“আমরা বার বার বলে আসছি যে স্পষ্ট রোডম্যাপ এবং দ্রুত নির্বাচন। তা না হলে যে সংকটগুলো সৃষ্টি হচ্ছে, এই সংকটগুলো কাটবে না।
Published : 26 Mar 2025, 12:45 PM
নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সূচি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য ‘অস্পষ্ট’ মনে হচ্ছে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে।
তিনি বলেছেন, “আমরা বার বার বলে আসছি যে স্পষ্ট রোডম্যাপ এবং দ্রুত নির্বাচন। তা না হলে যে সংকটগুলো সৃষ্টি হচ্ছে, এই সংকটগুলো কাটবে না।”
বুধবার স্বাধীনতা দিবসের সকালে ঢাকার শেরেবাংলা নগরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন ফখরুল।
আগের দিন সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “নির্বাচনের ব্যাপারে আমি আগেও বলেছি, আবারও বলছি, এ বছর ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।”
এর প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এটা অত্যন্ত অস্পষ্ট কথা। ডিসেম্বর থেকে জুন–ছয় মাস। সুতরাং এটা কোনো রোড ম্যাপ দেওয়া হয়নি।”
বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নির্বাচনের কথা বলছে না–এমন মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, “বিএনপি জাতির স্বার্থে, জাতিকে রক্ষা করার স্বার্থে, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করার স্বার্থেই নির্বাচনের কথা বলছে এবং নির্বাচিত পার্লামেন্ট এবং সরকারের কথা বলছে।
“আমরা আশা করব, অন্তবর্তীকালীন সরকার অতি দ্রুত তারা ন্যূনতম সংস্কারগুলো করে অর্থাৎ যেগুলো নির্বাচনের জন্য প্রয়োজন তার সম্পন্ন করে নির্বাচনের ঘোষণা দেবেন।”
সেই প্রত্যাশার জায়গা থেকে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে ‘হতাশ’ হওয়ার কথা বলছেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, “আমি অত্যন্ত হতাশ হয়েছি যে, গতকাল প্রধান উপদেষ্টা যে বক্তব্য রেখেছেন সেই বক্তব্যে তিনি নির্বাচনের রোডম্যাপের কথা বলেননি।
“আমরা হতাশ হয়েছি যে, তার বক্তব্যের মধ্যে তিনি স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর মুক্তিযোদ্ধা বীরউত্তমের নাম একবারও উচ্চারণ করেননি। অথচ এটাই ছিল ইতিহাস।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমরা চাই না আওয়ামী লীগ যে ইতিহাস বিকৃত করেছেন এখন আবার সেই ইতিহাস বিকৃত হোক।
“প্রকৃত সত্যকে উঘাটিত করে জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা–একটি গণতান্ত্রিক সরকার–সেই গণতান্ত্রিক সরকারে যত দ্রুত ফিরে যাওয়া যাবে আমাদের সমস্যাগুলো ততই সমাধান হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”
স্বাধীনতা দিবসে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আজকের এই দিনে আমাদের দলের পক্ষ থেকে, আমাদের দলের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আমরা গোটা জাতিকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি, অভিনন্দন জানাচ্ছি এবং প্রত্যাশা করছি অতি শিগগিরই আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত গণতন্ত্র ফিরে পাব।”
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে কয়েক হাজার নেতা-কর্মী এদিন শেরে বাংলানগরে জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে আসেন। প্রয়াত নেতার কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে তারা ফাতেহা পাঠ করে।
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, ফরহাদ হালিম ডোনার, মাহবুব উদ্দিন খোকন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া মহানগর বিএনপি, যুব দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মুক্তিযোদ্ধা দল, মহিলা দল, ছাত্র দলসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকেও আলাদা আলাদাভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
এর আগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে একাত্তরের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।