগ হয়ে যাচ্ছে। আজকে ফিলিস্তিনে কি হচ্ছে? জাতিসংঘের কথা কেউ শোনে? আজকে গাজায় যা হচ্ছে জাতিসংঘের একটি কথা কেউ শুনেছে কিনা? জাতিসংঘ তো নামকাওয়াস্তে। জাতিসংঘের কোনো কার্যকারিতা তো নেই বাস্তবে।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের ইলেকশন নিয়ে এখানে একটা ঘটনা ঘটেছে, বিভিন্ন রকম ইনফরমেশন যেতে পারে, এটাতে তো তাদের কোনো ক্ষতি হচ্ছে না। তাদের আসল দায়িত্বটা তারা তো পালন করতে পারছে না। ইউক্রেইনে তারা কিছু শব্দচয়ন করে সুন্দর সুন্দর কথা বলেছে। ক্লাইমেট চেইঞ্জের অবনতি ঘটছে। জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল মাঝেমাঝে সুন্দর ভাষায় আপন মনের মাধুরি মিশিয়ে ভালো ভালো কথা বলেন। ভালো ভালো কিছু কথা বলা ছাড়া জাতিসংঘের আর কোথাও তো কোনো ভূমিকা আছে বলে আমাদের জানা নেই। বাংলাদেশ নিয়ে তারা মাথা ঘামাচ্ছে, আমরা অনেক ভালো আছি।”