দুর্নীতিগ্রস্ত বাজার ব্যবস্থায় একজন ব্যবসায়ী চাইলেই কম দামে পণ্য বিক্রি করতে পারবেন না। সেজন্য তার জীবন বিপন্ন হবে; যেমন হয়েছে রাজশাহীতে, খুন হয়েছেন মাংসবিক্রেতা মামুন হোসেন।
Published : 25 Mar 2024, 03:00 PM
আলোচিত মাংসবিক্রেতা খলিলুর রহমান ২০ রোজার পরে আর গরুর মাংস বিক্রি করবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন। প্রশ্ন হলো, তিনি কার কাছে হেরে গেলেন বা কেন তিনি হার মানলেন? স্রোতের বিপরীতে হাঁটতে গিয়ে এটি কি তার একধরনের আত্মসমর্পণ?
যাদের বয়স এখন ৪০ বা তার কিছু কম-বেশি, তারাও ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে গরুর মাংস কিনেছেন।
কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) তথ্য অনুসারে, দেশের বাজারে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ৬০ টাকা কেজিতে গরুর মাংস পাওয়া যেত। ২০০১ সালেও ছিল একশো টাকার কম। ২০০৬ সালে এক লাফে গরুর মাংসের দাম বেড়ে হয় দেড়শো টাকা। ২০১০ সালে আড়াইশো টাকা। এরপর ক্রমাগত বাড়তে থাকে বাঙালির অতি পছন্দের এই মাংসের দাম এবং ধীরে ধীরে এটি নিম্নমধ্যবিত্ত তো বটেই, মধ্যবিত্তেরও নাগালের বইরে চলে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
এখন গরুর মাংসের কেজি সাড়ে সাতশো টাকা; উৎসবের সময় যা আটশো টাকা স্পর্শ করে। ফলে একসময় যারা প্রতি শুক্রবার গরুর মাংস কিনতেন বা কিনতে পারতেন, তাদের অধিকাংশের কাছেই গরুর মাংস এখন বিলাসদ্রব্য। একই অবস্থা জাতীয় মাছ ইলিশেরও। কী কারণে এই মাছটি মধ্যবিত্তেরও নাগালের বাইরে চলে গেলো, সেটি বিরাট গবেষণার বিষয়। ভরা মৌসুমে যখন বাজার ইলিশে সয়লাব হয়ে যায়, তখনও এর দাম থাকে আকাশছোঁয়া। ফলে গরুর মাংসের মতো ইলিশ মাছও এখন বিলাসদ্রব্য। অগণিত মানুষের হাহাকারের বস্তু।
১৯৯৬ থেকে ২০২৪—এই ২৮ বছরে গরুর মাংসের দাম বেড়েছে কেজিতে প্রায় সাতশো টাকা। দেশের আর কোনো খাদ্যদ্রব্য বা নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির এমন ভয়াবহ চিত্র চোখে পড়ে না। একটি পণ্যের দাম ২৮ বছরের ব্যবধানে কী করে এত বেড়ে যায়—সেটি অর্থনীতির কোনো সূত্রেই হয়তো মিলবে না।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে লেখা হয়েছে, ‘গত কয়েক বছরে গবাদিপশুর অবৈধ বাণিজ্য রোধের প্রত্যক্ষ প্রভাবে গবাদিপশু হৃষ্টপুষ্টকরণের বাণিজ্যিক উদ্যোগ ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত হয়েছে। ফলস্বরূপ, বাংলাদেশ মাংস উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। গত এক দশকে মাংস উৎপাদন ৪.২৫ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরে ৮৪.৪০ লক্ষ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে এবং জনপ্রতি প্রাপ্যতা দাঁড়িয়েছে ১৩৬.১৮ গ্রাম/দিন।’
প্রতি বছর কোরবানির ঈদের আগে সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় যে হিসাব দেয়, সেখানে দেখা যায়, দেশে কোরবানিযোগ্য পশুর সরবরাহ চাহিদার তুলনায় বেশি আছে। যে কারণে ভারত থেকে গরু আমদানি নিরুৎসাহিত করা হয়। যুক্তি দেয়া হয়, গরু বা গরুর মাংস আমদানি করলে তাতে দেশীয় খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কিন্তু দেশীয় খামারিদের সুরক্ষা দিতে গিয়ে কোটি কোটি মানুষকে গরুর মাংস খাওয়া থেকে বঞ্চিত রাখা কী ধরনের রাষ্ট্রীয় নীতি—সেই প্রশ্নও এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। তাছাড়া ডেইরি ফার্মের নামে ব্যাংক থেকে মোটা অংকের ঋণ নিয়ে কতজন সফল খামারি হয়েছেন আর কতজন ওই টাকা দিয়ে অন্য ব্যবসা করছেন; কতজন ব্যাংক ঋণ ফেরত দিয়েছেন আর কতজন টাকা মেরে দিয়েছেন—সেই হিসাবটিও সরকারের কাছে থাকা দরকার।
গরুর মাংস নিয়ে যখন সারা দেশে তুলকালাম তখন তারকা বনে গেছেন একজন খলিলুর রহমান। রাজধানীর উত্তর শাহজাহানপুরের একজন মাংস ব্যবসায়ী। তার দোকানের নাম ‘খলিল গোস্ত বিতান’। ব্যতিক্রমী ও জনদরদি এবং একইঙ্গে সফল ব্যবসায়ী হিসেবে সর্বমহলে প্রশংসিত খলিল। কারণ সারা দেশের বিক্রেতারা যে দামে গরুর মাংস বিক্রি করেন, খলিল বিক্রি করেন তার চেয়ে অনেক কম দামে। প্রশ্ন হলো, খলিল কীভাবে কম দামে বিক্রি করেন বা করতে পারেন? অন্যরা কেন করেন না বা পারেন না? খলিল কম দামে বিক্রি করে কি লোকসান করেন? তাতে তার কী লাভ?
মূলত গত বছরের শেষদিকে যখন গরুর মাংসের দাম আকাশচুম্বি হয়ে যায়, তখনই খলিল আলোচনায় আসতে শুরু করেন। এরপর তাকে নিয়ে গণমাধ্যমে অনেক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় এবং সোশ্যাল মিডিয়ায়ও তিনি দারুণভাবে প্রশংসিত হতে থাকেন।
সবশেষ রোজার মাসে তিনি প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫৯৫ টাকায় বিক্রির ঘোষণা দেন। শুরুর দিনই ব্যাপক সাড়া পান। সেদিনই তার দোকানে বিক্রির পরিমাণ ছাড়িয়ে যায় অর্ধকোটি টাকা। তবে সব রেকর্ড ভেঙে যায় গত ১৫ মার্চ শুক্রবার। ছুটির দিনে তার বিক্রি ছাড়ায় কোটি টাকা, আর সে জন্য গরু জবাই করতে হয় ৫০টি।
খলিল অর্থনীতিবিদ নন। অর্থনীতিতে তিনি পড়াশোনাও করেননি। কিন্তু বাজার অর্থনীতির সহজ সূত্রটি তিনি জানেন। সেটি হলো বেশি লাভে কম বিক্রির চেয়ে কম লাভে বেশি বিক্রি করা লাভজনক। খলিলের ভাষায়: ছাড় দিয়ে মাংস তখনই বিক্রি সম্ভব হয়, যখন বেচাকেনা বেশি হয়। কারণ, ছাড়ে মাংস বিক্রি করলে লাভ কম হয়। তবে রোজায় মূল্যছাড় দেওয়ার পর মাংস কিনতে মানুষের আগ্রহ বেড়েছে, ফলে বেড়েছে বেচাবিক্রিও।
অর্থনীতির এই সহজ সূত্র প্রয়োগের পাশাপাশি খলিল মানবিক দিকটিও খেয়াল রাখছেন। অর্থাৎ দাম কম বলেই যাতে কোনো ক্রেতা সেই সুযোগ নিয়ে অনেক বেশি মাংস কিনে নিয়ে অন্য ক্রেতাদের বঞ্চিত করতে না পারেন, খলিল সেজন্য একজন ক্রেতার কাছে সর্বোচ্চ পাঁচ কেজির বেশি মাংস বিক্রি করেন না। তিনি চান, লাইনে দাঁড়ানো সবাই যেন মাংস নিয়ে ফিরতে পারেন। এ কারণে খলিলের দোকানের সামনে ক্রেতাদের যে দীর্ঘ সারি তৈরি হয়, সেটি শুধু রাজধানী ঢাকা নয়, দেশের আর কোথাও দেখা যায় না। পৃথিবীর আর কোনো দেশেই গরুর মাংস কিনতে গিয়ে মানুষের এমন দীর্ঘ লাইন চোখে পড়ে কি না সন্দেহ। যদি না হয় তাহলে খলিল সারা পৃথিবীর বাজার অর্থনীতির জন্যই একটি ইতিবাচক উদাহরণ।
খলিল বাজার অর্থনীতির সেই কৌশলটিও জানেন যেখানে এক টাকা কমের কারণেও পণ্যের দামটি রাউন্ড ফিগারের বাইরে থাকে। যেমন একসময় বাটার জুতায় গায়ে দাম লেখা থাকতো ৪৯৯ টাকা। ৯৯৯ টাকা বা এরকম। অর্থাৎ পাঁচশো টাকার কম। এক হজার টাকার কম। সাধারণত পাঁচশো টাকার নোট দিয়ে ক্রেতারা এক টাকা ফেরতও নিতেন না। কিন্তু তারপরও বাটা কেন জুতার দাম ৫০০ বা ১০০০ না লিখে এক টাকা কম লিখতো যাতে এটি ক্রেতার মনস্তত্ত্বে প্রভাব বিস্তার করে। এখানে ট্যাক্সেরও কিছু বিষয় কাজ করে। খলিলও বাজার অর্থনীতির এই কৌশলটি কাজে লাগিয়ে গরুর মাংস বিক্রি করছেন ৫৯৫ টাকায়। যাতে লোকেরা বলতে পারে যে, খলিলের দোকানে গরুর মাংসের কেজি ছয়শো টাকারও কম!
