অখণ্ড ভারত গঠনের যে লক্ষ্য তুলে ধরা হচ্ছে, তা পূরণ হলে বাংলাদেশের স্বাধীনসত্তা তো লোপ পাবেই, সে সঙ্গে সার্বভৌমত্ব হারাবে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, মিয়ানমার এবং শ্রীলঙ্কা।
Published : 04 Jun 2023, 07:37 PM
‘অখণ্ড ভারত’ বলে একটা মানচিত্র এবার ভারতের নতুন সংসদ ভবনের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ‘অধিষ্ঠান’ করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ভারতের বর্তমান সরকারে তো বটেই, ভারতজুড়ে কট্টর হিন্দুত্ববাদের প্রভাব ও দাপটের স্পষ্ট ধারণা পাওয়া গেল।
কথিত এই অখণ্ড ভারতের মানচিত্রের পরিকল্পনা এবং তা জনসমক্ষে প্রচারের উদ্যোগ নেওয়ার কাজ চলছে কয়েক বছর ধরে। এবার তা সংসদ ভবনে ম্যুরাল হিসেবে স্থাপনের মাধ্যমে একটি কড়া বার্তা দেওয়া হলো ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দলগুলো এবং সুশীল সমাজকে। আতঙ্ক এবং উদ্বেগের কারণ হলো প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্যও, কেননা, কথিত অখণ্ড ভারতের সেই মানচিত্রে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, নেপাল, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারকে ভারতের অংশ হিসেবে দেখানো হয়েছে।
ইতোমধ্যে নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কুমার দহলের (প্রচণ্ড) ভারত সফরের সময় এ ম্যুরাল নেপালের রাজনীতিতে ঝড় তুলেছে। ভবিষ্যতে ভারতের এই ভূমিকা অন্য প্রতিবেশী দেশগুলোতেও যে বড় হয়ে দেখা দেবে এ নিয়ে সংশয়ের অবকাশ নেই। অখণ্ড ভারতের এমন ধারণা বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মতো মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশদুটোতে জঙ্গি তথা ইসলামি উগ্রবাদকে আরও উসকে দিতে পারে।
দ্বিতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর নরেন্দ্র মোদী নতুন সংসদ ভবন তৈরির উদ্যোগ নেন। তবে কোভিড পরিস্থিতিজনিত অর্থনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যে প্রায় এক হাজার কোটি রুপি খরচ করে এ ভবন তৈরির সিদ্ধান্ত শুরু থেকেই সমালোচনার মুখে পড়ে।
হিন্দুত্ববাদের প্রবক্তা বিনায়ক দামোদর সাভারকরের জন্মদিন ছিল ২৮ মে। এই দিনটিতেই নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন করার সিদ্ধান্ত নেন নরেন্দ্র মোদী। শুধু তাই নয়, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাখা হয়নি দেশ ও সংসদের অভিভাবক রাষ্ট্রপতিকে। এই ইস্যুতে বিরোধীদলগুলো সরব হয়। প্রতিবাদ হিসেবে ২৪টি রাজনৈতিক দল ওই অনুষ্ঠান বর্জন করে। মোদীর পার্লামেন্ট ভবন উদ্বোধনের সিদ্ধান্তকে গণতন্ত্রবিরোধী উল্লেখ করে প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেস। একে পার্লামেন্টের প্রতি সরাসরি অপমান বলেও অভিহিত করে কংগ্রেস। একই সঙ্গে ভারতের প্রাচীন এই রাজনৈতিক দলটি রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর হাতে নতুন পার্লামেন্ট ভবন উদ্বোধনের দাবিও তুলেছিল।
আম আদমি পার্টি থেকে অভিযোগ করা হয়, কেবল ভোট পাওয়ার স্বার্থে একজন আদিবাসী নারীকে রাষ্ট্রপতির আসনে বসালেও তাকে কাজ করার কোনো সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। রাষ্ট্রপতিকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না জানানো দেশটির আদিবাসী, দলিত এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রতি অপমান বলেও অভিযোগ করে বিরোধীদলগুলো।
অবশ্য এর আগে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে পার্লামেন্ট ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানেও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে। এসবের মধ্য দিয়ে বিজেপি সরকার ভারতের রাষ্ট্রপতির পদকে কেবলমাত্র প্রতীকসর্বস্ব করে ফেলেছে বলেও অভিযোগ বিরোধীদের।
ভারত সাংবিধানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হওয়া সত্ত্বেও হিন্দু রীতিতে পূজা ও হোমযজ্ঞ করে নতুন সংসদভবনটির উদ্বোধন করা হয়েছে।বিতর্কে যুক্ত হয় এই ইস্যুও। আর সংসদভবনে অখণ্ড ভারতের মানচিত্রের ম্যুরাল স্থাপন করে সব বিতর্কের আগুনে ঘৃতাহুতি দিয়েছে ক্ষমতাসীন বিজেপি এবং তাদের সমমনা হিন্দু ধর্মবাদী দলগুলো।
অনেকের মনে থাকার কথা গতবছর ভারতের স্বাধীনতার প্লাটিনাম জুবিলি উদ্যাপনের প্রাক্কালে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবত অখণ্ড ভারত গঠনের যে লক্ষ্যমাত্রা তুলে ধরেছিলেন তা পূরণ হলে বাংলাদেশের স্বাধীনসত্তা তো লোপ পাবেই, সে সঙ্গে সার্বভৌমত্ব হারাবে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, মিয়ানমার এবং শ্রীলঙ্কাও। স্বাধীনতার ৭৫তম বার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে গত বছরের অগাস্টে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই ‘লক্ষ্য’ পূরণ প্রসঙ্গে মোহন ভাগবত বলেছিলেন, 'অখণ্ড ভারত গঠনের স্বপ্নপূরণের পথে ভয়ই একমাত্র বাধা। যেদিন এই ভয় কাটানো যাবে, সেদিনই অখণ্ড ভারত গড়া সম্ভব হবে।’ তার কথিত সেই অখণ্ড ভারত হবে মূলত ‘হিন্দু রাষ্ট্র’। তার চরিত্র ও সংবিধান কেমন হবে, সেই খসড়াও ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। স্বাধীনতা দিবসের দুদিন আগে বারাণশীতে খসড়া সংবিধান প্রকাশ করেন শঙ্করাচার্য পরিষদের পীঠাধ্যক্ষ ও সভাপতি স্বামী আনন্দ স্বরূপ। এ সময় তিনি বলেন, 'অখণ্ড ভারতে বসবাসকারী মুসলমান ও খ্রিষ্টানদের ভোটাধিকার থাকবে না। ভোটদানের অধিকার ছাড়া এই দুই সম্প্রদায়ের সবাই অন্যদের মতো সব নাগরিক সুযোগ-সুবিধা ও অধিকার ভোগ করতে পারবেন। অখণ্ড ভারতের রাজধানী হবে বারাণসী। নতুন ধর্ম সংসদও গড়ে তোলা হবে সেখানে।'
তাদের সেই অখণ্ড ভারতের সংবিধানের খসড়া তৈরি করছেন ভারতের ৩০ জন ধর্মগুরু ও পণ্ডিত। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রয়াগরাজের (এলাহাবাদের পরিবর্তিত নাম) ধর্ম সংসদে এই খসড়া প্রস্তুতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তাদের ঘোষণা অনুযায়ী এই বছর প্রয়াগরাজে মাঘী (মাঘ মাসের) পূর্ণিমা মেলায় এই খসড়া সংবিধান চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত হবে বলে আনন্দ স্বরূপ জানালেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। তিনি জানিয়েছিলেন, অখণ্ড ভারতের প্রত্যেককে বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ নিতে হবে। কৃষিক্ষেত্র থাকবে আয়করমুক্ত।
খসড়া সংবিধানের প্রচ্ছদে অখণ্ড ভারতের যে মানচিত্র ছাপা হয়েছিল তাতে পশ্চিমে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান, পূর্বে মিয়ানমার ও বাংলাদেশ এবং দক্ষিণে শ্রীলঙ্কার কোনো অস্তিত্বই রাখা হয়নি। দেশগুলোকে ভারতের অন্তর্গত দেখানো হয়েছে। এই মানচিত্রটিই এখন ম্যুরাল আকারে ভারতের নতুন সংসদভবনে শোভা পাচ্ছে।
