পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই) নিষিদ্ধ উৎস থেকে অর্থ নিয়েছে বলে এক রায়ে বলেছে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) ।
পিটিআই বিদেশ থেকে অর্থ নিয়েছে, এমন অভিযোগে কয়েক বছর ধরে চলা এক মামলায় মঙ্গলবার তারা এ রায় দেয় বলে জানিয়েছে ডন।
দেশটিতে রাজনৈতিক দলগুলোর বিদেশ থেকে অর্থ নেওয়া বেআইনি বিবেচিত হয়। ইসিপির এই রায় ইমরান খান ও তার দলের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার পথ খুলে দিতে পারে।
মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন পিটিআইকে তাদের অর্থ কেন জব্দ করা হবে না, সে সংক্রান্ত কারণ দর্শানোর নোটিসও দিয়েছে।
পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আকবর এস বাবরের করা এক মামলায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিকান্দার সুলতান রাজার নেতৃত্বাধীন ইসিপির তিন সদস্যের বেঞ্চ মঙ্গলবার এ রায় দেয়। মামলাটি ২০১৪ সালের ১৪ নভেম্বর থেকে ঝুলে ছিল।
চলতি বছরের ২১ জুন ইসিপি মামলাটির রায় অপেক্ষমান রেখেছিল; মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টার দিকে ঘোষিত হওয়ার কথা থাকলেও তারও আধাঘণ্টা পর রায় মেলে।
লিখিত রায়ে ইসিপি জানায়, পিটিআই ‘জেনেশুনে এবং ইচ্ছাকৃতভাবে’ বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অর্থ নিয়েছে।
পিটিআই কমিশনের কাছে তাদের ৮টি অ্যাকাউন্ট থাকার কথা জানালেও, জ্যেষ্ঠ নেতাদের হাতে পরিচালিত আরও তিনটি অ্যাকাউন্টের কথা চেপে গিয়েছিল; এর বাইরে আরও ১৩টি অ্যাকাউন্ট তাদের স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা পরিচালনা করলেও সেই অ্যাকাউন্টগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথাও তারা অস্বীকার করেছিল।
দলটির চেয়ারম্যান ইমরান খান টানা ৫ বছর যে ফর্ম-আই জমা দিয়েছিলেন এবং সার্টিফিকেট স্বাক্ষর করেছিলেন ইসিপি মঙ্গলবার তাতেও অনিয়ম পাওয়ার কথা জানিয়েছে।
রায়ের পর সংবাদমাধ্যমকে পিটিআই নেতা ফাওয়াদ চৌধুরী বলেছেন, বেশিরভাগ অর্থই এসেছে বিদেশে থাকা পাকিস্তানিদের কাছ থেকে।
“আমি বুঝতে পারছি না, কেন পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন), জমিয়ত উলেমায়ে ইসলাম (জেইউআই) ও পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) বিদেশে থাকা পাকিস্তানিদের শত্রু ঘোষণা করেছে। আমরা বিদেশে থাকা পাকিস্তানিদেরকে আমাদের অর্থনীতির মেরুদণ্ড বিবেচনা করি এবং অর্থের জন্য তাদের উপর নির্ভরতা অব্যাহত রাখবো,” বলেছেন তিনি।
এটা যে ‘বিদেশি অর্থের’ মামলা নয়, ইসিপির রায়ে তা স্পষ্ট হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মঙ্গলবারের রায়ের পর বাদি আকবর এস বাবর পিটিআইয়ের চেয়ারম্যান পদ থেকে ইমরানের পদত্যাগ দাবি করেছেন। বাবর এখন পিটিআইয়ের সঙ্গে যুক্ত নন বলে আগের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল ডন।
পিএমএল-এনের জ্যেষ্ঠ নেতা শহীদ খাকান আব্বাসি বলেছেন, ইসিপির রায়ের পর সরকার এখন এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
ইমরানের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “ওই অসৎ লোকটি আর রাজনীতিতে থাকতে পারবেন কিনা, পাকিস্তানের জনগণকে এখন সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তদন্ত এগুলে আরও চমকপ্রদ তথ্য বের হবে।”