অনার কিলিং: পাকিস্তানে ২ কিশোরীর সন্দেহভাজন খুনি গ্রেপ্তার

পাকিস্তানের পুলিশ দেশটির খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে ‘পারিবারিক সম্মান রক্ষা’র নামে খুন হওয়া দুই কিশোরীর সন্দেহভাজন হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 May 2020, 10:44 AM
Updated : 21 May 2020, 10:53 AM

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর গত সপ্তাহে উত্তর ও দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের সীমান্তে শামপ্লান গারিয়োম গ্রামে ১৬ ও ১৮ বছর বয়সী ওই দুই কিশোরীকে হত্যার ঘটনা ঘটে।

চাচাত ভাই মুহাম্মদ আসলামই ‘অনার কিলিং’ বা ‘পারিবারিক সম্মান রক্ষার’ নামে এ দু’জনকে গুলি করে হত্যা করেছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

আসলাম ছাড়াও ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দুই কিশোরীর সঙ্গে থাকা এক ব্যক্তি, যার ফোন দিয়ে ভিডিওটি করা হয়েছিল তার স্বত্তাধিকারী ও নিহত কিশোরীদের দুই আত্মীয়কেও পুলিশ আটক করেছে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

দুই বোনকে খুনের পর আসলাম পালিয়ে যান। পরে লুকিয়ে থাকার স্থানে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে ডনকে জানিয়েছেন উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলার পুলিশ কর্মকর্তা শফিউল্লাহ গান্দাপুর।

পাকিস্তানজুড়ে প্রতিবছর ‘অনার কিলিংয়ের’ নামে গড়ে হাজারখানেক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় বলে ধারণা মানবাধিকার কর্মীদের।

যে ৫২ সেকেন্ডের ভিডিওর জন্য ওয়াজিরিস্তানের দুই কিশোরীকে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশের ধারণা, সেটি রেকর্ড করা হয়েছিল এক বছর আগে। কয়েক সপ্তাহ আগে ভিডিওটি অনলাইনে ভাইরাল হয়।

ভিডিওতে উমর আয়াজ নামে ২৮ বছর বয়সী এক যুবককে মুখ কাপড় দিয়ে ঢাকা তিন তরুণীর সঙ্গে নির্জন এলাকায় ঘুরতে দেখা যায়। ওই তিন তরুণীর মধ্যে থাকা দুই বোনকে ‘পারিবারিক সম্মান’ রক্ষার নামে খুন করা হয়। 

অন্য যে নারীকে ওই ভিডিওতে দেখা গেছে তিনি সন্দেহভাজন হত্যাকারী আসলামের স্ত্রী বলে পুলিশের ধারণা। ‘অনার কিলিংয়ের’ ঘটনার পর থেকে তৃতীয় ওই নারী লুকিয়ে আছেন বলে অনুমান পুলিশের।

পুলিশ ‘আপত্তিকর’ ভিডিও ধারণের অভিযোগে উমরকে গ্রেপ্তার করেছে। উমর বছরখানেক আগে স্থানীয় এক আদালতে ওই ভিডিওটি করার অভিযোগ স্বীকার করেছে বলে ডন জানিয়েছে।

যে ফোনে ভিডিওটি করা হয়, সেই ফোনের স্বত্তাধিকারী ফিদা ওয়াজিরকেও পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। ফিদাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওটি ছড়িয়ে দিয়েছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনা পুলিশকে না জানানো এবং প্রমাণ লুকিয়ে ফেলার অভিযোগে পুলিশ নিহত দুই কিশোরীর একজনের বাবা এবং অন্যজনের এক চাচাত ভাইকে গ্রেপ্তার করেছে বলে বিবিসি জানিয়েছে।

পুলিশের ধারণা, অনার কিলিংয়ের পর দুই কিশোরীর পরিবারের সদস্যরাই তাদের লাশ লুকিয়ে পার্শ্ববর্তী দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের কোথাও নিয়ে কবর দিয়েছে।

মৃতদেহের সন্ধানে উত্তর ওয়াজিরিস্তান ও দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের পুলিশ একসঙ্গে কাজ করছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।