পাকিস্তানের ‘পারমাণবিক বোমার জনক’ কাদির খান মারা গেছেন

পাকিস্তানের ‘পারমাণবিক বোমার জনক’ খ্যাত বিজ্ঞানী আবদুল কাদির খান মারা গেছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Oct 2021, 09:42 AM
Updated : 10 Oct 2021, 11:25 AM

রোববার স্থানীয় সময় সকালে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের তার মৃত্যু হয় বলে ডন নিউজ জানিয়েছে।

রেডিও পাকিস্তানের বরাত দিয়ে ডন জানায়, ভোরে ৮৫ বছর বয়সী বিজ্ঞানীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়।

পাকিস্তান টেলিভিশন জানিয়েছে, ফুসফুসের সমস্যায় আক্রান্ত কাদির খানকে হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এক টুইটে বলেছেন, পাকিস্তানকে পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র বানানোর ক্ষেত্রে ড. খানের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য জাতি তাকে ভালোবাসত।

“এটি অনেক বড় পারমাণবিক শক্তিধর আগ্রাসী একটি প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে আমাদের নিরাপত্তা দিয়েছে। পাকিস্তানের জনগণের কাছে তিনি অত্যন্ত শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন,” বলেন ইমরান।

কাদির খানের ‘ইচ্ছা অনুযায়ী’ তাকে ইসলামাবাদের ফয়সল মসজিদ প্রাঙ্গণে দাফন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

পাকিস্তানের রাষ্ট্রায়ত্ত অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস অব পাকিস্তান জানায়, কোভিড-১৯ শনাক্ত হওয়ার পর গত ২৬ অগাস্ট ড. কাদিরকে খান রিসার্চ ল্যাবরেটরিজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল, পরে সেখান থেকে তাকে রাওয়ালপিন্ডির সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়। সুস্থ হওয়ার পর বাড়িতে ফিরেছিলেন তিনি।

“তিনি আমাদের জাতিকে রক্ষাকারী পারমাণবিক প্রতিরোধ তৈরিতে সহায়তা করেছিলেন, কৃতজ্ঞ জাতি এই ক্ষেত্রে তার অবদান কোনোদিনও ভুলবে না,” এক টুইটে বলেছেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি।

১৯৩৬ সালে ভারতের ভুপালে জন্ম নেওয়া ড. খান ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর পরিবারের সঙ্গে পাকিস্তানে চলে যান।

১৯৭৪ সালে ভারতের পারমাণবিক পরীক্ষার পর পাকিস্তানের পারমাণবিক সক্ষমতা অর্জনের গোপন উদ্যোগে যোগ দেন তিনি।

রেডিও পাকিস্তানের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৬ সালে তিনি খান রিসার্চ ল্যাবরেটরিজ প্রতিষ্ঠা করেন এবং বহু বছর এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

দেশের প্রতি অবদানের জন্য পাকিস্তানের সর্বোচ্চ খেতাব নিশান-ই-ইমতিয়াজ পেয়েছেন তিনি।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ২০০৪ সালে একটি বৈশ্বিক পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার কেলেঙ্কারির কেন্দ্রে ছিলেন তিনি যেখানে উত্তর কোরিয়া, ইরান ও লিবিয়ার কাছে গোপন পারমাণবিক তথ্য বিক্রি করা হয়েছিল। রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে একটি স্বীকারোক্তি দেওয়ার পর পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশাররফ তাকে ক্ষমা করলেও বেশ কয়েক বছর ইসলামাবাদের নিজ বাড়িতে তাকে গৃহবন্দি করে রাখেন।

নিজের স্বীকারোক্তিতে ডা. খান জানান, রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তাদের অগোচরে তিনি একাই এসব কাজ করেছেন। তবে পরে তিনি জানান, তাকে ‘বলির পাঁঠা’ বানানো হয়েছিল।