চাঁদের পথে ওড়ার অপেক্ষায় ভারতের চন্দ্রযান-২

চাঁদের দক্ষিণ মেরুর পথে রওনা হতে যাওয়া চন্দ্রযান-২ নামের ভারতীয় মহাকাশযানের উৎক্ষেপণের ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 July 2019, 10:06 AM
Updated : 14 July 2019, 10:25 AM

যাত্রা শুরুর নির্ধারিত সময়ের ২০ ঘণ্টা আগে রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৬টা ৫১ মিনিট থেকে এ কাউন্টডাউন শুরু হয় বলে জানিয়েছে এনডিটিভি, আনন্দবাজার।

সব ঠিক থাকলে স্থানীয় সময় সোমবার  ভোররাত ২টা ৫১ মিনিটে ভারতের মহাকাশযান উৎক্ষেপণ কেন্দ্র অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান থেকে চন্দ্রযান-২ পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহের উদ্দেশ্যে রওনা হবে।

তিন দশমিক আট টন ভারী মহাকাশযানটিকে বহন করে কক্ষপথে নিয়ে যেতে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট জিএসএলভি এমকে থ্রি ব্যবহার করবে।

৬৪০ টন ওজনের, ১৫ তলা সমান উচ্চতার এ রকেটের নাম দেয়া হয়েছে ‘বাহুবলী’।

ভারতের এবারের মহাকাশ অভিযান সফল হলে তারা হবে চন্দ্রজয়ী চতুর্থ দেশ। এখন পর্যন্ত কেবল রাশিয়া (সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন), যুক্তরাষ্ট্র ও চীন এ তালিকায় আছে।

চন্দ্রযান-২ চাঁদের যে অংশে নামতে যাচ্ছে, এর আগে সেখানে কোনো মহাকাশযান নামেনি।

২০০৮ সালে ভারত প্রথম চাঁদের উদ্দেশ্যে মহাকাশযান পাঠিয়েছিল। সেবার চাঁদের কক্ষপথে যাওয়া চন্দ্রযান-১ পৃথিবীর একমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহে থাকা হাইড্রক্সিল আয়নের হদিস পেয়েছিল।

এবারের অভিযানের উদ্দেশ্য, চন্দ্রপৃষ্ঠের বালিকণায় থাকা খনিজ ও মৌল পদার্থ সম্বন্ধে জানা।

চন্দ্রযান-২ এর অরবিটার, ল্যান্ডার ‘বিক্রম’ ও রোভার ‘প্রজ্ঞান’ ভারতের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি, এ কারণে এ মহাকাশযাত্রার খরচ তুলনামূলকভাবে অনেক কম পড়ছে বলে জানিয়েছে আনন্দবাজার।

দেশটির বিজ্ঞানীরা বলছেন, সব ঠিক থাকলে চাঁদের বুকে পা রাখতে চন্দ্রযান-২কে পাড়ি দিতে হবে তিন দশমিক ৮৪ লাখ কিলোমিটার পথ।

উৎক্ষেপণের দেড় মাস পর সেপ্টেম্বরে চাঁদের পিঠে ‘বিক্রম’ এর নামার কথা। এরপর এ ল্যান্ডার থেকে বেরিয়ে আসবে ২৭ কিলোগ্রাম ওজনের ‘প্রজ্ঞান’।

ল্যান্ডারটি নেমে আসার সময় অরবিটারটি থেকে চন্দ্রপৃষ্ঠের দূরত্ব থাকবে মাত্র ১০০ কিলোমিটার।

রোভারের চাঁদের বুকে নেমে আসার শেষ ১৫ মিনিটকে সবচেয়ে ‘আতঙ্কজনক’ বলছেন ইসরোর প্রধান কে সিভান।

“এ ধরনের জটিল অভিযান আমরা আর করিনি,” বলেছেন তিনি।

চাঁদে অনুসন্ধান চালানোর পর রোভার ‘প্রজ্ঞান’ সেখানেই অকেজো হয়ে পড়বে; তবে তার তথ্য চলে যাবে ভারতের মহাকাশ কেন্দ্রে।

অরবিটারটি এরপরও মহাকাশে থাকবে; চাঁদকে প্রদক্ষিণের পাশাপাশি পাঠাবে একের পর এক ছবি।

এবারের এ চন্দ্রযান-২ অভিযানের মেয়াদ ধরা হয়েছে এক বছর।

অভিযানটি সফল হলে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার তুলনায় ২০ ভাগের একভাগ অর্থ বরাদ্দ পাওয়া ইসরোর জন্য এ হবে বিরাট মাইলফলক, বলছে এনডিটিভি।