“আব্দুল্লাহিল আমান আযমী জামায়াতে ইসলামীর সাথে সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি নন। জামায়াতে ইসলামীর সাথে তার কোনো সাংগঠনিক সম্পর্ক নেই”, বলা হয় বিবৃতিতে।
Published : 08 Sep 2024, 08:25 PM
জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের দাবি নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযমের ছেলে আব্দুল্লাহিল আমান আযমী যে বক্তব্য রেখেছেন, তার দায় নিচ্ছে না দলটি।
আমান আযমীর দাবি নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে রোববার এক বিবৃতিতে এ কথা বলেছে দলটি।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার এই বিবৃতিতে বলেন, “সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আযমী জামায়াতে ইসলামীর সাথে সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি নন। জামায়াতে ইসলামীর সাথে তার কোনো সাংগঠনিক সম্পর্ক নেই।
“তিনি জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধিত্ব করেন না। তিনি যে বক্তব্য রেখেছেন, তা তার একান্ত ব্যক্তিগত। সুতরাং তার বক্তব্যকে জামায়াতে ইসলামীর সাথে সংশ্লিষ্ট করার কোনো সুযোগ নেই।”
গত ৩ সেপ্টেম্বর আযমী সংবাদ সম্মেলনে এসে জাতীয় সংগীত পরিবর্তন ও সংবিধান নতুন করে লেখার দাবি করেন। এমনও বলেন, মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হননি, নিহতের সংখ্যা ছিল ৩ লাখ।
আযমী সেদিন বলেন, “১৯০৫-এ বঙ্গভঙ্গ-রদ করার জন্য রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’। এই জাতীয় সংগীত দুই বাংলা এক করার জন্য জাতীয় সংগীত। আমরা কি দুই বাংলা এক হতে চাচ্ছি? আমরা কি স্বাধীন বাংলাদেশ রাখতে চাই, নাকি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অঙ্গীভূত রাজ্য হতে চাই?
“আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ চেয়েছি, স্বাধীন বাংলাদেশ থাকতে চাই। এই জাতীয় সংগীত আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশের অস্তিত্বের পরিপন্থি। আমি জোর দাবি জানাচ্ছি আমাদের নতুন জাতীয় সংগীত তৈরি করা হোক।”
তার দাবি ১৯৭২ সালে স্বাধীন দেশে সংবিধান রচনায় আওয়ামী লীগ সরকারের ম্যান্ডেট ছিল না। তাই এই সংবিধান অবৈধ।
গোলাম আযমের ছেলের এই বক্তব্য বিতর্কের ঝড় তুলেছে। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন সারা দেশে একযোগে জাতীয় সংগীত গাওয়ার কর্মসূচি পালন করেছে। চট্টগ্রামে আযমীকে অবাঞ্ছিতও ঘোষণা করা হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে এই দাবির বিষয়ে সুষ্পষ্ট কোনো বক্তব্য না এলেও শনিবার রাজশাহী সফরে গিয়ে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েন ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।
জাতীয় সংগীত পরিবর্তন বিষয়ে সরকার কী ভাবছে- এই প্রশ্নে তিনি বলেন, “এগুলো বিতর্ক সৃষ্টির প্রয়াস। আমাদের প্রধান উপদেষ্টাও বার বার বলেছেন, বিতর্ক সৃষ্টি হয় এমন কোনো জায়গায় আমরা হাত দেব না।”
এই পরিপ্রেক্ষিতে আযমীর বক্তব্যের দায় অস্বীকার করে জামায়াতের বিবৃতিতে লেখা হয়, “এ বিষয়ে আমাদের বক্তব্য হল তার বক্তব্যকে কেন্দ্র করে জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে বিভ্রান্তি ছড়ানোর কোনো অবকাশ নেই।”
আরও পড়ুন:
জাতীয় সংগীত ও সংবিধান পরিবর্তন চান আমান আযমী
প্রতিবাদে লাখো কণ্ঠে ছড়াল জাতীয় সংগীত
যেসব কারণে বাদ দেব না জাতীয় সংগীত
'জাতীয় সংগীত কারো দানে পাওয়া নয়'
চট্টগ্রামেও জাতীয় সংগীত গেয়ে প্রতিবাদ, আযমীকে 'অবাঞ্ছিত' ঘোষণা