তার বয়স পেরিয়েছে ১০২। কিন্তু তাতে কী! শিশুর মতোই চাঙ্গা মন নিয়ে হিমাচল প্রদেশে কিন্নর জেলার কল্পা গ্রামের একটি বুথে ভোট দিয়েছেন তিনি।
শ্যাম সরণকে নিয়ে ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটের সময় গুগল একটি ভিডিও তৈরি করার পর থেকেই তিনি বেশ পরিচিতি পান। অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক নেগি ১৯৫১সালের ২৫ অক্টোবর প্রথমবার ভোট দিয়েছিলেন এই কিন্নরেই।
স্বাধীন ভারতে প্রথম ভোট ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারিতে হলেও হিমাচলে ঠাণ্ডার কারণে সেখানে ভোটের দিন এগিয়ে আনা হয়েছিলছ’মাস আগে ১৯৫১ সালে।
সেবারই স্বাধীন ভারতে নেগি প্রথম ভোট দিয়ে রেকর্ড গড়েন। সেই থেকেই শুরু। এরপর একবারের জন্যও ভোট দিতে ভোলেননি তিনি। শারীরিক অসুস্থতা কিংবা হিমাচলের ঠান্ডা কোনো কিছুই তাকে কাবু করতে পারেনি। লোকসভা, বিধানসভা, পঞ্চায়েত নির্বাচন, বাদ যায়নি কিছুই।
এবারের ভোটে কোন দল বাজিমাত করবে তা নিয়ে ভোটারদের আগ্রহের পাশাপাশি বিশেষ এ ভোটার এই শ্যাম সরণ নেগিকে নিয়েও ছিল আমজনতার আগ্রহ। স্থানীয় প্রশাসনও তার বিশেষ কদর করেছে। ভোটকেন্দ্রে তাকে দেওয়া হয়েছে লাল গালিচা সংবর্ধনা।
কল্পা গ্রামের স্থানীয় প্রশাসন নেগিকে বাড়ি থেকে ভোটকেন্দ্রে নেওয়ার এবং বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার সবরকম ব্যবস্থাই করেছে। এমনকি সর্বক্ষণ তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সঙ্গে রাখা হয় ডাক্তারও। বয়সের ভারে ন্যুব্জ হলেও সাংঘাতিক মনের জোরের কারণে ভোটারদের মধ্যে নেগি ছিলেন ভিআইপি তালিকায়।
ভোট দেওয়ার আগে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় নেগি নির্দিষ্ট কোনো দলকে ভোট দেওয়ার বদলে বরং সৎ এবং সক্রিয় প্রার্থীকেই পার্লামেন্ট আসনে নির্বাচিত করার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে কল্পা গ্রামের প্রাইমারি স্কুলে স্থাপিত ভোট কেন্দ্রে সকাল ৭ টায় হাজির হয়ে তিনিই প্রথম ভোট দিয়েছেন বলেও জানান নেগি।
২০১৪ সালে তরুণদের ভোট দানে উৎসাহ দিতে শ্যামসরণ নেগিকে ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর’ মনোনীত করেছিল হিমাচল প্রদেশের রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ২০১৭ সালেবিধানসভা নির্বাচনের সময়েও তাকে গাড়িতে করে ভোট নিতে নিয়ে গিয়েছিলেন জেলার উচ্চপদস্থরা। সেখানে তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনাও জানানো হয়।