আসামে মানুষের ঘরে আশ্রয় নিলো বন্যাদুর্গত বাঘ

ভারতের আসামে ভয়াবহ বন্যার মধ্যে লোকালয়ে চলে আসা কাজিরাঙ্গা ন্যাশনাল পার্কের এক বাঘের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 July 2019, 09:05 AM
Updated : 18 July 2019, 09:20 AM

বৃহস্পতিবার টুইটারে ওয়াইল্ডলাইফ ট্রাস্ট ইন্ডিয়ার পোস্ট করা ওই ছবিতে ক্লান্ত এক রয়েল বেঙ্গল টাইগারকে একটি ঘরের বিছানায় শুয়ে থাকতে দেখা গেছে, জানিয়েছে এনডিটিভি। 

পাশের ঘরের দেয়ালের ফুটো থেকে বাঘের ওই ছবিটি তোলা হয়। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কর্মকর্তারা বাঘটিকে অচেতন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

আসামের এবারের বন্যায় কাজিরাঙ্গা ন্যাশনাল পার্কের অসংখ্য বন্যপ্রাণী মারা গেছে কিংবা বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে কর্মকর্তারা ধারণা করছেন।

ওয়াইল্ডলাইফ ট্রাস্ট ইন্ডিয়া বলছে, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ন্যাশনাল পার্কের ২০০ মিটার দূরে মহাসড়কের পাশে বাঘটিকে দেখা যায়; প্রাণীটি এরপর কারবি হিলসের পথে মহাসড়ক ধরে আরও প্রায় ৫০০ মিটার এগিয়ে যায়।

এরপর সম্ভবত খানিকটা বিরক্ত হয়েই কাছের একটি বাতিল জিনিসপত্রের গ্যারেজের দেয়াল টপকে ভেতরে ঢুকে পড়ে এবং একটি অন্ধকার ঘরে আশ্রয় নেয়।

বাঘটিকে দেখে প্রতিবেশীরা চিৎকার দিয়ে সতর্ক করলে বাড়ির মালিক তার গৃহে ‘আনাহূত অতিথির উপস্থিতি’ টের পান।  

টুইটার ব্যবহারকারীরা বলছেন, বন্যার সঙ্গে লড়াই করে বাঘটি অনেক ক্লান্ত ও ক্ষুধার্ত হয়ে পড়েছে।

বাঘটিকে অচেতন করে তাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন বন কর্মকর্তারা।

আসামের এবারের ভয়াবহ বন্যা রাজ্যটির লাখো বাসিন্দাকে ঘরবাড়ি ছাড়া করেছে। বন্যার কারণে রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় অচল হয়ে পড়েছে।

বন কর্মকর্তারা বলছেন, বন্যায় কাজিরাঙ্গা ন্যাশনাল পার্কটির ৯৫ শতাংশই ডুবে গেছে। এ পার্কেই বিপন্ন প্রজাতির এক শিংওয়ালা গন্ডারের বসবাস।

বন্যার কারণে চলতি সপ্তাহেই পার্কটির ৩০টি বন্যপ্রাণীর মৃত্যু হয়েছে। ভেসে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচতে পার্কটির অনেক প্রাণীকেই বন ছেড়ে পালাতে দেখা যেতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বন কর্মকর্তারা।

এনডিটিভি বলছে, কাজিরাঙ্গার বন্যপ্রাণী সংরক্ষণাগার থেকে বন্যার পানি সরানোর কাজ শুরু হয়েছে।

এ ন্যাশনাল পার্কটি উত্তরে ব্রহ্মপুত্র নদী এবং দক্ষিণে উঁচু ভূমি দ্বারা আবদ্ধ। দুই বছর আগের এক বন্যায়ও এখানকার ৩১টি রাইনো ও একটি বাঘসহ ৩৬০টির বেশি বণ্যপ্রাণী ডুবে মারা গিয়েছিল।