প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর সেপ্টেম্বরে, আওয়ামী লীগ যাচ্ছে জুলাইয়ে: কাদের

“ভারতের বিজেপি আমন্ত্রণ জানিয়েছে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলকে। আমরা আশা করছি জুলাই মাসে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল যাবে,” বলেন কাদের।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 May 2023, 09:52 AM
Updated : 24 May 2023, 09:52 AM

জাতীয় নির্বাচনের কয়েক মাস আগে আগামী সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত যেতে পারেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। 

বিশ্বের ধনী ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে নিয়ে জি-টোয়েন্টি সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রীর এই সফর হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। 

কাদের জানান, সেই সম্মেলনের দুই মাস আগে জুলাইয়ে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির আমন্ত্রণে যাচ্ছে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল। 

বুধবার রাজধানীর সড়ক ভবনে চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ের বারৈয়ারহাট থেকে লক্ষ্মীপুরের রামগড় সড়ক প্রশস্তকরণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করতে গিয়ে এসব কথা জানান মন্ত্রী। 

তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জি টোয়েন্টিতে যোগ দিতে আবার সম্ভবত সেপ্টেম্বরে ভারতে যাবেন। 

“এর মধ্যে দলের সঙ্গে দলের যোগাযোগ… ভারতের বিজেপি আমন্ত্রণ জানিয়েছে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলকে। আমরা আশা করছি জুলাই মাসে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল যাবে।” 

দলীয় এই সফর দুই দেশের মানুষের মধ্যে ‘বন্ধনকে’ আরও সুদৃঢ় করবে বলে আশা প্রকাশ করেন কাদের। 

তিনি বলেন, “পার্টি টু পার্টি কনট্যাক্ট দরকার, পিপল টু পিপল কনট্যাক্টকে আরো সুদৃঢ় করার জন্য, সেতুবন্ধনের জন্য।” 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “একাত্তরে ভারত বাংলাদেশের মধ্যে যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রচিত হয়েছিল, তা পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকণ্ডের পর অবিশ্বাস আর সন্দেহে রূপ নেয়। কিন্তু ওই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক যদি অব্যাহত রাখতে পারতাম, আমরা লাভবান হতাম। কিন্তু বাংলাদেশের বাস্তবতায় সেটি হয়নি। 

“হয়নি বলে আমাদের এই অবিশ্বাস-সন্দেহের একটি দেয়াল তৈরি হয়েছিল, এটা ভাঙা দরকার ছিল। সেটই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের নরেন্দ্র মোদী ভেঙেছেন।” 

দুই দেশের মধ্যে অনেকগুলো অমীমাংসিত সমস্যার সমাধান করার বিষয়টি তুলে ধরে কাদের বলেন, “দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক যদি বন্ধুত্বপূর্ণ হয়, তাহলে আলাপ-আলোচনা করে সবকিছু সমাধান সম্ভব। আমরা সীমান্ত সমস্যার সমাধান করতে পেরেছি। বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকায় যে সন্ত্রাসবাদ চলত, সেটি বন্ধ হয়েছে।

“একইভাবে ভারতও কোনো সুযোগ দিচ্ছে না। তারাও এই বিষয়ে জিরো টলারেন্স। সীমান্তে সন্ত্রাসবাদ, যেটা দুই দেশের মধ্যে ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে আসত, সেটা আর হচ্ছে না।” 

দুই দেশের স্বার্থেই সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে মন্তব্য করে কাদের বলেন, “মুখ দেখাদেখি বন্ধ করলে এবং সম্পর্ক নষ্ট করলে আমরা সামনের দিকে এগোতে পারব না। আমাদের ব্যবসা বাণিজ্যে পিছিয়ে থাকবে।” 

বাংলাদেশে ভারতের আরও বেশি বিনিয়োগ প্রত্যাশা করছেন সড়ক মন্ত্রী। তিনি বলেন, “আপনারা যদি সেভাবে বিনিয়োগ করেন, তাহলে আমাদের দূরে যাওয়ার দরকার নেই। সড়ক ও রেল, এই দুই বিষয়ে ভারতের সঙ্গে কানেক্টিভিটি অনেক এগিয়ে গেছে। এই ট্রানজিট সুবিধার জন্য ব্যবসা বাণিজ্যে উভয়ই লাভবান হচ্ছি। আমি ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই আমাদের দেশের স্বার্থে উন্নয়নের স্বার্থে।” 

নভেম্বরের মধ্যে ভারত থেকে ১০০টি দ্বিতল বৈদ্যুতিক দ্বিতল এসি বাস আনার কথা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী। 

বাংলাদেশে ভারতের হাই কমিশনার প্রনয় ভার্মা, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।