“ভারত মুখে যাই বলুক, ধর্ম নিরপেক্ষ বলুক আর সেকুল্যার বলুক, তাদের মনের ভেতরে কট্টর হিন্দুবাদী হিংসা ছাড়া কিছু নেই।”
Published : 08 Dec 2024, 03:28 PM
ভারতের শাসকগোষ্ঠীকে ‘বিদ্বেষ পরায়ণ ও বাংলাদেশ বিরোধী’ বর্ণনা করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন আশেপাশের কোন দেশই তাদের সঙ্গে ‘বন্ধুত্ব’ করতে পারে না।
তিনি বলেন, “তারা বাংলাদেশের মানুষকে পছন্দ করে না, ভুটান তাদের (ভারত) সাথে নেই, নেপাল নেই, পাকিস্তান তাদের সাথে নেই, শ্রীলংকা নেই, ছোট্ট একটি দ্বীপ রাষ্ট্র মালদ্বীপও তাদের সাথে নেই। কেউ তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে পারে না।”
রোববার সকালে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ভারতীয় হাই কমিশন অভিমুখে বিএনপির তিন সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের পদযাত্রা কর্মসূচি শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে কথা বলছিলেন রিজভী।
প্রতিবেশী দেশটির সমালোচনা করে রিজভী বলেন, “তারা (ভারত) মুখে যাই বলুক, ধর্ম নিরপেক্ষ বলুক আর সেকুল্যার বলুক, তাদের মনের ভেতরে কট্টর হিন্দুবাদী হিংসা ছাড়া কিছু নেই।”
চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার ঘটনা নিয়ে রিজভী বলেন, “আমি ভারতের শাসকগোষ্ঠীকে বলি, আপনারা বাংলাদেশ নিয়ে বলছেন যে এখানে সংখ্যালঘু নির্যাতন চলে। তো সংখ্যালঘু নির্যাতনের ফলাফল কী আমি তো দেখলাম এখানে ইসকন দ্বারা একজন আইনজীবী মারা গেলেন, তাকে কুপিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে মারা হলো। কই এই ব্যাপারে একটা কথাও বললেন না, একটা আওয়াজ পর্যন্ত তুললেন না।”
ভারতের ত্রিপুরার রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাই কমিশনে হামলার পর সেখানে ভিসা ও কনস্যুলার সেবা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ বিষয়ে রিজভী বলেন, “
তিনি বলেন, “আপনারা তো বাংলাদেশের মানুষের উপকার করেছেন… বাংলাদেশের মানুষ সেখানে গেলে ডলার খরচ হত, বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার পাচারও হত, আর আমাদের ডলারগুলো এখন সেখানে (ভারতে) যাবে না।
‘‘ যেসমস্ত খাদ্যপণ্য আমদানি করা হত চাল, পেঁয়াজ, আদা, এখন আমাদের মানুষ আরো শ্রম দিয়ে এসব পণ্য আরো বেশি করে উৎপাদন করবে।”
রিজভীর কথায়, ভারত ‘বাংলাদেশ বিরোধী’ হয়েও কেন এই দেশের ইলিশ পেতে ‘কাতর হয়ে থাকে’?
আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনে হামলা, জাতীয় পতাকা অবমননার প্রতিবাদে ঢাকার ভারতীয় হাই কমিশন অভিমুখে পদযাত্রাকে
‘দ্রোহের আগুন’ বলে বর্ণনা করেছেন রিজভী।
তিনি বলেন, “ভারতের ঔদ্ধত্য এমন পর্যায় গেছে তারা চট্টগ্রামকে ভারতের অংশ বলে দাবি করবে বলেছে।”
“আমরা আমাদের মিলিত শক্তি, তারুণ্যের শক্তি নিয়ে আমরা এটাই বলব, তোমরা চট্টগ্রাম দাবি করবে কি কারণে? এই সমস্ত ফাঁপা, ফাঁকা আওয়াজ দিয়ে কিছু হবে না। তোমরা যদি এটা দাবি করতে পারো তাহলে আমরাও দাবি করব সিরাজ উদ্দৌলার বাংলা-বিহার-উড়িষ্যা ফেরত দাও আমাদেরকে।”
অপপ্রচারে কী লাভ হচ্ছে?
রিজভী বলেন, ‘‘ নানা অপ্রচার অপতথ্য দিয়ে ভাসিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু তাতে কী লাভ হচ্ছে? কলকাতার নিউ মার্কেট বন্ধ, কলকাতার ডিপার্টমেন্টাল স্টোর বন্ধ, কলকাতার হাসপাতালে রোগী নাই, ক্লিনিকগুলো বন্ধ, এতে আপনারাদের আনন্দ হতে পারে। আমাদের এখানে কোনো ধরনের ভ্রুক্ষেপ নেই।
‘‘ ভারতে যায় মানুষ চিকিৎসা করার জন্য, টুকটাক কেনাকাটার জন্য, এটা এই কারণে যে, একটি বড় দেশ একটা বেড়ানোর সুযোগ থাকে।”
বাংলাদেশ ‘অবলম্বনহীন নয়’ দাবি করে রিজভী বলেন, “আমরা প্রত্যেকটি দিক থেকে দিল্লীর আগ্রাসনকে প্রতিহত করতে প্রস্তুত রয়েছি।”
যুব দলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্নার সভাপতিত্বে ও ছাত্র দলের সাধারণ নাছির উদ্দীন নাছিরের সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানি, সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, যুব দলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, ছাত্র দলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বক্তব্য রাখেন।