তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে আদালত ২৭ ফেব্রুয়ারি দিন ঠিক করে দিয়েছে।
Published : 23 Jan 2025, 08:33 PM
ফেইসবুক পোস্টের মাধ্যমে সামাজিকভাবে হেয় করা অভিযোগ এনে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
বৃহস্পতিবার শাহবাগ থানায় দুটি ফেইসবুক পেইজের এডমিন ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করেন তিনি। মামলায় আসামিদের নাম ও পরিচয় ও সংখ্যা দেওয়া হয়নি।
শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মনসুর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হেয় প্রতিপন্ন করার অভিযোগে সাইবার নিরাপত্তা আইনে সারজিস আলমের দায়ের করা মামলার তদন্ত চলছে।
আদালতে শাহবাগ থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই জিন্নাত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, থানায় মামলা দায়েরের পর তা মহানগর হাকিম নাজমিন আখতারের আদালতে উপস্থাপন করা হয়। বিচারক তা গ্রহণ করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি দিন ঠিক করেছেন।
সারজিস আলম যে দুটি ফেইসবুক পেইজের বিরুদ্ধে ’সাইবার বুলিংয়ের’ অভিযোগ এনেছেন সেগুলো হল- ডিপার্টমেন্ট অব বাকশাল, ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা (Department of Bakshal, University of Dhaka) ও ক্রিমিনালস ডিইউ (Criminals DU)।
এ বিষয়ে সারজিস আলমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য জানা যায়নি।
সারজিসের মামলার খবর সামনে আসার পর থেকে ক্রিমিনালস ডিইউ পেইজটি ফেইসবুকে আর পাওয়া যাচ্ছে না। তবে অপর পেইজটি চালু রয়েছে। সেটি কারা পরিচালনা করে (এডমিন) সেই অপশন প্রকাশ্যে রাখা হয়নি।
মামলায় সারজিসের অভিযোগ, ফেইসবুক পেইজ দুটির মাধ্যমে অসত্য তথ্য প্রকাশ করে তার মানহানি করা হচ্ছে।
এজাহারে তার অভিযোগ, “২২ জানুয়ারি সকালে ফেইসবুকে লগ ইন করে দেখতে পাই Department of Bakshal, University of Dhaka এবং Criminals DU নামক দুইটি ফেইসবুক পেইজ থেকে সম্পূর্ণ বানোয়াটভাবে আমার অব্যবহৃত হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টকে কেন্দ্র করে এডিটেড কিছু চ্যাটের স্ক্রিনশট প্রকাশ করে একটি পোস্ট আপলোড করা হয়েছে। উক্ত পোস্টের ক্যাপশন এবং এডিটেড চ্যাটের স্ক্রিনশটের মাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ বানোয়াটভাবে এবং চরম অসৎভাবে আমার মানহানির উদ্দেশ্যে অভিযোগ আনা হয় যে আমি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ- সমন্বয়ক নাফিসা ইসলাম সাকাফির জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধে সোচ্চার অবস্থানের জন্য তার বিরুদ্ধে চলমান স্যোশাল মিডিয়ায় সাইবার বুলিংয়ের জন্য চক্রান্ত করি।
”উক্ত পোস্টের এডিটেড স্ক্রিনশটের মাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ মিথ্যাভাবে অভিযোগ করা হয় যে, আমি আমার কাছের এক ছোটভাইকে নাফিসা ইসলাম সাকাফির বিরুদ্ধে সাইবার বুলিং পরিচালনার জন্য নির্দেশ প্রদান করি। এছাড়াও Criminals DU ফেইসবুক পেইজ থেকে আজকের তারিখেই আমার জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে নিজ সিদ্ধান্তে সরে আসাকে সম্পূর্ণ মিথ্যাভাবে অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগে আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে প্রচার করা হয়।
”উপরোক্ত দুইটি পেজ থেকে অনবরত আমার বিরুদ্ধে চরম মানহানিকর বিভ্রান্তিমূলক তথ্য, এডিটেড স্ক্রিনশট এবং কুরুচিপূর্ণ এডিটেড ছবি পোস্ট করা হচ্ছে। আমি ব্যক্তির উপর সম্পূর্ণ অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে উপরোক্ত পেইজগুলো থেকে এহেন মিথ্যা, কুরুচিপূর্ণ এবং বিভ্রান্তিমূলক পোস্ট সারাদেশবাসীর নিকট আমার ব্যক্তিত্ব এবং চরিত্রের অপূরণীয় ক্ষতিসাধন করেছে।”
এর মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে চলমান ভিত্তিহীন ‘কুরুচিপূর্ণ প্রচারণা’ তাকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করছে এবং চরমভাবে মানহানির সম্মুখীন করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
সরকার পতনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বুধবার ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের’ সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন। এর কারণ হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালনে ‘প্রয়োজনীয় সময় দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না’ বলে তুলে ধরেন।
ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনের সময় হতাহতদের সহায়তায় গঠিত হয় ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’। বুধবার ফেইসবুকে পোস্ট দিয়ে তিনি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব ছেড়ে দেন।
সেখানে সারজিস বলেছেন, তার পদত্যাগের পর ‘সাধারণ সম্পাদক’ নামের কোনো পদ আর ফাউন্ডেশনে নেই।