ভারতের উত্তর প্রদেশে ফের দলবেঁধে ধর্ষণ, তরুণীর মৃত্যু

ভারতের উত্তর প্রদেশে দলগত ধর্ষণের পর দলিত এক তরুণীর মৃত্যু পর দেশজুড়ে সৃষ্ট ক্ষোভের মধ্যে ওই একই রাজ্যে আরেক দলিত তরুণী দলগত ধর্ষণ, নির্যাতনে মারা গেছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Oct 2020, 07:10 AM
Updated : 1 Oct 2020, 07:26 AM

প্রথম ঘটনাটি ঘটেছিল রাজ্যটির হাথরাসে আর দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটেছে ৫০০ কিলোমিটার দূরের বলরামপুরে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বলরামপুরে ২২ বছর একজন দলিত তরুণীকে দলগতভাবে ধর্ষণ ও নির্যাতনের পর গুরুতর আহত অবস্থায় দেড়শ কিলোমিটার দূরে লখনউয়ের হাসপাতালে নেওয়ার সময় তার মৃত্যু হয়, জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম। 

এ ঘটনার দুই অভিযুক্তকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, দলিত এই তরুণী একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। সকালে কর্মস্থলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার পরও ফিরে না আসায় এবং মোবাইলে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব না হওয়ায় তার পরিবার পুলিশের কাছে অভিযোগ জানায়।

কাজে যাওয়ার পথেই তাকে অপহরণ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন তার মা। পরে অনেক রাতে রিক্সায় মেয়েকে বাড়ি ফিরতে দেখেন তারা।

কয়েকটি সূত্র এনডিটিভিকে জানিয়েছে, অপহরণকারীরাই তাকে একটি ইলেকট্রিক রিক্সায় করে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়।

“ওই লোকেরা ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে তার শরীরে কিছু ঢুকিয়ে দিয়েছিল, এতে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তখন তারা তাকে ধর্ষণ করে। তারপর তা পা ভেঙে দেয়, পিঠ ভেঙে দেয়। একজন রিক্সাওয়ালা তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে। আমার মেয়ে তখন দাঁড়াতেও পারছে না, কথাও বলতে পারছে না,” কাঁদতে কাঁদতে বলেন তার মা। 

“আমার মেয়ে বলছিল, ‘আমাকে বাঁচাও, আমি মরতে চাই না,” বলেন তিনি।

এরপর দ্রুত তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অবস্থা সঙ্কটজনক হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে লখনউয়ের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন, কিন্তু পথেই তার মৃত্যু হয়।

ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। তরুণীর দেহে একাধিত আঘাতের চিহ্ন থাকার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে, কিন্তু পা ও পিঠ ভাঙা থাকার কথা উল্লেখ করা হয়নি বলে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

তবে তার হাতে একটি গ্লুকোজ সিরিঞ্জ ঝুলে ছিল বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা দেব রাজন ভার্মা। 

পুলিশ স্বজনদের কাছে মৃতদেহ হস্তান্তর করার পর বুধবার তারা সেটি সৎকার করেছে বলে জানা গেছে।

হাথরাসের ঘটনার পর ফের আরেকটি দলগত ধর্ষণ, নির্যাতনে মৃত্যুর ঘটনা প্রকাশ পাওয়ার পরই উত্তর প্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকারের প্রশাসনের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিরোধীদল সমাজবাদী পার্টির নেতা ও রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব।

হাথরাসের ঘটনা নিয়েও বিরোধী রাজনীতিকদের তীব্র তোপের মুখে পড়েছে যোগী সরকার ও উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।

ভারতে শিশু ও নারী ধর্ষণের ঘটনা বাড়ছে বলে এনসিআরবি প্রতিবেদনে প্রকাশ পেয়েছে। দেশটিতে গড়ে প্রতিদিন ৮৭টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে বলে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে।