মূল্যস্ফীতি, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে ভোটে নেপাল

রোববারের এই ভোট দেশটিতে নাটকীয় কোনো পরিবর্তন আনবে কিংবা দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে ধীর গতির অর্থনীতি দ্রুত পুনরুজ্জীবিত হবে, এমন সম্ভাবনা দেখছেন না বিশ্লেষকরা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Nov 2022, 05:47 AM
Updated : 20 Nov 2022, 05:47 AM

ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি আর রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যেই সাধারণ নির্বাচনে ভোট দিচ্ছে লাখো নেপালি।

রোববারের এই ভোটের ফল দেশটিতে নাটকীয় কোনো পরিবর্তন আনবে বলে মনে করেন না বিশ্লেষকরা; দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে ধীর গতির অর্থনীতি দ্রুত পুনরুজ্জীবিত হবে, এমন সম্ভাবনাও দেখছেন না তারা।

এবারের নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবা নেতৃত্বাধীন নেপালি কংগ্রেস ও সাবেক মাওবাদী বিদ্রোহীদের জোটের সঙ্গে নেপাল কমিউনিস্ট ইউনিফায়েড মার্ক্সিস্ট লেনিনিস্টের (ইউএমএল) মূল লড়াই হবে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ভোটের আগে দেশটিতে কোনো জনমত জরিপ না হলেও ক্ষমতাসীন জোটই ফের ক্ষমতায় আসতে যাচ্ছে বলে বিশ্লেষকদের অনুমান।

রোববার স্থানীয় সময় বিকাল ৫টায় ভোটগ্রহণ শেষ হবে বলে জানিয়েছে নেপালের নির্বাচন কমিশন। গণনা শেষে ভোটের চূড়ান্ত ফল পেতে দুই সপ্তাহও লেগে যেতে পারে।

নেপালের নির্বাচন ব্যবস্থা বেশ জটিল। এখানে কিছু আসনে নির্বাচন হয়, প্রাপ্ত ভোটের হার অনুযায়ীও পার্লামেন্টে দলগুলোকে কিছু আসন দেওয়া হয়।

এবারের নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা প্রায় এক কোটি ৮০ লাখ; তারাই পার্লামেন্টের ২৭৫ আসনে প্রতিনিধি এবং ৭টি প্রাদেশিক বিধানসভার জন্য ৫৫০ সাংসদ বেছে নেবেন।

ভোটের আগে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী দেউবা ভোট দিয়ে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে নেপালিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। 

চীন ও ভারতের টানাহেঁচড়ায় দক্ষিণ এশীয় এ দরিদ্র দেশটিতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দেখা যায় না; যে কারণে বিনিয়োগকারীরাও দেশটিকে নিয়ে আগ্রহী হচ্ছেন না। ২০০৮ সালে ২৩৯ বছর পুরনো রাজতন্ত্রের অবসানের পর থেকে দেশটি এ পর্যন্ত ১০টি সরকার দেখেছে।

ভোটের আগে প্রচারে সব দলই জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে আনা, নতুন চাকরি সৃষ্টি ও অর্থনীতিকে গতিশীল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নতুনদের ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ‘নো নট অ্যাগেইন’ হ্যাশট্যাগ ক্যাম্পেইনও চলেছে। এতে ‘কথা না রাখা’ পুরনো রাজনীতিকদের ভোট না দিতে তরুণদের অনুরোধ করা হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন, তাদেরকে দেশের অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করা ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি আটকানোর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে।  

বিশ্বজুড়ে মন্দায় দেশটিতে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সও কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা বিরাজ করছে। নেপালের জিডিপির এক চতুর্থাংশই প্রবাসীদের আয়ের ওপর নির্ভরশীল।

মহামারীর আগে দেশটির জিডিপির ৪ শতাংশ পর্যটন খাতের ওপরও নির্ভরশীল ছিল। চলতি বছরের প্রথম দশ মাসে দেশটি সাড়ে চার লাখের সামান্য বেশি পর্যটক দেখেছে, যা কোভিডের আগে ২০১৯ সালে যাওয়া পর্যটকের অর্ধেকেরও কম।

হিমালয়ের কোলে থাকা দেশটিতে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভও দিন দিন কমছে, খুচরা মূল্যস্ফীতি বাড়তে বাড়তে ছয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ৮ শতাংশে পৌঁছে গেছে।