কিন্তু সবশেষ খবর বলছে, খলিল আর মাংস বিক্রি করবেন না। তার ভাষায়, ‘যে মাংস ব্যবসায়ীদের জন্য এতকিছু করলাম, তারা এখন কেউ আমার পাশে নেই। বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম এতদিন আমার কাছে কাছে থাকলেও এখন আর নেই। সরকারও আর আমার সঙ্গে নেই। ফলে আমি আর মাংস ব্যবসাই করব না। কথা দিচ্ছি, আগামী ২০ রোজার পর আর খলিল মাংস বিতান থাকবে না। জীবনেও আর মাংস ব্যবসা করবো না।’ (সাম্প্রতিক দেশকাল, ২৫ মার্চ ২০২৪)।
প্রশ্ন হলো, খলিল কার কাছে হেরে গেলেন? কোন সিস্টেমের কাছে? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে গেলে বাংলাদেশের বিদ্যমান বাজারব্যবস্থাটি বুঝতে হবে। এখানে মোটা দাগে কয়েকটা সমস্যা প্রধান। যেমন:
১. অতি মুনাফালোভী অসৎ ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য এবং সিন্ডিকেট। অর্থাৎ ব্যবসায়ীদের একটি গোষ্ঠী একজোট হয়ে কোনো একটি পণ্যের দাম এমন নির্ধারিত অংকে আটকে রাখেন, যাতে এর চেয়ে কম দামে কেউ বিক্রি করতে না পারেন। এজন্য তারা অবৈধ মজুতদারিরও আশ্রয় নেন। কোনো একটি পণ্যের দাম কেজিতে দশ টাকা বাড়লেও যখন সেটি শত শত টন বিক্রি হয়, তখন একদিনে কোটি কোটি টাকা তারা বাড়তি মুনাফা তুলে নেন। এরকম উদাহরণ অসংখ্য।
২. চাঁদাবাজি। সেটি পণ্য পরিবহন থেকে শুরু করে বাজারে বিক্রি পর্যন্ত।
৩. দুর্নীতিগ্রস্ত ‘ব্যবসায়ীবান্ধব ‘ অর্থনীতি।
৪. একই বাজারে একই পণ্য কিনতে বৈধ-অবৈধ পথে টাকা উপার্জনকারীদের সঙ্গে স্বল্প আয়ের সৎ লোকদের ‘কমপিট’ করা। যে কারণে খুব ব্যতিক্রম ছাড়া বাজারে কোনো পণ্যই অবিক্রিত থাকে না। কেননা পণ্যের দাম যাই হোক, সেটি কেনার লোকের অভাব নেই। বাজারে পয়সাওয়ালা ক্রেতারা সংখ্যা এতই বেশি যে, দাম বৃদ্ধির কারণে পণ্য বয়কটের ডাক দিলেও বাজারে তার খুব একটা প্রভাব পড়ে না।
এরকম বাস্তবতায় খলিলুর রহমানের মতো কোনো ব্যবসায়ী যখন কম মুনাফা করে অনেক বেশি বিক্রি করেন, তখন তার সরাসরি প্রভাব পড়ে তার সতীর্থ ব্যবসায়ীদের ওপর। ফলে তারা গোস্বা হন। ক্ষুব্ধ হন। কেননা খলিল যা করছেন তা বাজার সিন্ডিকেটকে চ্যালেঞ্জ করছে। ফলে তবে কম দামে বা কম লাভে মাংস বিক্রি করায় খলিল হত্যার হুমকিও পেয়েছেন। তাকে হুমকিদাতাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তারও করেছে। এ সময় খলিল জানিয়েছিলেন, তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আতঙ্কে ঘর থেকে বের হতে পারছেন না।