তাদের প্রস্তাবিত পতাকার রং গৈরিক। যদিও তা অখণ্ড ভারতের জাতীয় পতাকা হবে কি না, তা স্পষ্ট করা হয়নি। আনন্দ স্বরূপদের মতে, 'ভারতবর্ষ থেকে যেসব দেশ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, তাদের সবাইকে নিয়েই গঠিত হবে অখণ্ড ভারত, যা হবে হিন্দু রাষ্ট্র। সেই রাষ্ট্রে ১৬ বছর বয়সীদের ভোটাধিকার থাকবে। ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতার বয়স হবে ২৫। বর্ণপ্রথা অনুযায়ী দেশ শাসিত হবে। ব্রিটিশ আমলের কোনো আইনের অস্তিত্ব থাকবে না। শিক্ষাব্যবস্থায় আনা হবে জ্যোতিষচর্চা, গণিত, আয়ুর্বেদ। চর্চা হবে ভূগর্ভ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানেরও।'
২০৪৭ সালে, অর্থাৎ স্বাধীনতার শতবর্ষে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে চায় তারা। বিজেপির চালিকা শক্তি আরএসএস প্রধান বিভিন্ন স্থানে তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘একমাত্র বাধা হলো ভয়। ভয় কাটলেই লক্ষ্য পূরণ সম্ভব। নিজেই নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন, যে দেশ এত বিশাল ছিল, তা কী করে এত কমে গেল? সংস্কৃত ব্যাকরণবিদের (পাণিনি) জন্মস্থান কেন ভারতের অন্তর্গত নয়? ভারতের প্রকৃত ইতিহাস জানতে হবে। সিন্ধু–সরস্বতী সভ্যতার বয়স ব্রিটিশ ঐতিহাসিকদের মতে সাড়ে তিন হাজার বছর। কিন্তু সেই সভ্যতার প্রকৃত বয়স ৯ হাজার বছর। সেই সভ্যতা ছিল সর্বগামী। তার ব্যাপ্তি ছিল সর্বত্র।’
গত বছরের ১৪ এপ্রিল হরিদ্বারে হিন্দুত্ববাদীদের এক সম্মেলনেও অখণ্ড ভারত গড়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, ‘দেশের জন্য এক হয়ে আমরা সবাই যদি বাঁচতে ও মরতে শিখি, তা হলে অতিদ্রুত এই লক্ষ্য পূর্ণ হবে। এখন যে গতিতে চলছি, তাতে আর একটু গতি সঞ্চারিত হলে ২০–২৫ বছরের মধ্যে স্বপ্ন সফল হবে। আরও একটু বাড়তি গতিতে চললে অর্ধেক সময় কমে যাবে।’
দেখা যাচ্ছে ধর্মনিরপেক্ষ এবং গণতান্ত্রিক বৃহৎ রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের যে পরিচিতি ছিল তা মুছে ফেলার সকল আয়োজন যেন সম্পন্ন করেছে বিজেপি ও তার মিত্র দলগুলো। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, সেই সঙ্গে কিছু মন্ত্রী, দলের নেতা এবং বিজেপি ও তার মিত্রদল শাসিত বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা যেভাবে প্রকাশ্যে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক বক্তব্য দেন, ঘৃণা ছড়ান তাতে ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক ঐতিহ্য বিলীন হওয়ার পথে বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
ভারতের প্রসঙ্গে বলার পর অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন পাকিস্তান, আফগানিস্তান, মিয়ানমার এমনকি বাংলাদেশ নিয়ে কি শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই? আছে, অবশ্যই আছে। তবে ভারতের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ এ কারণে যে, ভারত এই অঞ্চলের একটি পরাশক্তি। শক্তিশালী এই বৃহৎ প্রতিবেশীর আচরণ বা ভূমিকার ওপর ছোট ও কম শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর ভালো-মন্দ অনেক কিছু নির্ভর করে। দেশগুলোর স্থিতিশীলতার জন্যও তা গুরুত্বপূর্ণ। প্রশ্ন উঠতে পারে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও মিয়ানমারে উগ্র, মৌলবাদী এবং সামরিক বাহিনী দেশ চালালে ভারতের কী দায় পড়েছে পূর্ণ গণতান্ত্রিক ও উদারনীতির ভিত্তিতে দেশ পরিচালনার। উত্তর হচ্ছে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ক্ষতি যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। অবশিষ্ট নেই আর ক্ষতি হওয়ার। বরং এই রাষ্ট্রদুটোই অন্য রাষ্ট্রের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে পাকিস্তান (আফগানিস্তানও এখন করতে পারে) কীভাবে সন্ত্রাসকে লালনপালন করে তা উদাহরণ দিয়ে বোঝাবার দরকার নেই। শ্রীলঙ্কার যে জাতিগত সংঘাত থেকে মুক্ত হয়েছিল তা পুনরায় জেগে উঠতে পারে। মিয়ানমার সামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রিত একটি দেশ, সেখানে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে কি না তা নির্ভর করে আরেক পরাশক্তি চীনের ওপর। বাকি রইল বাংলাদেশ। একটি উদার, মানবিক, ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পেছনে যে দেশটির অবদান সবচেয়ে বেশি সেটি হলো গণতান্ত্রিক, উদার ও ধর্মনিরপেক্ষ ভারত।
যে স্বপ্ন ও আদর্শ নিয়ে ১৯৭১ সালে বিশ্বের বুকে একটি জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয়েছিল সে রাষ্ট্রটিকে হত্যা করা হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্য দিয়ে। এরপর এই রাষ্ট্রটিকে পাকিস্তানের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে অবিরত। ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক শক্তিকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে এমন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাতে রাষ্ট্রের মূল চরিত্র ও আদর্শটিই হারিয়ে গেছে। ভারতে আজ ক্ষমতায় থেকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ধর্মান্ধতা, সাম্প্রদায়িকতা ও ঘৃণা উসকে দেওয়া হচ্ছে আর অন্যদিকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, তাঁর সরকার ও দল অন্তত এটুকু বলেন, 'ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার'।
ভারতের সরকার জনগণকে কট্টর পথে ধাবিত করছে আর অন্যদিকে বাংলাদেশ সরকার জনগণকে কট্টর, উগ্রবাদী পথ থেকে ফেরাবার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী, মৌলবাদী ও জঙ্গিগোষ্ঠীর এক নম্বর শত্রু শেখ হাসিনা। কাজেই ভারতবিরোধী বিপুল জনসংখ্যার বাংলাদেশের জন্য ভারতের রাষ্ট্রক্ষমতায় অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ দলের ক্ষমতায় থাকা অধিক গুরুত্বপূর্ণ।
ভারতে এখন সমস্যা কম নেই। বৈশ্বিক মন্দার কারণে অর্থনৈতিক সমস্যার সঙ্গে রাজনৈতিক সমস্যা বিস্তর। মণিপুরে দুসপ্তাহজুড়ে সহিংসতা চলছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করলে দেখা যায় এমন আগুনের জন্য আরও কিছু অঞ্চল উত্তপ্ত হয়ে আছে।
অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন, হাজার হাজার বছরের ভারতীয় ঐতিহ্যকে পদদলিত করে রাষ্ট্রকে ধর্মীয় বাতাবরণে মুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা আখেরে কোনো সুফল বইয়ে আনবে না। তাতে রাষ্ট্রের অখণ্ডতাই হুমকির মুখে পড়বে।
‘অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন’ সংক্ষেপে মিম নামে পরিচিত রাজনৈতিক দলের প্রধান ও সংসদ সদস্য আসাউদ্দিন ওয়েইসির বক্তব্যটি এক্ষেত্রে অধিক যুৎসই বলে মনে হচ্ছে আমার কাছে। তিনি বলেছিলেন, 'আগে চীন ও পাকিস্তানের কবজা থেকে জমি উদ্ধার করে দেখাক, তার পর না হয় অখণ্ড ভারতের কথা ভাবা যাবে।'