“উনি কেবিনে আছে। মেডিকেল বোর্ড উনার বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার দিয়েছেন। সেগুলোর কাজ চলছে,” বলেন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক।
Published : 12 Sep 2024, 05:43 PM
দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যেই বিদেশে পাঠানোর বিষয়টি পর্যালোচনা করছে মেডিকেল বোর্ড।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন এ তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘‘ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) গত সাড়ে ৪ বছর যাবত, বিভিন্ন সময়ে ৪৭৯তম দিন এভারকেয়ার হাসপাতালে। আমরা উনাকে ২১ অগাস্ট রিলিজড করে বাসায় নিয়ে এসেছিলাম, গতকালকে (বুধবার) আবার উনাকে ভর্তি করতে হয়েছে।
‘‘কথা আসবে, আপনারা উনাকে বাইরে নিচ্ছেন না কেন? একজনকে বাইরে নিতে হলে শারীরিক সুস্থতা প্রয়োজন। প্লেনে উঠতে হলে নেগেটিভ প্রেসার সহ্য করার মত সুস্থতা থাকতে হয়, ফ্লাই করার জন্য নেগেটিভ প্রেসার আছে সেটা কতটুকু? ল্যান্ড করার সময়ে কতটুকু উনি সহ্য করতে পারবেন, সেটি গল্পের বিষয় না, সেটি একাডেমিক, প্রফেশনাল ও সায়েন্টিফিক বিষয়।
মেডিকেল বোর্ড সেই বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে দেশি-বিদেশি সদস্যরা আলোচনা করছেন এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে শারীরিকভাবে উনি একটু সুস্থ হলেই উনাকে যত দ্রুত সম্ভব বাইরে নেওয়ার যে চেষ্টা একটা উন্নত সেন্টারে ফলোআপের জন্য।”
কেন উন্নত সেন্টারে নেওয়া জরুরি সেই ব্যাখ্যায় অধ্যাপক জাহিদ বলেন, ‘‘কারণ উনার কিছু রোগের সৃষ্টি হয়েছে যেগুলো সত্যিকার অর্থে বাইরের আধুনিক সেন্টারে নিয়ে দেখানো ছাড়া এবং তাদের (বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের) ওপিনিয়ন নেওয়া ছাড়া আর কোনো গত্যন্তর নাই।”
“ম্যাডামের জন্য আপনারা সবাই দোয়া করবেন। উনি আাপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছেন।”
খালেদা জিয়ার রোগের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে অধ্যাপক জাহিদ অভিযোগ করেন, “শেখ হাসিনার সরকার ম্যাডামকে জেলে নেওয়ার পর একাকীত্ব, উনার চিকিৎসা না করানো এবং উনাকে আস্তে আস্তে একদম সংকটাপন্ন একটা অবস্থায় রেখে দেওয়া বিগত সরকারের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার অংশ ছিল
“হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিল, বিএসএমএমইউতে; সেখানে যে চিকিসা হওয়া উচিত ছিল কোনো কিছুই সঠিকভাবে হয় নাই। যার জন্যই ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা এই পর্যায়ে পৌঁছেছে, উনাকে কয়েকদিন পরপরই দেখা যাচ্ছে হাসপাতালে নিতে হচ্ছে।”
বুধবার মাঝ রাতে অর্থাৎ রাত ২টায় গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’ থেকে বিএনপি চেয়ারপারসনকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।
জাহিদ বলেন, মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাতে ম্যাডামকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। উনি কেবিনে আছে। মেডিকেল বোর্ড উনার বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার দিয়েছেন। সেগুলোর কাজ চলছে।
অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে চিকিৎসাধীন আছেন খালেদা জিয়া।
৭৯ বছর বয়সি খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস ও কিডন জটিলতা, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন।
লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপারসনের রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয় গত বছরের ২৭ অক্টোবর। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে খালেদা জিয়ার রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল।
তার স্বাস্থ্য কিছুটা স্থিতিশীল হলে তাকে পাঁচ মাসের বেশি সময় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছিল।
গত ২৫ জুন এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বাসানো হয়।