খলিলের ওপর হুমকির মধ্য দিয়ে আরেকটি বিষয় পরিষ্কার হয় যে, মুক্তবাজার অর্থনীতির কথা বলা হলেও দুর্নীতিগ্রস্ত বাজার ব্যবস্থায় একজন ব্যবসায়ী চাইলেই কম দামে পণ্য বিক্রি করতে পারবেন না। সেজন্য তার জীবন বিপন্ন হবে; যেমন হয়েছে রাজশাহীতে, খুন হয়েছেন মাংসবিক্রেতা মামুন হোসেন। কম দামে মাংস বিক্রি করার দ্বন্দ্বে গত জানুয়ারিতেই রাজশাহীর বাঘার আড়ানী বাজারে খুন হয়েছেন মামুন হোসেন নামে এক বিক্রেতা। তিনি গরুর মাংস বিক্রি করছিলেন ৬৫০ টাকা কেজি দরে। আর তার ফুফাতো ভাই খোকন কসাই বিক্রি করছিলেন ৭০০ টাকা দরে। দুজনই ক্রেতাদের ডাকছিলেন। এ নিয়ে দ্বন্দ্ব, বাগ্বিতণ্ডা। একপর্যায়ে খোকন তার মামাতো ভাই মামুনের বুকে গরু জবাই করার ছুরি বসিয়ে দেন বলে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে।
মোদ্দা কথা, খলিল যা করছেন সেটি সামগ্রিকভাবে সারা দেশের বাজারে খুব একটা প্রভাব ফেলছে না। কারণ তার কাছ থেকে যারা মাংস কিনছেন, কেবল তারাই লাভবান হচ্ছেন অথবা কম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। রাজধানী এবং দেশের অন্যান্য স্থানে যাদেরকে সাতশো বা সাড়ে সাতশো টাকায় মাংস কিনছেন, তাদের কী হবে? সবার পক্ষে কি খলিলের দোকানে গিয়ে মাংস কেনা সম্ভব?
সম্ভব নয়। কিন্তু তারপরও মানুষ খলিলের এই উদ্যোগের প্রশংসা করছে কারণ তিনি স্রোতের বিপরীতে গিয়ে উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন যে, ৫৯৫ টাকা কেজিতে গরুর মাংস কিনেও লাভ করা যায় এবং অন্য ব্যবসায়ীদের চেয়ে ভালো থাকা যায়। কিন্তু তারপরও খলিল হেরে গেলেন অথবা হার মানলেন।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামানের প্রশ্ন, ভারত-পাকিস্তানে গরুর মাংসের দাম কম হলে বাংলাদেশে এত বেশি হবে কেন? গত ৩ ডিসেম্বর রাজধানীতে এক সেমিনারে তিনি বলেন, ভারত-পাকিস্তান সাড়ে ৪০০ টাকায় গরুর মাংস পাওয়া যায়। সুতরাং বাংলাদেশে প্রতি কেজি গরুর মাংসের দাম কোনোভাবেই ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা হতে পারে না। তাতে ব্যবসায়ীরা যতই যুক্তি দেন না কেন? এজন্য গবেষণা হওয়া দরকার। (চ্যানেল টোয়েন্টিফোর, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩)।
সত্যিই গবেষণা হওয়া প্রয়োজন নাকি সরকার এই প্রশ্নের উত্তর জানে? গবাদি পশু লালন-পালনের খরচ কি বেড়ে গেছে? গোখাদ্যের দাম কি অনেক বেশি? গোখাদ্য এবং অন্যান্য ওষুধের বাজার কারা নিয়ন্ত্রণ করে? তাদের ওপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ আছে? একটি গরু একজন বিক্রেতার হাত হয়ে বাজারে মাংস হওয়া পর্যন্ত ধাপগুলোয় কত জায়গায় চাঁদা দিতে হয়? এই চাঁদার ভাগ কোথায় কোথায় যায়—এসব প্রশ্নের উত্তর কি রাষ্ট্রের কাছে রয়েছে? এসব প্রশ্নের সুরাহা করা না গেলে একজন খলিলের এই উদ্যোগ গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশংসিত হবে বটে, তাতে ১৮ কোটি লোকের বাজারে যে খুব বড় কোন পরিবর্তন আসবে না, তার প্রমাণ খলিল নিজেই। কারণ তিনিও আর মাংসের ব্যবসা না করার ঘোষণা দিয়েছেন। তার মানে অতি মুনাফা, চাঁদাবাজি ও দুর্নীতিগ্রস্ত বাজারব্যবস্থার কাছে খলিল হেরে গেলেন?